E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কাপাসিয়ার রাজিব হত্যার ঘাতক গ্রেফতার

২০২০ ডিসেম্বর ২১ ১৫:১৫:৪৪
কাপাসিয়ার রাজিব হত্যার ঘাতক গ্রেফতার

সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিযা (গাজীপুর) : গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ঘাতকের হাতে খুন হওয়া রাজিব হত্যার মুল রহস্য উদঘাটন করে প্রকৃত দোষীকে গ্রেফতার করেছে কাপাসিয়া থানা  পুলিশ। তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় রবিবার (২০ ডিসেম্বর) ভোর ৫টায় নরসিংদীর চরসিন্দুর বাজার থেকে ঘাতক মো. শাহীন ইসলামকে (৩৪) গ্রেফতার করেন মামলার তদন্তকর্মকতা কাপাসিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.আফজাল হোসাইন। 

গ্রেফতাকৃত শাহীন নরসিংদীর জেলার মনোহরদী উপজেলার চালাকচর গ্রামের কুখ্যাত ডাকাত শহীদুল্লা‘র ছেলে বলে স্থানীয়রা জানান।

সে কাপাসিয়া উপজেলার সদরের সাফাইশ্রী আব্দুল রশিদের বাড়িতে প্রায় দীর্ঘ দিন থেকে বসবাস করে কাপাসিয়া থানার পুলিশের সোর্স ও ডোম হিসেবে কাজ করত। তার মা কাপাসিয়া থানায় রান্না ও পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন। পুলিশ জানান, ২০০৯ সালের মে মাসে নরসিংদীর মনোহরদী থানায় তার বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি মামলা হয় যার নং-৪ ওই মামলায় ২০১৬ সালে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। এক বছর সাজা খেটে ২০১৭ সালে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আসে ।

পুলিশ জানান, গত ১৩ ডিসেম্বর সকালে কাপাসিয়া সদর ইউনিয়নের সাফাইশ্রী এলাকার শ্মশান ঘাটের পশ্চিম পাশের কলা বাগানে এক অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ পাওয়া যায় সেই লাশটি সাফাইশ্রী এলাকার সুভাষ চন্দ্র ধরের ছেলে রাজিব ধরের (৩৩)। সে ঢাকার একটি ব্যাংকের ড্রাইভারদের দেখাশোনা কাজ করতো। করোনার কারণে সে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ীতে চলে আসে। সেখানেই শাহীনের সাখে সখ্যতা গড়ে উঠে। লাশ উদ্ধারের পর ১৪ ডিসেম্বর রাতে নিহত রাজিবের মা প্রতিভা রাণী ধর অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় হত্যা মামলা (নম্বর- ১০) দায়ের করেন। এরপর তদন্তে নামে থানা পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থা।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওসি(তদন্ত) আফজাল হোসাইন মামলাটি চেলেঞ্জ হিসাবে তদন্ত করতে শুরু করলে আলো মুখ দেখছে মামলাটি।

আসমী স্বীকারোক্তিতে জানায়, রাজিব নিজের গ্রামে ফিরে এসে ঘাতক শাহিন ও তুহিনের সাথে ঘনিষ্ঠাতা বেড়ে যায়। তিনজনের মধ্যে মাদকের কারবার শুরু হয়। মাদকের টাকার ভাগ নিয়ে প্রায় ঝগড়া হতো। শাহীন পুলিশের সোর্স থাকার কারনে অপর দুই সহযোগীকে নিয়ে এলাকায় অপরাধের রাজত্ব কায়েম করে। সম্প্রতি শাহিনের সমন্ত অপকর্ম রাজিবের মধ্যে দন্ধ শুরু হয় এ নিয়ে শাহীন রাজিবের মধ্যে কথা বন্ধ হয়ে যায়। পরে রাজিব শাহীনের ছোট ভাই ওসমানের সাখে সখ্যতা গড়ে তুলে এ নিয়ে শাহীন আরো হিংশ হয়ে উঠে। পরে শাহীন রাজিবকে খুন করার সিদান্ত নেয় । পরিকল্পনা মতো গত ১১ ডিসেম্বর দিনভর রাজিবের সঙ্গে সময় কাটিয়ে রাতে বাড়িতে চলে যায় শাহিন। বাড়ী থেকে রাম দা নিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শীতলক্ষ্যা পাড়ের সাফা-মারওয়া জেনারেল হাসপাতালের ঘাটে গিয়ে রাম দা ধার দেয় শাহিন। সেখানে কয়েকজন তাকে দেখে ফেলে পরে ওদেরকে ভয় দেখিয়ে রিকসা করে সে রাজিবের বাড়িতে চলে যায়।

পরে গাঁজা ও ইয়াবা খাওয়ার কথা বলে রাজিবকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে শ্মশান ঘাটে যায়। সেখানে আগে বসে থাকা তুহিন সহ তিন জনে মিলে গাজাা ও ইয়াবা খায়। মাদক সেবনের পরে ওরা তিন জন বাড়ীতে ফেরার সময় পিছন থেকে শাহীন রাজিবকে দা দিয়ে কোপ দেয় পরে রাজিব মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে শাহীন উপর্যুপুরি কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে, উপজেলার পরিষদের পিছনে নদীতে গিয়ে গোছল করে রাম দা ফেলে দিয়ে বাড়ীতে এসে ইয়াবা সেবন করে ঘুমিয়ে পড়ে। হত্যাকান্ডেরে পর ১৩ ডিসেম্বর সকালে শ্মশান ঘাট এলাকায় লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকার লোজন থানায় খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কাপাসিয়া থানার ওসি(তদন্ত) আফজাল হোসাইন এ প্রতিনিধিকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনার কারণে রাজিবকে খুন করেছে শাহিন।

জিজ্ঞাসাবাদে শাহিন তার দোষ স্বীকার করেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারের পর শাহিনকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। আসামীকে আজ সামবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে ১৬৪ ধারায় শাহিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করতে গাজীপুরের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণা হবে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

(এসডি/এসপি/ডিসেম্বর ২১, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test