E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাবা-মাকে কীভাবে সম্মান করবেন?

২০২৩ জুলাই ২৩ ১৭:৪৭:৩৯
বাবা-মাকে কীভাবে সম্মান করবেন?

লাইফস্টাইল ডেস্ক : বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের দুরত্ব বাড়ছে। বেশিরভাগ সন্তানরাই মনে করেন বাবা-মা তাদেরকে বুঝতে পারছেন না ও তারা সুখের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। এ কারণে অনেক সন্তানই কখনো না কখনো বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন।

তবে সন্তানদের সব সময় মনে রাখতে হবে, বাবা-মায়ের চেয়ে বেশি তাদেরকে আর কেউই ভালোবাসতে পারবেন না। আর বাবা-মা যা করেন সন্তানের ভালোর জন্যই করেন। যদিও সন্তানকে সঠিক পথে ফেরাতে কখনো কখনো অভিভাবকরা খুব কঠোর হয়ে ওঠেন, তবে তা কিন্তু সন্তানের ভালোর জন্যই।

তারা সন্তানকে সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করতেই এমনটি করেন। এ বিষয়টি বুঝতে হবে ও বাবা-মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে সন্তানের। আর তাদের সঙ্গে যাতে দুরত্বের সৃষ্টি না হয় এজন্য সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে নিয়মিত।

সম্মান কী?

সম্মান হলো ইতিবাচক অনুভূতি। আর ব্যবহারেই এটি যথার্তভাবে ফুটে ওঠে। সম্মানের বিনিময়ে কিছু পাওয়ার আশা করা উচিত নয়। অনুগ্রহ করে প্রত্যেকের প্রতি সম্মান দেখানো উচিত। বয়স ও অবস্থান নির্বিশেষে সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়াই প্রমাণ করবে আপনি সম্মান করতে পারেন অন্যকে।

আপনি যদি অন্যদের প্রতি অসম্মানজনক ও অহংকারী হন, তার মানে হলো আপনি নিজেকেও সম্মান করছেন না। শ্রদ্ধা যত্নের প্রতিক্রিয়া। যখন কেউ আপনাকে যত্ন ও সমর্থন দেয় তখন আপনি সম্মান পাওয়ার অধিকার অর্জন করেন।

আপনিও যদি কারো কাছ থেকে সম্মান পেতে চান তাহলে আগে অন্যকে সম্মান করতে শিখুন। সবার আগে বাবা-মায়ের প্রতি কীভাবে সম্মান প্রদর্শন করবেন সেটি জানুন।

বাবা-মাকে বুঝুন

বাবা-মায়ের সম্পর্কে মনে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করুন। আমাদের আবেগ আমাদের চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত হয়। তাই বাবা-মায়ের সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক বিষয় চিন্তা করবেন না। তা যা বলেন বা করেন তা আপনার জন্য মঙ্গলজনক সেটি চিন্তা করুন।

মনে রাখুন তারা আপনাকে কতটা ভালোবাসে

আপনি যখন একটি শিশু ছিলেন, তখন কিন্তু এই বাবা-মা আপনাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবেসে আগলে রেখেছেন, যত্ন করেছেন। যদিও তারা মাঝেমধ্যে আপনার প্রতি রাগ প্রকাশ করতেই পারে, তার মানে এই নয় যে তারা আপনাকে ভালোবাসেন না। সন্তান যেমনই হোক না কেন বাবা-মা কখনো কম ভালোবাসতে পারেন না।

বাবা-মায়ের প্রশংসা করুন

যে কোনো কাজের পর বাবা-মাকে ‘ধন্যবাদ’ জানাতে ভুলবেন না। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে যদিও এই শব্দটি অনেক ছোট, তবুও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ ও সম্মান জানাতে ধন্যবাদ জানান বিনয়ের সঙ্গে।

উপহার দিন

বাবা-মায়ের মন ভালো করতে তাদেরকে বিভিন্ন সময় উপহার কিনে দিন। একটি সাধারণ উপহার দিয়েও তাদেরকে খুশি করতে পারেন।

রান্না করে খাওয়ান

বিভিন্ন উৎসব, অনুষ্ঠানে কিংবা ঘরোয়া আয়োজন বা বিশেষ দিন উপলক্ষে বাবা-মাকে রান্না করে খাওয়ান। তাদেরকে সেবা করুন। বাবা-মায়ের সেবা করার সুযোগ অনেকেই হয়তো পান না, আপনি তা হাতছাড়া করবেন না।

গৃহস্থলির কাজে সাহায্য করুন

ঘরের কাজে যতটা সম্ভব বাবা-মাকে সাহায্য করুন। আপনি যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন সব সময় বাড়ির কাজ করার চেষ্টা করুন। সব কাজ মা-বাবার উপর চাপিয়ে দেবেন না।

তাদেরকে নিয়ে ঘুরতে যান

যখনই সময় পাবেন বাবা-মাকে নিয়ে ঘুরতে যান বা কোথাও খেতে নিয়ে যান। বাবা-মাকে যদি আপনি সময় দেন তাহলে তারা খুশি হয়ে যাবে। চাইলে শুধু বাবা-মায়ের জন্য সিনেমার টিকিট, কোনো রেস্টেুরেন্টে ডিনারের সুযোগ করে দিতে পারেন।

তাদের দেখাশুনা করুন

কাজের খাতিরে অনেকেই বাবা-মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকেন। সেক্ষেত্রে সময় পেলেই তাদের সঙ্গে দেখা করুন। তারা অবশ্যই আপনাকে মিস করে ও একাকী বোধ করে। তাই যতটা সম্ভব বাবা-মায়ের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুন।

বাবা-মাকে জড়িয়ে ধরুন ও চুমু দিন

বাবা মায়ের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা প্রকাশে আবার কীসের লজ্জা! তাদেরকে জড়িয়ে ধরুন ও চুমু দিন। আপনার আলিঙ্গন ও চুম্বনই প্রকাশ করবে আপনি তাদের প্রতি কতটা কৃতজ্ঞ।

যোগাযোগ করুন নিয়মিত

ঘরের বাইরে থাকলে কিছুক্ষন পরপর তাদেরকে ফোন করুন ও খোঁজখবর নিন। তারা খেয়েছেন কি না বা শরীর কেমন আছে ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। কোনো কথা না থাকলে শুধু হ্যালো বলার জন্য হলেও ফোন করুন।

যোগাযোগ আপনাকে আপনার পিতামাতার চিন্তাভাবনা বুঝতে সাহায্য করতে পারে। এটি একটি পরিবার হিসাবে আপনার সম্পর্ককেও শক্তিশালী করবে।

কথা বলার সময় ভাষার দিকে খেয়াল রাখুন

বাবা-মায়ের সামনে বাজে কথা বলা এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে যখন আপনার বাবা-মা আশপাশে থাকে, তখন কথা বলার সময় ভাষার ব্যবহার করুন বুঝেশুনে।

তর্ক করবেন না

বাবা-মা আপনাকে যা ই বলুক না কেন তাদের মুখে মুখে তর্ক করবেন না। প্রয়োজন হলে তাদের সামনে যুক্তি দেখান তবে আপনার ব্যবহার যেন উগ্র না হয়। যদি তারা চুপ করতে বলেন, তবে কিছু বলবেন না। আর অবশ্যই বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলার সময় গলার স্বর কম রাখুন।

মিথ্যা এড়িয়ে চলুন

বাব-মায়ের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে হয়তো আমরা মিথ্যা কথা বলে থাকি। তবে যে মুহুর্তে আপনি সেই মিথ্যাগুলোকে আর ঢেকে রাখতে পারবেন না, তারা আপনার চেয়ে বেশি হতাশ হবে। তাই সব সময় সত্য কথা বলুন তাদেরকে।

সমস্যার কথা খুলে বলুন

বাবা-মা ছাড়া আপনার আপন আর কেউ নেই। তাই আপনার যত সমস্যার কথা আছে তাদের সঙ্গে শেয়ার করুন। তাদের পরামর্শ নিন। বাবা-মা আপনার জন্য যেটি ভালো সেই পরামর্শ দেবেন। আপনার উচিত তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া।

অভিযোগ করবেন না

বাবা-মায়ের প্রতি কোনো অভিযোগ করবেন না। আপনাকে তারা যে আদেশই করুক না কেন তা মানতে চেষ্টা করুন। কারণ আপনার জন্য যা ভালো সেটিই তারা করবেন।

মনে রাখবেন আপনার জন্য তারা যা করেছেন, আপনি আজীবন সেই ঋণ শোদ করতে পারবেন না। তাই তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন ও সম্মান প্রদর্শন করুন।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৩, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test