E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বায়ু দূষণের মূল কারণ ইটের ভাটা 

ইট ভাটার ধুলা বালিতে ডিক্রীরচরের মানুষের অন্ধ হওয়ার উপক্রম

২০২২ মার্চ ০৬ ১৮:২৩:০৫
ইট ভাটার ধুলা বালিতে ডিক্রীরচরের মানুষের অন্ধ হওয়ার উপক্রম

দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ ইটের ভাটা ফরিদপুরের ডিক্রীরচর ইউনিয়নের ভাটার ধুলা এবং সিএন্ডবি ঘাটের বালি ও ভরাটের ধূলায় অন্ধ হতে বসছে শিশু কিশোর বৃদ্ব আবাল বনিতা।

ফরিদপুর সদর থানারডিক্রীরচর ইউনিয়নের সিএন্ডবি ঘাট এলাকায় গড়ে উঠছে ১০০ - ২০০ হাত দুরত্বে ইটের ভাটা। এখানকার মানুষের প্রশ্ন আইন এখন কোথায়? নিয়মকানুন গেছে কোথায়? আমরাও তো মানুষ। আমাদেরও তো বাঁচার অধিকার আছে। ভাল খেতেও চাই না, কারোর কাধের বোঝাও হতে চাই না। কারো কাছে হাত পাততেও চাই না। চাই একটু মুক্ত বাতাসের নিশ্বাসে বেঁচে থাকতে চাই। কিন্তু তাও পারছি কই? এ এলাকার মানুষের প্রশ্ন আমাদের জন্ম নেওয়া কি অপরাদ? আমাদের বেঁচে থাকার কি কোন অধিকার নাই? যে ভাবে আমারা বেঁচে আছি এটা কোন বাঁচা নয়। পানিতে কালি, ভাতের মধ্যে ধুলা, চালের মধ্যে ধুলা, কাপড় চোপড়ার কালি।

বাড়ীর পাশে ভাটা, রান্না ঘরের সাথে লাগনা ইটের ভাটা, চরম অসহায় অবস্হায় আছি আমরা। বেঁচে থাকার নালিশ কার কাছে দিবো? কে শুনবে গরীব অসহায় ও নিষ্পেষিত মানুষের কথা। কে বুঝবে এই অত্যাচারিত মানুষের কথা। ভাটা মালিকদের অত্যাচারে আজ আমরা অতিষ্ট। ঘরে বাইরে, মসজিদে, মন্ধিরে স্কুলে মাঠে ঘাটে পুকুরে কোন জায়গায়ই শান্তি নাই। এখানকার মানুষ তথা বৃদ্ধ আবাল বনিতা শিশু কিশোর সকল পেশা ও বয়সের নারী পুরুষ ও খোলা পরিবেশে তারা কিভাবে বেঁচে আছেন সেটা না দেখলে বোঝা যাবে না। প্রথমেই এলাকায় ডুকতেই কাঁদায় মাখানো কাচা মাটির পথ। দুই পাশে বসত বাড়ী। ভাটার মধ্যে বাড়ী। বাড়ীর মধ্যে ভাটা। পাশের বাড়ী মানুষ এরা যেন ধুলায় পাগল মানুষ। বাম পাশে সরিষা ক্ষেত। এক পাশে দেলোয়ার মিয়ার ইটের ভাটা।

প্রশ্ন করা হলো ৫০ বছর বয়সি করিম মিয়া, রকমান আলী, আলেয়া বেগম, সামচুন নাহারের সাথে এরা সকলে উপরে উল্লেখিত কথা গুলো মনের কষ্টে প্রকাশ করলেন। তাদের ভিতর কষ্ট, আবেগ ক্ষোভ জ্বালা ও ধুলার যন্ত্রনার কথা বললেন। প্রশ্ন রইলো এদের কথা শুনবে কে? পরিবেশ আছে পরিস্হিতি নাই। আইন আছে প্রয়োগ নাই। পরিবেশবান্ধবরা এখন নিজেরাই পরিবেশের বিপক্ষে। তাই বলি শরিষার মধ্যে নয় পুরো সরিষার ক্ষেতেই ভুত। এক দিলোকে ভাটা অন্যদিকে পরিবেশ। জেলা প্রশাসকের দপ্তরটি জেলার একটি আয়না। ওখানে বসে যারা দু চোখ ভরে সকলের ভাল মন্দ দেখেন তাদের চোখে এইসব ধুলা বালি ও ধোঁয়ার মধ্যে ডুবে থাকা মানুষগুলোর কষ্টের চিএও তারা দেখবেন বলে এদের সকলের প্রত্যাশা। পাশা-পাশি সিএন্ডবি ঘাটটি দিয়ে পণ্যবাহী যানবাহন অথবা ইট,বালু,সিমেন্ট, পাটখড়ি, বোঝাই ট্রাকগুলো আসা যাওয়ার সময় রাস্তার ধূলাবালিতে মুহুর্মুহু ধূলা উড়নোয়ে ২০ মিনিটের মাথায় বুড়ো হয়ে যেতে হয় ধুলোর আস্তরে।

প্রশ্ন উঠছে, ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের দপ্তর,পরিবেশ অধিদফতর, পৌরসভা,সদর ইউএনও,এলাকার চেয়ারম্যান সাহেব সহ সকল সাহেবের দৃষ্টি অবহেলিত এলাকায় পড়ে না কেন? পদ্মার পাড়ের এবং চড়বাসীরাও মানুষ। এদের ভোটেই নির্বাচিত হন সকল জনপ্রতিনিধি। কিন্তু এদের কষ্টের কথা কেউ ভাবেনা এদের দিকে তাকিয়ে দেখেনা।

(ডিসি/এসপি/মার্চ ০৬, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test