E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শৈলকুপার ত্যাগী আ.লীগ নেতা মুক্তার মৃধার মূল্যায়ন চায় তৃণমূল

২০২৩ মে ১৭ ১৭:৩১:২৬
শৈলকুপার ত্যাগী আ.লীগ নেতা মুক্তার মৃধার মূল্যায়ন চায় তৃণমূল

শেখ ইমন, শৈলকুপা : ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আন্দোলন সংগ্রামেও ছিলেন অগ্রভাগে। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও ছিলেন সক্রিয়। ১৯৯০ সালের এরশাদ বিরোধী গণ-আন্দোলন গড়ে তোলেন এবং এরশাদ সরকারের পতন ঘটাতে সক্ষমও হন। ১৯৯১ সালে বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক হামলা মামলার শিকার হয়ে কারাবাস করেন তিনি। তৎকালীন মাগুরা উপ-নির্বাচনে প্রয়াত আসাদুজ্জামানের নির্দেশে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন তিনি। কথাগুলো বলছিলাম ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেতা মুক্তার আহমেদ মৃধার।

শৈলকুপার সকল আন্দোলন সংগ্রামের অগ্রভাগের নেতা হয়েও স্থানীয় আওয়ামীলীগের রাজনীতি থেকে এখন কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন তিনি। দলের সুসময়ে এখন অনেকটাই পরিত্যক্ত হয়ে গেছেন। যার রাজনীতিতে ছিল সোনালী অধ্যায়। দলের জন্য হারিয়েছেন অনেক কিছু। মূল্যায়নের ঝুলিও ধরতে গেলে একেবারেই খালি।

জানা গেছে, ২০০১ সালে বিএনপি জোট সরকার ক্ষমতায় আসলে একাধিক মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করেন তিনি। ১/১১ পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুক্তি আন্দোলনে অগ্রভাগে নেতৃত্ব দেন মুক্তার আহমেদ মৃধা। এক সময়ের সেই সাহসী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার আহমেদ মৃধার খোঁজ রাখে না কেউ। আওয়ামী লীগের সুসময়ে তিনি এখন অনেকটাই পরিত্যক্ত।

নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার হোসেন মৃধা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সময় আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যখন এলাকাছাড়া, ছিল না কোনো সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড, সে সময় নিজের পকেটের টাকা খরচ করে কর্মীদের নিয়ে রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করেছি। ২০০৮ সালের পর দলের সুসময়ে আমরা সবদিক থেকে অবহেলিত হয়েছি। হাইব্রিড আর অনুপ্রবেশকারীদের ভিড়ে আমরা হারিয়ে যাচ্ছি। বিগত দুই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েও হাইব্রিডদের টাকার কাছে পরাজিত হয়েছি। সর্বশেষ জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে জনপ্রতিনিধিদের রায়ে আমি জয়লাভ করি। দলের জন্য এত কিছু করেও পদ-পদবী দেওয়া হয়নি আমাকে।

সারুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভপতি আব্দুল মান্নান বলেন, দলের জন্য তিনি অনেক লড়াই সংগ্রাম করেছেন। বিরোধী দলের অত্যাচার,জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। তবে এসবের মূল্য কেউ দেয়নি তাকে। এমন ত্যাগী নেতাকে মূল্যায়ন করা দরকার। তা না হলে দলের ক্রান্তিকালে কাউকে পাশে পাওয়া যাবে না।

ত্রিবেনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মোল্লা বলেন,সুবিধাবাদী আর হাইব্রিডদের ভিড়ে ত্যাগী নেতা মুক্তার আহমেদ মৃধার রাজনৈতিক ত্যাগ চাপা পড়ে গেছে। এগুলো পুনরায় সংশোধন করা দরকার। তাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে শীর্ষ পদ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ফুলহরি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জামিনুর রহমান বিপুল বলেন, ছোটবেলা থেকেই তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের আর ত্যাগের নানা গল্প শুনেছি ও অনেক কিছু দেখেছি। তার মত এমন ত্যাগী নেতাকে মূল্যায়ন না করলে তার সাথে এক প্রকার অপরাধ হবে। রাজনৈতিক জীবনে তার এমন ত্যাগের মূল্যায়ন না করতে পারলে দল ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি তাকে দলের জন্য তার এমন ত্যাগের কথা চিন্তা করে সর্বোচ্চ মূল্যায়নের জায়গা করে দেওয়া হোক।

শৈলকূপা পৌর আওয়ামীলীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি ও পৌর মেয়র কাজী আশরাফুল আজম বলেন, মুক্তার হোসেন মৃধার ত্যাগের কথা শৈলকুপাবাসীর অজানা কিছু না। দলের জন্য অনেক ত্যাগ, লড়াই, সংগ্রাম করেছেন। দলের দুর্দিনে পাশে থেকেছেন। জীবন বাঁজি রেখে দলের পক্ষে কাজ করেছেন, তবে দলের জন্য নানা ত্যাগ স্বীকার করলেও মূল্যায়নের জায়গায় আসতে পারেননি তিনি। কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে তাকে। তাই তার অতীতের লড়াই,সংগ্রামের কথা ভেবে যোগ্য স্থানে বসানোর জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই এমপিকে একাধিক বার তার ব্যক্তিগত মোবাইলে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

(এসআই/এসপি/মে ১৭, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test