E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

সাতক্ষীরায় লাল পতাকায় বন্ধ অবৈধ নির্মাণ কাজ

২০১৭ মার্চ ২৭ ১১:৩০:২১
সাতক্ষীরায় লাল পতাকায় বন্ধ অবৈধ নির্মাণ কাজ

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : পেরিফেরি সম্পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলার অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতে সাজাপ্রাপ্ত সাতক্ষীরার ঝাউডাঙা বাজারের তামান্না ফিস এর মালিক সেলিম হোসেন আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সংস্কারের অনুমতি নিয়ে ঝাউডাঙা ইউনিয়ন তহশীলদার শহীদুল ইসলামের সহযোগিতায় সে আবারো একের পর এক ১০ টি পিলার ও সিঁড়ি নির্মাণ শেষে ছাদ নির্মাণের কাজ অব্যহত রেখেছে। অবিলম্বে এ অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাজার ব্যবসায়িরা।

ঝাউডাঙা বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ি জানান, তামান্না ফিস নামের ব্যবসা প্রতিষ্টানের স্বত্বাধিকারী সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের সেলিম হোসেন পেরিফেরি সম্পত্তিতে গত অক্টোবরের মাঝামাঝি নাগাদ অবৈধভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাড়ানোর কাজ শুরু করলে ভ্রাম্যমান আদালতে তার এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড হয়। একই সাথে ওই ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে লাল পতাকা তুলে দেওয়া হয়। জামিনে মুক্তি পেয়ে সেলিম হোসেন গত বছরের ২ ডিসেম্বর বিকেল থেকে লাল পতাকা সরিয়ে দিয়ে কমপক্ষে ৪০ জন নির্মাণ শ্রমিক একত্রে তামান্না ফিস এর ভবনের বর্ধিত অংশের কাজ নির্মাণের কাজ শুরু করে। জেলা প্রশাসকের নজরে আসায় ওই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে সেলিম হোসেন ৪ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সংস্কারের জন্য অনুমতি নেন। এর পরপরই প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পশ্চিম দিকে ছয়টি পিলার নির্মাণ করেন।

তারা আরো জানান, ঝাউডাঙা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার শহীদুল ইসলামের সহযোগিতায় গত ২ মার্চ বিকেল থেকে তামান্না ফিস কর্তৃপক্ষ সংস্কারের নামে দোকানের পাশে সিড়ি নির্মান কাজ শুরু করেন। সদর সহকারি ভূমি কমিশনার দেবাশীষ চৌধুরীকে অবহিত করা হলে তিনি তহশীলদার শহীদুল ইসলামকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

তহশীলদার ভবন বাড়ানোর কাজ নয়, সংস্কার করা হচ্ছে বলে বিষয়টি কমিশনারকে অবহিত করেন। একটানা কাজ করার পর ১২ মার্চ সকাল থেকে তামান্না ফিস এর পূর্ব পাশে নতুন করে চারটি পিলার ও দেয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করে। একপর্যায়ে ১৩ মার্চ পত্রপত্রিকায় ছবিসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কাজ বন্ধ করে দেন তহশীলদার। তবে কৌশলে ওই প্রতিষ্ঠানের ছাদ নির্মাণ করে দেওয়ার ব্যাপারে মালিককে আশ্বস্ত করেন তহশীলদার।

এরই অংশ হিসেবে ২৫ মার্চ শনিবার সকাল থেকে তামান্না ফিস এর ভবনের ছাদ নির্মাণ কাজ শুরু করলে ব্যবসায়িরা বিষয়টি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অরুন কুমার মণ্ডলকে অবহিত করেন। তারই নির্দেশে তহশীল অফিসের পিওনসহ তিন জন শনিবার দুপুর ২ টার দিকে তিনটি লাল পতাকা পুঁতে ওই অবৈধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।

ব্যবসায়িদের অভিযোগ, সদর সহকারি ভূমি কমিশনার ছুটিতে থাকার সূযোগে দূর্ণীতিবাজ তহশীলদার শহীদুল ইসলাম মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছুটির দিনে কৌশলে ওই অবৈধ নির্মাণ কাজে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তারা অবিলম্বে তামান্না ফিস এর মলিক সেলিম হোসেন ও তার ভাই মাসুদকে গ্রেফতারের দাবি জানান। একইসাথে নির্মিতব্য সেনটারিংসহ অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান। নইলে তহশীলদারের সহযোগিতায় যে কোন ছুটির দিনে সেলিম ওই ছাদ ঢালাই দিয়ে নির্মাণ কাজ শেষ করে ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

ঝাউডাঙা বাজার ব্যবসায়ি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন জানান, নীতিমালা বহির্ভুতভাবে মাছ বাজারে পেরিফেরি জমিতে প্রক্শ্যা দিবালকে যেভাবে নির্মাণ কাজ চলছে তা তহশীলদারসহ সকলেই জানে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

তামান্না ফিস এর মালিক সেলিম হোসেনের ভাই মাসুদ হোসেন জানান, ছাদ দিতে না পারলে তারা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য অনুরোধ করেন।

এ ব্যাপারে ঝাউডাঙা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার শহীদুল ইসলাম তামান্না ফিস এর ভবনে অবৈধ নির্মাণ কাজ চলার সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই উল্লেখ করে বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লাল পতাকা পুতে শনিবার দুপুরে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই তামান্না ফিস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। তবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অরুন কুমার মণ্ডল জানান, লাল পতাকা পুতে শুধু কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(আরকে/এসপি/মার্চ ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৩ জুন ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test