E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফরিদপুরে সাপের কামড়ে তিনজনের মৃত্যু, কোনো হাসপাতালে নেই অ্যান্টিভেনম

২০২৩ আগস্ট ১৮ ১৯:২৪:৪৮
ফরিদপুরে সাপের কামড়ে তিনজনের মৃত্যু, কোনো হাসপাতালে নেই অ্যান্টিভেনম

দিলীপ চন্দ, ফরিদপুর : বর্ষা মৌসুমে ফরিদপুরের বিভিন্ন স্থানে বেড়েছে সাপের উপদ্রব। বিশেষ করে বিষধর রাসেল ভাইপারেরও দেখা মিলছে। গত দুইদিনে জেলায় বিষাক্ত সাপের কামড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

নিহতরা হলেন সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুর গ্রামের নুরজাহান বেগম (৫৫), আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের রুদ্রবানা গ্রামের নেপুর মোল্লার ছেলে ওয়াজ কুরুনী (২১) ও বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ভাবখণ্ড গ্রামে বর্ষণ মহন্ত (১১)।

নিহতের স্বজনরা জানান, সাপে কাটার পর তাদের তিনজনকেই ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু অ্যান্টিভেনম না থাকায় তা রোগীদের দেওয়া যায়নি।
গত জুন মাস থেকে জেলার কোনো হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ নেই। বিষাক্ত রাসেল ভাইপারসহ গোখরা সাপের কামড়ে আক্রান্ত রোগী এলেও অনেকটা বিনা চিকিৎসাতেই তাদের প্রাণহানি ঘটছে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ভোরে আলফাডাঙ্গা উপজেলায় পাট কাটতে গিয়ে বিষাক্ত সাপের কামড়ে আহত হন কলেজছাত্র মো. ওয়াজ কুরুনী। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. বাবার আলী জানান, সাপের কামড়ে আহত হওয়ার পর প্রথমেই ওয়াজ কুরুনীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, কিন্তু সেখানে কোনো অ্যান্টিভেনম না থানায় ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেও অ্যান্টিভেনম না থাকায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখানে তার মৃত্যু হয়।

এর আগে বুধবার দুপুরে বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ভাবখণ্ড গ্রামে বাড়িতে থাকা মাটির গর্তে পা গেলে বিষধর সাপ বর্ষণ মহন্তকে কামড় দেয়। তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নেওয়া হয়। অ্যান্টিভেনম না থাকায় পরে সে মারা যায়।

একইদিন সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুর গ্রামের নুরজাহান বেগম বাড়ির পাশ থেকে খড় আনতে গিয়ে সাপে কামড়ে আহত হন। নুরজাহান বেগমের ভাই চুন্নু মোল্লা জানান, ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা বলেন, তাদের কাছে কোনো ওষুধ নেই। পরে তিনি মারা যান।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমাদের সংগ্রহে যতটুকু অ্যান্টিভেনম ছিল তা শেষ হয়ে গেছে। এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে অ্যান্টিভেনম চেয়ে চাহিদাপত্র সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই পাওয়া যাবে। তখন সংকট কেটে যাবে এবং সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ফরিদপুর অঞ্চলে রাসেল ভাইপারের উপদ্রব রয়েছে। অ্যান্টিভেনমের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করি, স্বল্প সময়ের মধ্যেই অ্যান্টিভেনম পাওয়া সম্ভব হবে।

(ডিসি/এএস/আগস্ট ১৮, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test