E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কেন্দুয়ায় বাড়লা খাল খননের দাবিতে কৃষকদের বিক্ষোভ 

২০১৮ মার্চ ১২ ২৩:০৫:০৭
কেন্দুয়ায় বাড়লা খাল খননের দাবিতে কৃষকদের বিক্ষোভ 

নেত্রকোনা প্রতিনিধি : নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নে দেশীয় জাতের মাছ বৃদ্ধি ও বোরো ফসল রক্ষা বাড়লা খালের খনন কাজে বাধা সৃষ্টি করায় বিক্ষুব্ধ হয়েছেন কৃষক সমাজ। পাঁচটি গ্রামের শত শত কৃষক পরিবারের সদস্যরা ভরাট এই খালটি পুনঃখননের চালিয়ে যাবার দাবী জানাচ্ছেন, এ দাবীতে কৃষক সমাজ সোমবার খালের পাড়ে বিক্ষোভ ও মাবনবন্ধন করেন।

জানা যায় মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের বাড়লা খাল খননে চলতি অর্থ বছরে ৩৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। বাড়লা গ্রামের সামনে ত্রিমোহনা নামক স্থান থেকে এখালের খনন কাজ শুরু করা হয় কিছুদিন আগে। দুটি প্রকল্প কমিটি গঠন করে এ কাজ চলছে। প্রতিদিন শ্রমিকরা ভরাট খাল থেকে মাটি কেটে খালের দুপাশে তুলছেন। একটি প্রকল্প কমিটির সভাপতি কৃষক সবুজ মিয়া অপরটির সভাপতি কৃষক ফজলুর রহমান।

পাইকুড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আজিজুর রহমান আরজু জানান, বাড়লা, হাড়াকান্দি, চিটুয়া নওপাড়া ও মজলিশপুর মৌজায় বাড়লা খালের অবস্থান। এই খালের দুই পাশে বাড়লা, বালিয়া, উন্দ্রি, পিত্রাইল ও চারিয়া বিলের প্রায় ৬শ হেক্টর একফসলি বোরো জমিতে আবাদ করেন মজলিশপুর, খালিজুড়া, বাড়লা, চিটুয়া নওপাড়া ও পেমই গ্রামের কৃষকরা। সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা খালের খননকাজ চালিয়ে যাবার জন্যে বিক্ষোভ ও মানবন্ধন তৈরি করেছেন খালপাড়ে।

মজলিশপুর গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান, কাজল মিয়া, চন্দন মিয়া, শরিফ মিয়া, রতন মিয়া, সুমন মিয়া, কাঞ্চন মিয়া, বাদল মিয়া, হেলাল মিয়া, সোহগ মিয়া, আবুল হোসেন, রতন মিয়া, চিটুয়া নওপাড়া গ্রামের এন্টাস ভূঞা, খালিজুড়া গ্রামের হাসু মিয়া মিয়া, পেমই গ্রামের হাদিস মিয়া জানান, এই বাড়লা খালটি ভরাট হয়ে গিয়েছিল। খালটি সরকারের উদ্যোগে সম্পূর্ণ ভাবে খনন করার কাজ চলছে। এই খালটি খনন করা হলে আমাদের বিলের সব জমির ফসল রক্ষা হবে।

কৃষক মতিউর রহমান বলেন, বৈশাখ মাসে সামান্য বৃষ্টি হলেই ভরাট খাল দিয়ে পানি চলাচল করেনা। এর ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে বোরো জমির পাকা ধান তলিয়ে যায়।

কৃষক হান্নান মিয়া জানান, গত বৈশাখ মাসে আগাম বন্যা ও জলাবদ্ধতায় তাদের সব ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তারা এক মুষ্ঠি ধানও ঘরে তুলতে পারেননি।

মজলিশপুর গ্রামের কৃষক কাঞ্চন মিয়া জানান, আমাদের গ্রামের এলাহি নেওয়াজ খাল খননে আদালতে অভিযোগ দিয়ে যে বাধার সৃষ্টি করছেন তা আমরা কৃষকরা মানিনা। এই বিলগুলোতে এলাহি নেওয়াজের এক শতাংশ জমিও নেই।

প্রকল্প কমিটির সভাপতি সবুজ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, এলাহি নেওয়াজ এই প্রকল্পের কাজ করাতে হলে চাঁদা দাবি করেছিলেন, তা না দেওয়ায় তিনি আদালতে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

কৃষক বাদল মিয়া সহ সব কৃষকরা এক সঙ্গে উচ্চস্বরে বলেন, আমরা এই খালে দেশীয় মাছ চাষ করতে চাই, একই সঙ্গে আমাদের ফসল রক্ষার জন্য খালটির খনন কাজ শেষ করারও দাবী করছি।

তারা বলেন, এই খালটি খনন হলে সূতি নদীতে গিয়ে বিলের পানি খাল দিয়ে প্রবাহিত হবে। এতে খালে মাছ চাষও হবে বোরো জমির ফসল রক্ষাও হবে।

জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: মাহবুবুল আলম জানান, এই প্রকল্পটির অনেক গুরুত্ব রয়েছে। প্রকল্পের কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হলে এই খালে এক দিকে যেমন মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, অপর দিকে খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে ফসল রক্ষার ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে।

এদিকে এলাহি নেওয়াজের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

(এসবি/এসপি/মার্চ ১২, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test