E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মাদারীপুরে দলীয় প্রতীক পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়-ঝাঁপ 

২০১৫ নভেম্বর ২৫ ১৭:৩০:২০
মাদারীপুরে দলীয় প্রতীক পেতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়-ঝাঁপ 

মাদারীপুর প্রতিনিধি : পৌরসভা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার সাথে সাথেই মাদারীপুরের ৩ পৌর এলাকায় নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়-ঝাপ শুরু হয়ে গেছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রচার প্রচারণায় মাঠে নেমেছে মাদারীপুর সদর, কালকিনি ও শিবচর পৌরসভার সম্ভাব্য প্রার্থীরা। নির্বাচনী মাঠ এখন সরগরম। কেউ ৬ মাস কেউ ১ বছর আগ থেকেও পাড়া মহল্লায় ঘুরে-ঘুরে নিজের জন সমর্থন যাচাই করে নিয়েছে।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবার থেকে পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে দলীয় প্রতীক। তাই এবারের পৌর নির্বাচন ভিন্ন স্বাদ এনে দেবে ভোটারদের কাছে। স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন অনেকে। এবারের পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা একটু বেশীই পরিলক্ষিত হচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক পেতে দৌড়-ঝাপ শুরু করে দিয়েছেন নিজ নিজ দলের হাই কমান্ডের কাছে।

এরই মধ্যে মাদারীপুরের ৩টি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার-ফেস্টুন-ব্যানার টাঙ্গিয়ে সম্ভাব্য মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলার ও মহিলা কাউন্সিলার প্রার্থীরা পৌরবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অনুদান দিয়ে ভোটারদের কাছে দোয়া চেয়ে তাদের মন জয় করার চেষ্টাও করছে কেউ-কেউ। জেলার ৪ পৌরসভার মধ্যে চলতি বছর ৬ জানুয়ারী নব-গঠিত রাজৈর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় ৩০ ডিসেম্বর রাজৈর পৌরসভার নির্বাচন হচ্ছে না বলে জানা গেছে।

মাদারীপুর সদর : আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে সরব থাকলেও অনেকটাই নিরব বিএনপি। তাদের কোন প্রার্থী এখনও নির্বাচনী প্রচারণায় নামেনি। জেলা বিএনপি নেতাদের দাবী নির্বাচনী প্রচারণায় নামলেই তাদের মামলা হামলা করে হয়রানী করা হবে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সময় মত তারা প্রার্থী দেবে। তবে জেলা যুবদলের সভাপতি মিজানুর রহমান মুরাদ পৌর নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা যুবদলের সভাপতি মিজানুর রহমান মুরাদ জানান, দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং যদি আমাকে মনোনায়ন দেওয়া হয় তবে আমি নির্বাচন করব। তবে জেলা বিএনপিতে চলছে গৃহদাহ। গত পৌর নির্বাচনে জেলা বিএনপির সভাপতি আবুবকর সিদ্দিক আবু মুন্সি বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেছেন এমন অভিযোগ এনে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য কাজী হুমায়ুন কবির।

কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য কাজী হুমায়ুন কবির অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির একাংশ আওয়ামীলীগের সাথে আতাত করে রাজনীতি করছে। এতে পৌর নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের আশংকাও করেন তিনি।

জেলা বিএনপির সভাপতি আবুবকর সিদ্দিক আবু মুন্সি জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ নেব।

দলীয় সূত্রসহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান গ্রুপ ও মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আ. ফ. ম বাহাউদ্দিন নাছিম গ্রুপ ভিন্ন ভিন্ন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।

সম্প্রতি সময়ে জেলায় আওয়ামীলীগে গ্রুপিং দ্বন্দ্ব না থাকলেও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবার শুরু হতে পারে গ্রুপিং দ্বন্ধ। এমন আশংকা স্থানীয়দের।

অপরদিকে পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মাদারীপুর পৌরসভা বর্তমান মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ ও শ্রমিকলীগ নেতা খন্দকার খায়রুল হাসান নিটুল প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ ছাড়া বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং মহিলা কাউন্সিলরের সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা শতাধিক।

কালকিনি: কালকিনিতে আওয়ামীলীগ সমর্থিত ৭জন ও বিএনপির একজন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য মো. মশিউর রহমান সবুজ, জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক লোকমান হোসেন ও কালকিনি সাবেক পৌর প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক সোহেল রানা মিঠুসহ ৭ জন নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন।

অপরদিকে বিএনপির একক সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুব হোসেন মুন্সি আলোচনায় রয়েছেন।

বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ওয়ার্ড কাউন্সিলার এবং মহিলা কাউন্সিলারের সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা অর্ধশতাধিক।

শিবচর: শিবচর পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র মো. আ. লতিফ মোল্যা, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. শামসুদ্দিন খান, সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আওলাদ হোসেন খান, যুবলীগের সাবেক সভাপতি আকরাম হোসেন খান ও বিএনপি প্রার্থী হিসেবে পৌর যুবদলের সভাপতি বাকাউল করিম খান এবং পৌর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক হেমায়েত হোসেন খান এর নাম শোনা যাচ্ছে।

উপজেলা আওয়ামীলীগ এক নেতা বলেন, সব সিদ্ধান্ত নির্ভর করে সাংসদ নুর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের উপর। তিনি যাকে মনোনায়ন দিবেন তারা সবাই তার কাজ করবেন। সংসদ সদস্য নুর-ই-আলম লিটন চৌধুরীর সিদ্ধান্তই এখানে চুড়ান্ত।
অন্যদিকে বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থীরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে আছেন। তবে তারা প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং মহিলা কাউন্সিলরের সম্ভাব্য প্রার্থীর সংখ্যা শিবচরে অন্যান্য পৌরসভার চেয়ে আপাতত কম দেখা হচ্ছে।

(এএসএ/এএস/নভেম্বর ২৫, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test