E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ছাত্র-ছাত্রী ৮০০ শিক্ষক মাত্র ১০

২০১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮ ২২:২৫:০৩
ছাত্র-ছাত্রী ৮০০ শিক্ষক মাত্র ১০

সমরেন্দ্র বিশ্ব শর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : ছাত্র-ছাত্রী ৮০০ কিন্তু শিক্ষক আছেন মাত্র ১০। ২১ পদের মধ্যে ১১ শিক্ষকের শূন্যপদ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে চলছে কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়। তবে শূন্য পদ পূরণে একেবারেই নজর দেয়া হচ্ছেনা। এর ফলে প্রতি বছরের শুরুতেই ছাত্র-ছাত্রীর অভিভাবকগণ তাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া নিয়ে অনেক দু:শ্চিন্তায় পরেন। পরে বিকল্প উপায়ে ছেলেমেয়েদেরকে বছরের পাঠ শেষ করতে হিমশিম খেতে হয় অনেক দরিদ্র অভিভাবকের।

অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র অর্পণ সরকারের বাবা বিকাশ রঞ্জন সরকার মনের দুঃখে-কষ্টে বলেন, ভাল লেখা পড়ার জন্য ছেলেকে ঐতিহ্যবাহী কেন্দুয়া জয়হরি স্প্রাই সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছিলাম। ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির সময় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তির্ণ হয়েই ভর্তি হতে হয়েছে। কিন্তু এখন দেখি এই বিদ্যালয়টিতে বছরে গড়ে ৩/৪ মাসও ক্লাশ হয়না।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা যদি নিয়মিত ক্লাশ করতে না পারে, তাহলে তাদের দেহ মনে কী ছাত্রের ভাব থাকে? লেখা পড়ার অনেক ক্ষতি হয় ছাত্র/ছাত্রীদের। বিকাশ রঞ্জন সরকারের মত এমন প্রশ্ন তোলেন শত শত ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকগণ।

নবম শ্রেণীর ছাত্র অভিভাবক কামরুল হাসান খান দুঃখ করে বলেন, এই বিদ্যালয়টিতে বছরের ৬/৭ মাস শুধু পরীক্ষা কেন্দ্রের ভ্যানু হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ছেলে মেয়েরা কোথায় ক্লাশ করে, এ চিন্তা কি কেউ করেছেন? ৬/৭ মাস ক্লাশ করতে না পাড়ায় এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মানসম্মত লেখাপড়া হচ্ছে না। আমরা শিক্ষা বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট এই বিদ্যালয়ের ১১শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণ সহ পরিক্ষা কেন্দ্রের ভ্যানু অন্য স্থানে নেয়ার জন্য জোর দাবি জানাই।

এদিকে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো: জুলফিকার হোসেন বলেন, ২১ পদের মধ্যে আমি সহ ১০ জন শিক্ষক আছি। তবে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৮০০। এই ১০ জন শিক্ষক দিয়ে ৮০০ ছাত্র-ছাত্রীর বছরের পাঠদান কার্যক্রম শেষ করতে শিক্ষকদেরকে হিমশিম খেতে হয়।

তাছাড়া এই বিদ্যালয়টিতে জে.এস.সি পরীক্ষা চলে ১ মাস, এস.এস.সি পরিক্ষা চলে দেড় মাস, এইচ. এস.সি পরীক্ষা চলে ২ মাস ও ডিগ্রী পরীক্ষা চলে ৩ মাস। এই দীর্ঘ সময়ে ছাত্র-ছাত্রীরা পাঠ গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হয়। তবে এইচ.এস.সি ও ডিগ্রী পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকে কিছু ক্লাশ নেয়া হলেও শত ভাগ পাঠদান করা সম্ভব হয়না। তিনি মানসম্মত শিক্ষার জন্য এই বিদ্যালয়ের ১১শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণ সহ পরীক্ষা কেন্দ্রের ভ্যানু অন্যত্র স্থানান্তর না হলে এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মান পিছিয়ে পড়বে বলে আশংকা প্রকাশ করেন।

(এসবি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test