E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

ভিন্ন ভিন্ন বয়সে হাড় মজবুত রাখতে যা খাবেন

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১৫:০৩:০০
ভিন্ন ভিন্ন বয়সে হাড় মজবুত রাখতে যা খাবেন

নিউজ ডেস্ক : হাড় আমাদের শরীরের কাঠামো বা স্টাকচার। তবে ভিন্ন ভিন্ন বয়সে হাড়ের পুষ্টির চাহিদা এক রকম নয়। তাই বাড়ন্ত বয়সের সঠিক পুষ্টি ও প্রাপ্তবয়স্কদের হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে শরীরের চাহিদাগুলো বোঝা দরকার।

জেনে নিন হাড় মজবুত ও সুস্থ রাখতে কোন বয়সে কী খাবেন –
১. ৬ মাস থেকে ২০ বছর : শিশু ও কিশোর
জন্ম থেকে কিশোর বয়স পর্যন্ত হাড়ের গঠন চলতে থাকে। এই বাড়ন্ত বয়সে হাড় সবচেয়ে দ্রুত বাড়ে। সাধারণত ২০ বছর বয়সের মধ্যে হাড় তার সর্বোচ্চ ঘনত্বে পৌঁছায়। একে বলে ‘পিক বোন মাস’। এই সময় যথেষ্ট ক্যালসিয়াম, ভিটামিন–ডি ও সুষম খাবার খেলে বাকি জীবন হাড় শক্ত থাকে। এসময় নিয়মিত খেলাধুলা, দৌড়ঝাঁপ বা লাফঝাঁপও হাড়ের জন্য উপকারী। এসময় সন্তানের খাদ্য তালিকায় যা রাখবেন-
দুধ, দই, পনির
ডিম ও ছোট মাছ
পালং শাক, কচু শাক
ভিটামিন–ডি যুক্ত খাবার ও সূর্যালোক।

২. ২১–৩০ বছর : তরুণ বয়স
এসময় থেকে নিয়মিত ব্যায়াম ও ভালো খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুললে ভবিষ্যতের ঝুঁকি কমে যায়। এই বয়সে হাড় সবচেয়ে মজবুত থাকে। এসময় যেসব খাবার খাওয়া দরকার-
প্রতিদিন দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার
বাদাম, তিল ও ডাল
সামুদ্রিক মাছ
ফলমূল, বিশেষ করে ভিটামিন-সি যুক্ত ফল।

৩. ৩১–৫০ বছর : মধ্য বয়স
৩০ পার হওয়ার পর থেকেই হাড় ধীরে ধীরে পাতলা হতে শুরু করে। তাই এই সময়ে ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলা, পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম, ভিটামিন–ডি গ্রহণ করা, নিয়মিত হাঁটা বা ওজন তোলার মতো ব্যায়াম করা খুব দরকার। সেই সঙ্গে খাদ্যতালিকায় রাখুন—

ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ দুগ্ধজাত খাবার, সয়াবিন, তিল
ডিমের কুসুম ও সামুদ্রিক মাছ
ডাল, মাছ, মুরগির মতো ভালো প্রোটিনের উৎস।

৪. ৫০ থেকে ৬৫ : প্রবীণ বয়স
এই বয়সে নারীদের শরীরে হঠাৎ অনেকগুলো পরিবর্তন ঘটে, কারণ ৫০ এর পর নারীদের ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়। একে মেনোপজ বলে। মেনোপজের পর হাড় দ্রুত দুর্বল হতে থাকে। সেই সঙ্গে পুরুষদেরও বয়স বাড়ার সঙ্গে একই ঝুঁকি তৈরি হয়। এই সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত বোন ডেনসিটি টেস্ট করানো উচিত।

সেই সঙ্গে খাদ্য তালিকায় রাখবেন-
চিকিৎসকের পরামর্শে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট বা ফোর্টিফায়েড খাবার
বাইরে বের হওয়া না হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন–ডি সাপ্লিমেন্ট
ওমেগা–৩ সমৃদ্ধ মাছ বা সামুদ্রিক মাছ
বেশি করে শাক–সবজি ও ফল।

৫. ৬৫ বছরের পর : বার্ধক্য
এই বয়সে হাড় ভাঙার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তাই ব্যায়ামের পাশাপাশি ভারসাম্য রক্ষার অনুশীলন, যেমন তাই–চি ও যোগব্যায়াম, কাজে আসে। বাড়িতে হোঁচট খাওয়ার মতো ঝুঁকি কমানোও জরুরি। ৬৫ বছরের বেশি নারীদের জন্য বোন ডেনসিটির খেয়াল রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঝুঁকি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ বা বিশেষ চিকিৎসা নিতে হবে। এ সময় লক্ষ্য থাকে ভাঙন প্রতিরোধে।

খাদ্য তালিকায় রাখুন—
হালকা প্রোটিন, যেমন - ডিম, ডাল, মুরগি
দুধ, দই বা ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট
ভিটামিন–ডি সমৃদ্ধ খাবার ও সাপ্লিমেন্ট
পর্যাপ্ত পানি।

হাড়ের যত্ন নেওয়া শুরু করতে হবে ছোটবেলা থেকেই। নিয়মিত দুধ, ডিম, মাছ ও শাক–সবজি খেলে হাড়ের ভিত শক্ত হবে। বয়স বাড়লে সচেতন খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম আর প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শমতো সাপ্লিমেন্ট—এসবই হাড়কে দীর্ঘদিন মজবুত রাখবে।

তথ্যসূত্র : ইউনিভার্সিটি অফ এক্সেটার, কিংস কলেজ লন্ডন, আমেরিকান একাডেমি অফ অর্থোপেডিক সার্জনস, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অন এজিং, পাবমেড, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

(ওএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test