E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

উদ্বোধনের আগেই বন্ধ হয়ে গেল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল

২০১৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ১৮:০১:০০
উদ্বোধনের আগেই বন্ধ হয়ে গেল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল

মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরে উদ্বোধনের আগেই বন্ধ হয়ে গেল ইসলামী ব্যাংক এ.আর. হাওলাদার কমিউনিটি হাসপাতালের কার্যক্রম।

৫১ বছর পর আকস্মিকভাবে ৪র্থ পক্ষ জমির দাবিতে আদালতে পিটিশন করায় হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও স্বল্প খরচে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসার ব্রত নিয়ে গত ২৮ আগস্ট হাসপাতালটির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়। তবে এ হাসপাতাল থেকে উপকৃত রোগী ও এলাকাবাসী পুনরায় এটি চালুর দাবি জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর ১১১নং শকুনী মৌজার আর.এস ৩৬, এস.এ ৫৭, খতিয়ানে ৪০৯ ও ৪১০ দাগের সমূদয় সম্পত্তির মালিক ছিলেন নূরুল আলম চৌধুরীসহ ৮ ভাই এবং হাসেম হাওলাদার। তারা ১৯৬৪ সালে ঐ জমি ৩৯৪০ নং দলিলমূলে খন্দকার মহিউদ্দিনের কাছে বিক্রি করে দেয়। খন্দকার মহিউদ্দিন ১৯৯৩ সালে ঐ জমি জোবায়েদা নাসরিন রহমান কুমকুম স্বামী আতিকুর রহমান বাবুলের কাছে বিক্রি করেন (দলিল নং ৪৯৬৩ তাং ২৭.১২.৯৩)। জোবায়েদা নাসরিন রহমান কুমকুম ২ দাগের ২৩.৯২ শতাংশ জমি ২০১০ সালে ইসলামী ব্যাংক এ.আর. হাওলাদার কমিউনিটি হাসপাতালের কাছে বিক্রি করেন (দলিল নং ১৪০৮ তাং ১১.০৩.১০)।

২০১০ সালে মাদারীপুর পৌরসভা থেকে নকশা অনুমোদন নিয়ে ঐ জমিতে ইসলামী ব্যাংক এ.আর. হাওলাদার কমিউনিটি হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উন্নতমানের চিকিৎসা সামগ্রী ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করে চলতি বছর ২৮ আগস্ট পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরুর ২ দিন পরেই ১৯৬৪ সালে ৩৯৪০ নং দলিলের ৯নং স্বাক্ষরদাতা হাসেম হাওলাদারের নাতি মিজান হাওলাদার ঐ জমির মালিকানা দাবি করে ৩০ আগস্ট আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করেন (নং ৭৯১/১৫ তাং ৩০.০৮.১৫)। দীর্ঘ ৫১ বছরে ৪ বার হাত বদল হওয়া সম্পত্তির মালিকানা দাবিতে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আদালত নালিশী জমিতে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখতে মাদারীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়ে ৩ নভেম্বর পরবর্তী শুনানীর তারিখ ধার্য করেন। কিন্তু আদালতের নির্ধারিত তারিখের পূর্বেই অজ্ঞাত কারণে পুলিশ ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কর্মরত অবস্থায় হাসপাতালের প্রশাসনিক অফিসার মঞ্জুরুল ইসলাম খানসহ ৫ কর্মচারীকে আটক করে নিয়ে যায়। ফলে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই বন্ধ হয়ে যায় হাসপাতালের কার্যক্রম।

হাসপাতালের প্রশাসনিক অফিসার মঞ্জুরুল ইসলাম খান বলেন, “উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও স্বল্প খরচে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চিকিৎসার ব্রত নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি। সিদ্ধান্ত হয় খুব শীঘ্রই নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খানকে দিয়ে হাসপাতালের উদ্বোধন করানো হবে। বিজ্ঞ আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। আদালত হাসপাতাল বন্ধের নির্দেশ দেননি। পরিস্থিতির কারণে কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয় ও সেবাগ্রহীতা শিউলি বেগম, আনোয়ার হোসেন, কুলসুম বেগমসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, এখানে আমরা চিকিৎসা নিয়েছি। অল্প টাকায় ভালো চিকিৎসা পাওয়ার ব্যবস্থা আছে। নতুন ও উন্নত যন্ত্রপাতি দিয়ে ভালো পরীক্ষাও ব্যবস্থা আছে। আমাদের মনে হয় এখানকার ক্লিনিক ব্যবসায়িরা মিলে এটি বন্ধের ষরযন্ত্র করছে। তবে এটি চালু হলে গরীব মানুষ বেশি উপকৃত হবে। তাই আমরা এই হাসপাতালটি জনস্বার্থে চালুর দাবি জানাই।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জিয়াউল মোর্শেদকে মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তিনি ফোন রিভিস করেননি। এছাড়াও দাবিদার মিজান হাওলাদারের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

(এএসএ/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test