E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

'কালিয়ায় পাঁচ কোটি টাকার আদর্শ গ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ'

২০১৪ ডিসেম্বর ৩১ ২১:৩৭:৩৬
'কালিয়ায় পাঁচ কোটি টাকার আদর্শ গ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ'

কালিয়া(নড়াইল) প্রতিনিধি : নড়াইলের কালিয়ায় ইউনিসেফের অর্থায়নে বেসরকারি সংস্থা ইপিআরসি কতৃক পাঁচ কোটি টাকার আদর্শ গ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম ও অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়ম নীতি লঙ্ঘন, স্থানীয় প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় না করা এবং নলকুপ স্থাপনে নানা অনিয়ম ও অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ তদন্তের জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তা ও জন প্রতিনিধিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ইপিআরসির কালিয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতির কারণে ২০১৩ সালে অক্টোবর মাসে ইউনিসেফের অর্থায়নে আর্সেনিক মুক্ত পানির সুব্যাবস্থার জন্য ইপিআরসি নামের একটি বেসরকারি সংস্থা কালিয়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন জয়নগর, হামিদপুর, খাশিয়াল, পহরডাঙ্গা ও ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নে ৫ কোটি টাকা ব্যয় নির্দ্ধারণ করে আদর্শ গ্রাম প্রকল্প নামে একটি প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়। প্রকল্প গুলোর মধ্যে রয়েছে, ২০০ টি গভীর নলকুপ স্থাপন, ২০ টি স্কুলে গভীর নলকুপ ও ল্যাট্রিন স্থাপন ও ৫টি ইউনিয়নের হাটবাজার গুলোতে পাবলিক টয়লেট স্থাপন ও পানির পাইপ লাইন স্থাপন। এক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক আক্রান্ত ইউনিয়ন বাদ দিয়ে তুলনা মূলক কম আর্সেনিক আক্রান্ত ইউনিয়ন বেছে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়ম অনুযায়ী সভা ও সেমিনারের মাধ্যমে জন সচেতনতা সৃষ্টি সহ স্থানীয় প্রশাসন ও ইউপি চেয়াম্যানদের মতামতের ভিত্তিতে বিনা মূল্যে ওইসব গভীর নলকুপ ও ল্যাট্রিন স্থাপনের কথা থাকলেও পাবলিক নলকুপ স্থাপনের স্থান নির্দ্ধারণের নামে নলকুপ পেতে আগ্রহীদের কাছ থেকে নলকুপ প্রতি ৫ হাজার টাকা হারে আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। ইতি মধ্যে যে সব নলকুপ স্থাপন করা হয়েছে তাও ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের অভিযোগের ভিত্তিতে নানা অনিয়ম ও অর্থবানিজ্যের তদন্তের জন্য ইউএনওকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবেন বলে জানা গেছে। পহরডাঙ্গা ইউপির চেয়ারম্যান আহসান আলী শিকদার শিকদার ও খাশিয়াল ইউপির চেয়ারম্যান ফরিদ শিকদার অভিযোগ করে বলেছেন, ইপি আরসির কাজে অনেক গাফিলতি রয়েছে। এলাকার জন প্রতিনিধিদের সাথে তার কোন সমন্বয় করেনি। কোন সভা সেমিনারও করেনি। এবং উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ আকরাম হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন,উপজেলার কলাবাড়িয়া,বাঐশোনা ও সালামাবাদ ইউনিয়নে আসেনিকের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশী হলেও সেগুলো বাদ রেখেই ইপিআরসি তাদের কর্মক্ষেত্র নির্দ্ধারন করেছে। সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা ছাড়া যা খুশি তাই করা ঠিক নয়।ইপিআরসির প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ আমজাদ হোসেনের সাথে যোগাযেগ করা হলে তিনি ওই টাকা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, টাকা নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও সংস্থার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই টাকা নেয়া হচ্ছে এবং ইপিআরসির হিসাব রক্ষক ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের যৌথ ব্যাংক হিসাবে জমা করা হচ্ছে। সহকারি প্রকল্প সমন্বয় কর্মকর্তা তুষার কান্তি সরকার বলেছেন, টাকাটা সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে কন্ট্রিবিউশান হিসাবে নেয়া হচ্ছে। এটা প্রকল্পে যোগ করা হবে।ইপিআরসির পরিচালক(প্রকল্প)ডঃ মশিউর রহমান ওই টাকা নেয়ার সত্যতা স্মীকার করে বলেছেন,কাজ করতে গেলে কিছূ ত্রুটি হতেই পারে। তবে ইউনিসেফের পরামর্শেই ওই টাকা জনগনের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে।এবং সেটা ব্যাংক হিসাবে জমা আছে। তবে ওই টাকা দিয়ে কি করা হবে সে বিষয়ে তিনি সন্তোষজনক কোন জবাব দিতে পারেন নি। কালিয়ার ইউএনও মোঃ শাহিন হোসেন বলেছেন, উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় জন প্রতিনিধি সহ সদস্যদের অভিযোগের কারণে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান খান শামীম রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন,ওই প্রকল্পের ব্যাপারে তাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছুই জানানো হয়নি। ওই প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ বানিজ্য সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠার কারনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টিতে তিনি খোজ নিতে গিয়ে ইপিআরসির কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোন সন্তোষ জনক জবাব পাননি।

(এমএইচএম/পি/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test