E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা সাইফুল আহাদ সেলিম

২০২৩ আগস্ট ০৮ ১৯:২৯:০২
ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা সাইফুল আহাদ সেলিম

রিয়াজুল রিয়াজ, বিশেষ প্রতিনিধি : ফরিদপুর সদরে জনহিতকর সব ধরনের কাজ সততার সাথে করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে ফরিদপুর- ৩ (সদর) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের অন্যতম কার্যকরী সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আহাদ সেলিম।

আওয়ামীলীগের সক্রিয় রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে আসা এই সাবেক ছাত্রনেতা ও বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতা ফরিদপুরের রাজনৈতিক পরিবেশে বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে রাজনীতি করে আসছেন ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। তার সততা ও দলের প্রতি দায়িত্ববোধ, তদুপরি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি অবিচল আস্থা এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবে নেত্রীর প্রতি অকৃত্রিম আনুগত্য এসব মিলে সেলিম নিজেকে মনে করেন আওয়ামী পরিবারের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে।

সাইফুল আহাদ সেলিমের বাবা-মা দুজনেই আওয়ামীলীগের বড় নেতা ও উভয়েই সংসদ সদস্য ছিলেন।

সেলিমের বাবা মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মরহুম ইমাম উদ্দিন আহমাদ ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, সাবেক কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এবং বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সফল সভাপতি।

এছাড়া ইমাম উদ্দীন আহমেদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ও ১৯৭৩ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকারের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।

সাইফুল আহাদ সেলিমের মাতা মরহুম রুশেমা ইমাম ছিলেন বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এবং স্বাধীনতা পরবর্তী ফরিদপুর মহিলা আওয়ামীলীগের প্রথম সভানেত্রী।

সাইফুল আহাদ সেলিম ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জাতীয় কমিটির সদস্য, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য, এভাবে পর্যায়ক্রমে স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পথ বেয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে জেল, জুলুম, আন্দোলন সংগ্রামের অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সাইফুল আহাদ সেলিম বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন সাংগঠনিক নেত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে।

১৯৮৩ র মধ্য ফেব্রুয়ারী স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেদিন জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল নিহত হন সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য শেষ করে চলে যাওয়ার অব্যবহিত পর অন্যান্য ছাত্র নেতাদের সাথে গ্রেপ্তার হন এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের ডি জি এফ আইয়ের বালুরঘাট ট্রানজিট ক্যাম্পে আটক অবস্থায় ১৯ দিন অকথ্য, বর্বরোচিত শারিরীক নির্যাতনের শিকার হন।

৯০ এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে এবং স্বৈরাচার এরশাদের পতন আন্দোলনে তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সামনের কাতারের তুখোড় ছাত্রনেতা।

সাইফুল আহাদ সেলিম তখন ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি।

খালেদা জিয়ার শাসনামলে ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামীলীগের সমাবেশে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারকীয় গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন এবং অসংখ্য মানুষ আহত হন। সেই হামলায় গ্রেনেডের স্প্লিন্টারে আহতদের মধ্যে সাইফুল আহাদ সেলিমও তালিকাভুক্ত একজন।

২০০৫ সালের ২৫ শে এপ্রিল BNP জামাত চারদলীয় জোটের বিরুদ্ধে হরতাল চলাকালীন সময়ে রাসেল স্কয়ার থেকে গ্রেপ্তার হন।

এখানে উল্লেখ্য যে ছাত্র রাজনীতির প্রাথমিক পর্যায়ে ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্র থাকাকালীন ১৯৭৫ সনের ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মর্মান্তিকভাবে শাহাদাত বরণের পর ফরিদপুর শহরে প্রতিরোধ সৃষ্টি করতে সচেষ্ট বলে ১৯৭৫ সনের ১৩ সেপ্টেম্বর যে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হয় এবং ফরিদপুর জেলে ফাঁসির আসামিদের জন্য নির্ধারিত কনডেম সেলে ১৭ দিন আটক রাখা হয়, সাইফুল আহাদ সেলিম ছিলেন তাদের মধ্যে কনিষ্ঠতম।

এছাড়াও ১৯৮০ সনের ৩ রা নভেম্বর ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে আওয়ামীলীগের মিছিলে সেনা শাসক স্বৈরাচারী জিয়ার লেলিয়ে দেয়া গুন্ডারা গাড়ি উঠিয়ে দিলে সাইফুল আহাদ সেলিম চাপা পরেন এবং গুরুতর আহত হয়ে ছয় মাস চিকিৎসাধীন থাকতে হয়। তখন সেলিম ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জাতীয় কমিটির সদস্য।

দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় ছাত্র রাজনীতি করা এই সাবেক ছাত্রনেতা পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের প্রথম গঠিত হওয়া কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহসম্পাদক ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী সদস্য হিসাবে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সর্বদা সম্পৃক্ত ছিলেন। বর্তমানে তিনি ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের মধ্যে একজন।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও সততাকে বুকে ধারণ করে দলের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে এবং বাবা মায়ের সম্মান ক্ষুন্ন হয় এমন কোন কাজ থেকে সজ্ঞানে তিনি বিরত থেকেছেন বলে জানান এই সাবেক ছাত্রনেতা।

এক প্রশ্নের জবাবে সাইফুল আহাদ সেলিম বলেন, "দেখেন আমার রক্তে আওয়ামীলীগ মিশে আছে, এমনকি শৈশবে পারিবারিক পরিবেশের কারণেই আমি নিজেকে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের একজন হিসেবে ভাবতাম।“

বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে স্নেহ করেন, মমতাময়ী নেত্রী যখন আমার মাথায় হাত দিয়ে দোয়া করে দেন, তখন আমার পাহাড় সমান কষ্টও আকাশ সমান আনন্দে পরিণত হয়।

তিনি আরো জানান, আমার পিতা মাতা বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে দেশের জনগণ তথা ফরিদপুরের গণমানুষের উন্নয়নের কথা ভেবেছেন, আমাকেও সেভাবেই তৈরি করে গেছেন। আমি মনে করি আমি শেখ হাসিনার একজন কর্মী। যারাই আওয়ামীলীগের পতাকা তলে আছেন তারাই আমার পরম আপনজন। হিংসা, বিভেদ বিসম্বাদের নোংড়া অনৈক্যের রাজনীতিতে আমি বিশ্বাস করি না এবং পারিবারিক ভাবেও আমি তা শিখি নাই।

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর - ৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন প্রসঙ্গে কথা উঠলে সাইফুল আহাদ সেলিম জননেত্রী শেখ হাসিনার, সাংবাদিকদের সাথে সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারের প্রশ্নোত্তর পর্বের কথা উল্লেখ করে বলেন, এমপি প্রার্থী বাছাইয়ের প্রশ্নে নেত্রী বলেছেন, “শত ফুল ফুটে থাকবে যে ফুলটা আমার পছন্দ হবে সেটাই আমি তুলে নেব " মানে তাকে মনোনয়ন দেবেন।”

পরম শ্রদ্ধাভরে সেলিম বলেন নেত্রীর বিবেচনা প্রসূত সিদ্ধান্ত অবশ্যই মুজিব সৈনিক এবং শেখ হাসিনার কর্মীদের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে। কারণ সারা বাংলার আওয়ামী রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের ঠিকুজি, কোষ্ঠি বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নখদর্পনে।

সেলিম বলেন, ১৯৮১ সনের ১৭ মে এক বৃষ্টিস্নাত দিনে যখন নির্বাসিত জীবন থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলেন সেদিন থেকে অদ্যাবধি নেত্রীর আদেশ, নির্দেশে পথ চলেছি। কখনো বিচ্যুত হইনি। আমৃত্যু হবোও না। রাজনীতিতে যতটুক এগিয়েছি তা আপার (নেত্রী) মাধ্যমেই তাঁর নির্দেশেই হয়েছে।

সেলিম বলেন, ছাত্র রাজনীতিতে কেন্দ্রে যারা আমার সাথে সহসাথী যোদ্ধা ছিলেন কিংবা আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ও পরবর্তীতে সহ-সভাপতি থাকা কালীন সময়টা ছিল আওয়ামী রাজনীতির জন্য স্বৈরাচার বিরোধী উত্তুঙ্গ আন্দোলন সংগ্রামের অগ্নিগর্ভ সময়। সে সময়ের সমকালীন সাথীরা আজকের আওয়ামীলীগের ক্ষমতা কালীন সময়ে তাদের যোগ্যতা বলেই এবং ছাত্র রাজনীতির ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণেই জননেত্রী শেখ হাসিনা তাদের প্রায় সবাইকে দলে এবং সরকারে উল্লেখযোগ্য স্থানে ঠাঁই করে দিয়েছেন।

একটু প্রচ্ছন্ন বিষাদের স্বরে সাইফুল আহাদ সেলিম বললেন, আওয়ামীলীগের ক্ষমতার বিগত ১৪ বছরে ফরিদপুরের এক প্রবল প্রতাপশালী অরাজনৈতিক নেতার সৃষ্ট রাজনৈতিক ঘূর্ণাবর্তে এবং তার
কোপানলে পরে ব্যক্তিগত ভাবে আমার জীবন থেকে একটা যুগের ও বেশি সময় ঝরে গেছে নিষ্ফলা!!

সেলিম বলেন, তবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সময়োচিত পদক্ষেপে সে প্রতিবন্ধকতা এখন অপসারিত হয়েছে। এখন প্রাণ ভরে শ্বাস নিয়ে রাজনীতি করার পথ সুগম হয়েছে। মেঘ কেটে রোদ হেসেছে।

সাইফুল আহাদ সেলিম উত্তরাধিকার ৭১ নিউজকে বলেন, মমতাময়ী বঙ্গবন্ধু কন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ফরিদপুর - ৩ আসন থেকে আমাকে মনোনয়ন দেয়ার বিষয়ে দয়ার্দ চিত্তে বিবেচনা করতে পারেন বলে আমার বিশ্বাস।

সেলিম বলেন, অহংকার করে বলছি না, আমার বাবা-মায়ের সাথে ফরিদপুরের গণমানুষের নাড়ির সম্পর্ক, মায়া এবং ভালোবাসার সম্পর্ক যা তাঁরা মানুষকে সেবা করার মাধ্যমে, সততার মাধ্যমে, বিনয়ের মাধ্যমে অর্জন করেছেন।

সেলিম আরো বলেন আমার বাবা ছিলেন নির্লোভ, অজাতশত্রু, যেন ফরিদপুরবাসীর সবার পাশের বাড়ির চিরচেনা আপন মানুষটির মত, সুখ দুঃখের সাথী।

আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দীক্ষিত হয়ে, আমার বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে, জননেত্রী শেখ হাসিনার একজন কর্মী হয়ে তার নির্দেশিত পথে নিজেকে উৎসর্গ করেছি। আমি বিশ্বাস করি জনগণকে ফাঁকি দেওয়া যায় না। তারা সবকিছু জানে এবং বোঝে।

নিজের পার্থীব শ্রী বৃদ্ধির চাইতে মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন এবং তাঁদের সেবা করাই নিজের জীবনের ব্রত হিসাবে নিয়েছি।

সেলিম আরো বলেন, আমার আপা, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশই আমার কাছে সব কিছু।
তিনি বলেন উচ্ছল তারুণ্যের শুরু থেকে জীবন যৌবনের সোনালী সময় টা আমি আমার আপা, জননেত্রী শেখ হাসিনার স্নেহের ছায়ায় তাঁরই নির্দেশিত পথে চলে আজকের এই পরিণত বয়সে উপনীত হয়েছি। আপা আমার সমস্ত কিছু জানেন এবং এক লহমায় সবকিছু বুঝে ফেলতে পারেন। এই বোঝাপড়ার বিষয়টা নিক্তি মেপে ওজন করা যায় না। আর সে কারণেই আমার এই পরিণত বয়সে জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন গরিব দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কাজে নিয়োজিত করতে পারেন।

পরিশেষে এই সাবেক ছাত্রনেতা আরো বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর, আমি আওয়ামীলীগের, আমি শেখ হাসিনার, আমি ফরিদপুরের গণমানুষের।।এটাই আমার পরিচয়। নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিলে ইনশাআল্লাহ আমি বিজয়ী হব এবং আপামর জনসাধারণের কল্যাণের জন্য নেত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন এবং নির্দেশ দেবেন তাই আমি মাথা পেতে নেব।

(আরআর/এসপি/আগস্ট ০৮, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test