E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঝোপঝাড়ে মলত্যাগ করা সেই ৩০ পরিবার পাচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ী

২০২১ মার্চ ১১ ১৫:০৯:২৪
ঝোপঝাড়ে মলত্যাগ করা সেই ৩০ পরিবার পাচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ী

রাণীশংকৈল প্রতিনিধি : স্যানিটেশনের অভাবে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় খোলা আকাশের নিচে ঝোপঝাড়ে মলত্যাগ করা। নেকমরদ ইউনিয়নের ঘনশ্যাপুর গ্রামের আধিবাসী পাড়ার সেই ৩০ পরিবার পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের সরাসরি তদারকি করা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের বাড়ী। 

সম্প্রতি “রাণীশংকৈলে ঝোপঝাড়েই ৩০ পরিবারের মলত্যাগ” শিরোনামে সংবাদ পরিবেশন হয়েছিল। সংবাদ পরিবেশেনের মাস তিনেক পরেই সেই এলাকায় এখন স্বাস্থ্য সম্মত বাথরুম ,রান্নাঘরসহ দুটি থাকার ঘরের নির্মাণ কাজ চলছে।

উপজেলা ত্রাণ অফিস জানিয়েছে,ঘনশ্যামপুর গ্রামের আধিবাসী পাড়ার ৩০টি বাড়ী আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে নির্মাণ শেষে বাড়ীর মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারী ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা করতে না পারায় এ পাড়ার ৩০ পরিবারের প্রায় ২০০ সদস্য ভোরের সূর্য ফোটার আগেই আশে পাশের ঝোপঝাড়ে সেড়ে নেই তাদের প্রাকৃতিক ডাকের কাজ। এতে তারাসহ আশপাশের পরিবারগুলো মারাতœক পরিবেশ দূষিতের সাথে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ছিল। তবে তাদের সেই দূর্ভোগ লাগবে বসবাসকৃত স্থানগুলোতে বর্তমানে বাড়ী নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। এতে দীর্ঘশ্বাস নিয়েছে পরিবারগুলো। বিশেষ করে নারীরা বেশ স্বস্তি পেয়েছে। এখন তারা নিরাপদে বাথরুমে গোসল ল্যাট্রিনসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাজ সাড়তে পারবে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, নেকমরদ ঘনশ্যামপুর মৌজার একটি পুকুরের পাহাড় সরকারী সম্পত্তি হওয়ার সুবাদে, গত ২০১৯ সালের জুন মাসে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভুমিহীনদের বে-সরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইকো সোশাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) রাণীশংকৈল শাখার মাধ্যমে তালিকা করে। পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করেন তৎকালীন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোহাগ চন্দ্র সাহা। ভুমিহীনদের মধ্যে রয়েছেন আদিবাসী হিন্দু মুসলমি ও দলিত নৃ-গোষ্ঠীর মানুষজন। সকলে মিলে মিশে কোন রকম ঘর তুলে সেখানে বসবাস করলেও স্বাস্থ্য সম্মত স্যানিটেশন ও টিউবওয়েলের অভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে চরম পরিবেশ বিপর্যয়ের মধ্যে ছিলো।

বাড়ী নির্মাণ করে দেওয়ায় ঐ পাড়ার ময়না পাহানি মুচকি হাসি দিয়ে বলেন, ঘর দিয়েছে ,ল্যাট্রিন টিউবওয়েল রান্না ঘরও দিয়েছে। এ জন্য আমি খুব খুশি। এখন পরিবার নিয়ে স্বাস্থ্য সম্মতভাবে বসবাস করতে পারবো। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, শুনছি ঘরগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করে দিচ্ছেন। তিনি শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বলেন, তিনি ঢাকায় বসে আমাদের মত ক্ষুদ্র মানুষের যে খোঁজ রেখেছেন এ জন্য আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।

নরেন পাহান তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, ভুমিহীন পরিবার নিয়ে যেখানে সেখানে বসবাস করতাম ইএসডিও সংগঠনের সহাতায় এসিল্যান্ড আমাদের এখানে স্থায়ী জায়গা দিয়েছে। সেখানে কোন রকমে একটি ঘর করে পরিবার নিয়ে চললেও টিউবওয়েল ল্যাট্রিন অর্থ অভাবে নির্মাণ করতে পারিনি। বাথরুম সাড়তে হতো ঝোপঝাড়ে। এখন শুনছি সরকার আমাদের নামে জায়গার দলিল করে দিয়ে সু-সজ্জিত বাড়ীও নির্মাণ করে দিচ্ছে।

রাণীশংকৈল প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফারুক আহাম্মদ সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে, সকল শ্রেণীর মানুষের প্রতি খেয়াল রাখেন তারই বহিঃপ্রকাশ এটি। আমি মনে করি শেখ হাসিনার এ অবদান আজীবন ইতিহাসে লিপিবদ্ধ রইবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, এ সমস্ত হতদরিদ্র পরিবারগুলো এ প্রকল্পের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে। যে পরিবারগুলো এক সময় বাথরুম ও সুপেয় পানির অভাবে স্বাস্থ্যঝুকিতে ছিলো। তারা এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় সু-সজ্জিত বাড়ী পাবে এটি তাদের জন্য খুশির ব্যাপার।

উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না বলেন, শেখ হাসিনার ঘোষনা গৃহ ছাড়া কোন মানুষ দেশে থাকবে না। তারই প্রতিফলন হচ্ছে হতদরিদ্র এই আদিবাসী পাড়ার মানুষদের বাড়ী নির্মাণ করে দেওয়া।

(কেএস/এসপি/মার্চ ১১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test