E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বারবার তারিখ পরিবর্তনের পর অবশেষে ২৭ নভেম্বর!

নবীনগর উপজেলা আ.লীগের সম্মেলনের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা 

২০২২ নভেম্বর ০৮ ১৭:৪৬:২০
নবীনগর উপজেলা আ.লীগের সম্মেলনের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা 

গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : গত কয়েকমাসে একাধিকবার তারিখ পরিবর্তন করেও নানা জটিলতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন করতে পারেনি দলটির স্থানীয় নীতি নির্ধারকেরা। এ নিয়ে দলটির স্থানীয় নীতি নির্ধারকেরা তৃণমূলের সাধারণ নেতাকর্মী সমর্থকদেরকে কাছে বিগত দিনে নানা সমালোচনায় পড়তে হয়েছে। এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় এক নেতার নির্দেশে আগামি ২৭ নভেম্বর নবীনগর আওয়ামীলীগের সম্মেলন চূড়ান্তভাবে করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দকে ওই চূড়ান্ত সময় বেঁধে দেন।

গত ৬ নভেম্বর নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল এবং সাধারণ সম্পাদক এম এ হালিমকে লেখা দলীয় এক চিঠিতে আল মামুন সরকার ওই চূড়ান্ত নির্দেশনা দেন। আল মামুন সরকার স্বাক্ষরিত ওই আলোচিত চিঠির অনুলিপি ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও স্থানীয় (সদর) সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এবং নবীনগর উপজেলা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির অন্যতম সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুলের কাছেও পাঠানো হয়েছে।

এদিকে নবীনগরে সম্মেলন না হলেও আগামি ১২ নভেম্বর শনিবার জেলা সদরের নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের যাবতীয় প্রস্তুতি পুরোদমে এগিয়ে চলছে। জেলা সম্মেলনকে সার্থক করতে ইতিমধ্যে একমাত্র নবীনগর ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অপর আটটি উপজেলার সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে বলেও জানান দলটির জেলা সেক্রেটারী ও সদ্য অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে বিজয়ী আল মামুন সরকার।

আল মামুন সরকার উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে বলেন, 'আগামি ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় জেলা সম্মেলনের প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে একমাত্র নবীনগর উপজেলা ছাড়া জেলার সবকটি উপজেলার সম্মলন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সমাপ্ত হয়েছে। কিন্তু নবীনগরের নেতৃবৃন্দ একাধিকবার তারিখ নির্ধারণ করেও নানা জটিলতার কারণে নির্ধারিত তারিখে তারা সম্মেলন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।'

তিনি বলেন, এ অবস্থায় আগামি ১২ নভেম্বরের আগে নবীনগর উপজেলায় সম্মেলন করা কোনভাবেই আর সম্ভব হবে না। তাই কেন্ত্রীয় নেতা আবু সাঈদ স্বপন ভাইয়ের নির্দেশে আগামি ২৭ নভেম্বর নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্তভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ওইদিন সম্মেলন করতেই হবে।

এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের দুই সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম শফিক ও ভিপি আবদুর রহমান বলেন, 'দেখুন, মোট ২১ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে বিশাল উপজেলার নাম নবীনগর। তাই নানা জটিলতায় আমরা বারবার তারিখ ঘোষণার পরও এখানে সম্মেলনটি যথাসময়ে করতে পারিনি, এটি ঠিক। তবে চূড়ান্তভাবে ঘোষিত আগামি ২৭ নভেম্বর নবীনগরের সম্মেলন সফল করার লক্ষে ইতিমধ্যে আগামি ১৬ নভেম্বর উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। আশা করছি, সেখানে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠনসহ সম্মেলনকে সফল করতে প্রয়োজনীয় সব সিদ্ধান্তই নেয়া হবে।'

নবীনগর পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক এডভোকেট শিব শংকর দাস বলেন, 'নবীনগর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদল, সেক্রেটারী এম এ হালিম ভাইয়ের নেতৃত্বে নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগ বিগত যেকোন সময়ের তুলনায় অত্যন্ত শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ আছে। তাই আগামি ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় সম্মেলন আমরা সকলে মিলে মিশে সম্পন্ন করতে পারবো বলে আশা করছি। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, সেই সম্মেলনের মাধ্যমে এবার একটি শক্তিশালী নতুন কমিটিও আমরা নেত্রীকে উপহার দিতে পারবো।'

প্রসংগত, উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে সম্মেলন করার লক্ষে চলতি বছরের শুরুর দিকে দলটির পক্ষ থেকে একটি সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু গঠিত সেই বাস্তবায়ন কমিটিকে "বিতর্কিত" আখ্যায়িত করে দলটিরই একাংশ এর বিরোধীতা করে আন্দোলনে নামে। পরে আন্দোলনের মুখে কমিটি পুনর্গঠনও করা হয়। কিন্তু এরপরও নানা জটিলতায় গত ২১ মে, ১৬ জুলাই ও সর্বশেষ ২৯ অক্টোবর নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনের তারিখ বারবার ঘোষণা করেও শেষ পর্যন্ত সম্মেলন করতে পারেনি দলটি।

স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, নবীনগরে আওয়ামীলীগে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান বর্তমান সাংসদ 'বুলবুল' ও সাবেক সাংসদ 'বাদল' গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও কোন্দল থাকার কারণেই বারবার তারিখ নির্ধারণের পরও দলটি নানা জটিলতায় যথাসময়ে সম্মেলন করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে দলে নেতৃত্বের বিভক্তি থাকায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কঠোর নির্দেশের পরও আগামি ২৭ নভেম্বর শেষ পর্যন্ত সম্মেলন বাস্তবায়ন হবে নাকি আবারও সম্মেলনের তারিখ পরিবর্তন হবে? এটিই এখন দেখার বিষয়, অভিমত স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের!

(জিডি/এসপি/নভেম্বর ০৮, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test