E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বালিয়াকান্দিতে অসুস্থ্য বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বন্ধুরা

২০২৩ জানুয়ারি ১৩ ১৭:৫৩:৫৫
বালিয়াকান্দিতে অসুস্থ্য বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বন্ধুরা

একে আজাদ ও মিঠুন গোস্বামী, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার কুন্ডুপাড়া গ্রামে কিডনি রোগে আক্রান্ত অশোক দাস কুটিলের (৩৪) পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন কুটিলের স্কুল পড়ুয়া বন্ধুরা। 

বালিয়াকান্দি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৯৬ সালের স্কুল পড়ুয়া বন্ধু কুটিলের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছেন নগদ ৯২ হাজার ৫০০ টাকা। এই অর্থ সহায়তায় ওই বন্ধুর পরিবারে প্রশান্তি নেমে এসেছে।

শক্রবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে বালিয়াকান্দি উপজেলার বালিয়াকান্দি ইউনিয়নের কুন্ডুপাড়া গ্রামের কুটিলের পরিবারের কাছে টাকা হস্তান্তর করেন (১৯৯৪-১৯৯৬)সালের কয়েক জন বন্ধুরা। এই অর্থ পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন কুটিলের পরিবারের সদস্যরা।

কুটিলের স্ত্রী নদী দাস বলেন, আমার স্বামী, শাশুড়ি আর এক সন্তান নিয়ে আমাদের ছোট্ট সংসার। ২০২১ সালে আমার স্বামী কুটিলের দুইটি কিডনি নষ্ট হয়ে যায়। ধার-দেনা করে ওকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করি যাচ্ছি।

স্থানীয় সমাজকর্মী গোলাম মোর্তবা রিজু বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে আমাদের কষ্টের কথা তুলে ধরেন। কুটিলের বন্ধুরা কুটিলের অসুস্থ্যতার বিষয়টি জানতে পেরে আমাদের পাঁশে দাঁড়িয়েছে। এই অর্থ আমাদের উপকারে আসবে। কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন আমি আমার স্বামী কুটিলকে বাঁচাতে চাই। সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহায়তা কামনা করেন কুটিলের স্ত্রী নদী দাস।

কুটিলের মা বলেন, সমাজে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন হয়। বিপদে পাশে দাঁড়ানো মানুষের সংখ্যা কমে আসছে। আমার ছেলের বন্ধুরা কুটিলের বিপদে পাশে দাঁড়িয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমি মা হিসাবে গর্ববোধ করছি। আমার কুটিলকে বাঁচাতে ১০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান কুটিলের মা।

কুটিলের স্কুল পড়ুয়া বন্ধু মো.ইমরানুজ্জামান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কুটিল আমাদের স্কুল জীবনের বন্ধু। আমরা বালিয়াকান্দি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মানিবক বিভাগে পড়ালেখা করেছি। বর্তমানে কুটিল অসুস্থ্য। তার দুইটি কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর আমরা ১৯৯৬ সালের বন্ধুরা তার পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করি। এরপর ১৯৯৪ ও ১৯৯৫ সালের কয়েকজন শিক্ষার্থী আমাদের সাথে যোগ দেয়। তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। গতকাল শুক্রবার দুপুরে কামরুল, শিপু, দিপল, কনক, সুমন, মুরাদ, পান্নু, বাহউদ্দীন, সুবেদ, সাইফুল, বাকি ও মনি বন্ধুর বাড়িয়ে গিয়ে কুটিলের পাশে দাঁড়াই। আমরা চেষ্টা করেছি বন্ধুর পাশে থাকার। আমারা সাধ্যমতো চেষ্টা করবো কুটিলকে পাশে থাকতে।

বালিয়াকান্দির সমাজকর্মী গোলাম মোর্তবা রিজু বলেন, কুটিল দারিদ্র পরিবারের সন্তান। সরকারের পক্ষ থেকে তাকে একটি ঘর উপহার দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি জানার পর আমি ওর বন্ধুসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুটিলের কিডনি নষ্টের বিষয়টি তুলে ধরি। কুটিলের বন্ধুরা তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। বন্ধুর প্রতি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো কুটিলের বন্ধুরা।

(একেএমজি/এসপি/জানুয়ারি ১৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test