E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যে খাবারগুলো শরীরের শক্তি কমিয়ে দেয়

২০২১ এপ্রিল ০১ ১৩:১৯:৩৭
যে খাবারগুলো শরীরের শক্তি কমিয়ে দেয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক : অনিয়মিত জীবনযাপন ও ভুল খাদ্যাভাসের কারণে সারাদিন রাজ্যের ক্লান্তি ভর করে শরীরে উপর! এমনটি অনেকের সঙ্গেই ঘটে থাকে। অনিদ্রা, দুশ্চিন্তা এসবের কারণে শরীরে ক্লান্তি থাকতেই পারে। তাই বলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরেও যদি ক্লান্তি ভর করে আপনার শরীরে; তাহলে ভাবনার বিষয়!

সাধারণত সকালের খাবারের উপর নির্ভর করে সারাদিন আপনার শরীরে কতটা শক্তি পাবে। তবে ভুল খাবার নির্বাচনের কারণে সারাদিন ক্লান্তবোধ করেন অনেকেই। এজন্যই সকালের নাস্তায় কম ক্যালোরিযুক্ত কিন্তু স্বাস্থ্যকর ও অ্যানার্জিতে ভরপুর খাবারগুলো খাওয়া উচিত। জেনে নিন কোন খাবারগুলো খেলে শরীর শক্তি হারায়-

১. সাদা রুটি, পাস্তা এবং ভাত: এ খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে। দ্রুত শক্তি বাড়াতে কার্বোহাইড্রেটজাতীয় খাবারের বিকল্প নেই। তবে প্রক্রিয়াজাত শস্য যেমন- সাদা রুটি, সাদা পাস্তা এবং সাদা ভাত যেগুলো আমরা প্রায় সর্বদাই খেয়ে থাকি; সেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

প্রক্রিয়াজাত খাদ্যশস্য গ্রহণের ফলে রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিনের মাত্রায় দ্রুত বৃদ্ধি পায়। সেইসঙ্গে দ্রুতি শক্তি হ্রাস করে। অন্যদিকে বাদামি চাল, পাউরুটি, হোলগ্রেইন ময়দা ইত্যাদি খেলে দ্রুত শক্তি বাড়ে।

২. সিরিয়াল, দই এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার: সকালের নাস্তায় সিরিয়াল এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন অনেকেই। এ জাতীয় খাবারে অতিরিক্ত শর্করা থাকে। তাই নিয়মিত এ খাবারগুলো খেলে আপনার শক্তির মাত্রা দ্রুত কমতে শুরু করবে।

সিরিয়ালে খুব অল্প পরিমাণে ফাইবার থাকে। চিনি এবং কম ফাইবারজাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। যার ফলে শক্তি কমতে শুরু করে। সারাদিন যদি আপনি শর্করাজাতীয় খাবার বেশি খেয়ে থাকেন; তাহলে আপনার বেশি মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে ইচ্ছে করবে।

সিরিয়ালের পাশাপাশি দই, পিনাট বাটার, মাফিনস, কেক, পরোটা ইত্যাদি সকালের খাবারে অন্তর্ভুক্ত করবেন না। এগুলো খেলে সারাদিন রাজ্যের ক্লান্তি এসে পড়বে আপনার শরীরে।

৩. অ্যালকোহল: অনেকেরই ধারণা অ্যালকোহল সেবনের ফলে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়া যায়। অ্যালকোহল আসলে আপনার ঘুমের গুণমান এবং সময়কাল কমিয়ে আনবে।

আর অ্যালকোহল খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লেও আপনার ঘুম কখনো গাঢ় হবে না। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর আপনার শরীর অনেকটাই ক্লান্ত ও ঝিমিয়ে পড়বে। এ কারণে অ্যালকোহল সেবন থেকে বিরত থাকুন।

৪. কফি: দ্রুত অ্যানার্জি বুস্ট করতে কফি প্রায় সবাই কমবেশি পান করে থাকেন। তবে জানেন কি? এ ধারণাটি ভুল। তার মানে এই নয় যে, আপনি কফি পান করবেন না। অবশ্যই করবেন তবে পরিমাণমতো।

বিশেষ করে কফি অ্যালঝাইমারস এবং পার্কিনসনের মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের ঝুঁকি ২৫-২৬ শতাংশ কমাতে পারে। ১৮টি সমীক্ষার পর্যালোচনাতে আরও জানা গেছে, প্রতিদিন এক কাপ কফি পান করলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে।

তবে অতিরিক্ত কফি পান করলে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। কারণ নিয়মিত পুষ্টি ও ঘুম না হওয়ার কারণে কফি শরীরে খারাপ প্রভাব ফেলবে। এ কারণে প্রতিদিন পরিমাণ কমিয়ে ৪ কাপের বেশি কফি খাওয়া উচিত নয়।

৫. এনার্জি ড্রিংকস: তাৎক্ষণিক এনার্জি পেতে অনেকেই এনার্জি ড্রিংকস পান করে থাকেন। এতে আপনার এনার্জি বাড়ার বদলে কমতে শুরু করবে। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, এনার্জি ড্রিংকস পান করলে ঘুম তাড়ানোর পাশাপাশি এবং স্মৃতিশক্তিকে প্রায় ২৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে তুলে।

এর কারণ হলো এনার্জি ড্রিংকে মেশানো থাকে অধিক পরিমাণে চিনি, ক্যাফেইন এবং উত্তেজক পদার্থ। যেহেতু প্রচুর চিনি থাকে তাই এটি গ্রহণের ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণও বেড়ে যায় দ্রুত।

এ কারণে এনার্জি ড্রিংকের প্রভাব কেটে যাওয়ার পরই আপনার শরীর হয়ে পড়বে দুর্বল ও ক্লান্ত। নিয়মিত এনার্জি ডিংক পান করলে রাগ, দুশ্চিন্তা এবং হৃৎরোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।

৬. ফাস্ট ফুড: সবাই কমবেশি জানেন যে, ভাজা-পোড়া খাবার স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর। ফাস্টফুডজাতীয় খাবার আপনার ক্ষুধা মেলালেও শরীরকে কোনো পুষ্টি দিতে পারবে না।

এগুলোতে প্রচুর ফ্যাট থাকে এবং ফাইবার কম থাকে। এ কারণে আপনার হজম শক্তি কমে যায়। ভাজা এবং দ্রুত খাবারগুলোতে ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির পরিমাণ কম থাকে। ওজন বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শক্তি কমাতে থাকে এ খাবারগুলো।

৭. লো-ক্যালোরি খাবার: ক্যালোরি হলো পরিমাপের একক। যা খাদ্যদ্রব্য হজম হয়ে যাওয়ার পরে আপনার শরীরের কত শক্তি সরবরাহ করবে তা নির্ধারণ করে। আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস, চিন্তা-ভাবনা এবং হার্ট বিট এর মতো প্রাথমিক কাজগুলো বজায় রাখতে ক্যালোরি ব্যবহৃত হয়।

নিয়মিত কম ক্যালোরির খাবার গ্রহণের ফলে আপনার শরীর শক্তি হারাতে থাকবে। প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণে কম ক্যালোরি গ্রহণ করলে হরমোন ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। এতে আপনার বিপাকক্রিয়া কমতে শুরু করে।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ০১, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test