E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে ফের গাছ কর্তন 

২০২১ মে ১৮ ১৩:২৩:৫৬
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে ফের গাছ কর্তন 

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি : আবারও  হাসপাতালের ভেতরের গাছ কাটলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবুল ফাতাহ। একের পর এক গাছ কেটে সাবাড় করে দিলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। স্থানীয়দের প্রশ্ন তার এই ক্ষমতার উৎস কোথায়?

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে চোখজুড়ানো ৩টি ঝাউ গাছ গত মঙ্গলবার দুপুরে (১১ মে) কেটে দিয়েছেন ইউএইচও আবুল ফাতাহ।

পৃথিবীজুড়ে যখন অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দিয়েছে তখন এমন ধৃষ্টতা দেখালেন এখানকার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ ।

এর আগেও হাসপাতাল চত্বরের ২টি খেজুর গাছ, ১টি সফেদা ও ১টিকাঁঠাল গাছ কাটা হয়েছে বলে তথ্যানুসন্ধান কালে জানা গেছে। সড়ক প্রশস্তকরনের নামে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ এর বিরুদ্ধে ওই গাছ কাটার অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।

ডাক্তার আবুল ফাতাহ এই হাসপাতালে যোগ দিয়ে একটি গাছও রোপণ করেন নি। বরং তিনি পরিবেশ এবং অক্সিজেন রক্ষায় যে গাছ গুলো ছিল; সেগুলো পর্যায়ক্রমে কেটে কেটে ধ্বংস করে দিচ্ছেন।

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দাতা সদস্য খলিল পহলান অভিযোগ করেন, সড়ক প্রশস্তের নামে সৌন্দর্যবর্ধনের ঝাউ গাছ ৩টি না কেটেও সড়ক প্রশস্ত করা যেত। এভাবে সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। এতে পরিবেশ ও সৌন্দর্য বিঘ্নিত হচ্ছে।

পাথরঘাটার পরিবেশ আন্দোলন কর্মী আমিন সোহেল ও সোহেল মল্লিক বলেন, উন্নয়নের নামে পরিবেশের ক্ষতি করে সৌন্দর্যবর্ধন ঝাউ গাছ কাটা ঠিক হয়নি। বরং কৃষ্ণচূড়া ও হাসনাহেনাসহ বিভিন্ন সৌন্দর্যবর্ধন গাছ ও ফুল-ফল এবং ছায়া পরিবেশের বনজ গাছ দিয়ে সুন্দরভাবে হাসপাতাল চত্বর সাজালে আগত ব্যক্তিরা উদ্বেলিত হবেন। এতে হাসপাতালে আসা রোগি ও তাদের স্বজনদের মানসিকতারও পরিবর্তন আসে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভবনের উত্তর পাশে পরিত্যক্ত কোয়াটার ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সামনে সৌন্দর্যবর্ধন ৩টি ঝাউ গাছ গত মঙ্গলবার দুপুরে কাটা হয়। হাসপাতাল অভ্যন্তরে সড়ক পুনর্নির্মাণ ও ওই সড়ক প্রশস্তের নামে এ গাছ কাটা হয়েছ।

নাম পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল ফাতাহ এর আগেও খেজুর সবেদা ও কাঁঠালসহ ৪টি ফলজ গাছ কেটে ছিলেন। যার মধ্যে দুইটি খেজুরগাছ এখনো ওই এলাকায় পড়ে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তুচ্ছ অজুহাতে হঠাৎ হঠাৎ করেই তিনি হাসপাতালের গাছ কেটে সাবাড় করেন। এভাবে একের পর এক গাছ কাটলেও বন বিভগ থেকে কাউকে খোঁজ নিতে দেখা যায়নি।

বনবিভাগের পাথরঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনিরুল হক বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান কোন গাছ কাটা প্রয়োজন হলে অবশ্যই তা ইউএনও স্যারসহ বনবিভাগকে অবগত করা বাধ্যতামূলক। ওই গাছের সরেজমিন প্রতিবেদন দেয়ার পরেই গাছ কাটা যাবে তা না হলে গাছ কাটা যাবে না।

অভিযোগ প্রসঙ্গে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবুল ফাত্তাহ বলেন, সড়ক প্রশস্ত করতে গিয়ে গাছ কাটতে হয়েছে। গাছের শিকড়ে সড়ক নষ্ট হওয়ার কারণে ওই গাছ কাটতে হয়েছে। তবে একটা কাজের বিপরীতে ১০টি করে গাছ লাগানো হবে।

এ ব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা সুলতানা বলেন, গাছ কাটার ব্যাপারে আমি অবগত নই। তাই এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারছিনা।

(এটি/এসপি/মে ১৮, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test