E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জাদুকাঁটায় কিশোর খুনে জড়িত ৭ জনের নামে হত্যা মামলা 

২০২০ মার্চ ০৫ ১৬:১০:৫৬
জাদুকাঁটায় কিশোর খুনে জড়িত ৭ জনের নামে হত্যা মামলা 

সিলেট প্রতিনিধি : সীমান্ত নদী জাদুকাঁটায় বালু পাথর কোয়ারি দখল ও চাঁদাবাজির ঘটনায়  সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে কিশোর সৈয়দ নূর খুনে জড়িত সাত জনের নামে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার বিকেলে ওই কিশোরের মুল ঘাতক গোলাম কাদিরকে থানা পুলিশ আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে।,

বুধবার দুপুরে উপজেলার ঘাগটিয়া আর্দশ গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে নিহতের বড়ভাই গোলাম নুর বাদী হয়ে গোলাম কাদিরকে প্রধান আসামী করে সাতজনের নামে এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ঘাগটিয়া বড়টেক এলাকার পাকা সড়কে জাদুকাঁটা নদীর তীরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো.মিজানুর রহমান পিপিএম নিহতের পরিবারের লোকজন ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে মামলায় নিরপরাধ কাউকে জড়িয়ে অহেতুক হয়রানী না করার আহবান জানান।,

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সীমান্ত নদী জাদুকাঁটায় বালু পাথর কোয়ারি দখলের জের ধরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে প্রতিপক্ষ মৃত নবীকুলের ছেলে জেঠাত ভাই গোলাম কাদিরের ছুরিকাঘাতে উপজেলার ঘাগটিয়া আদর্শ গ্রামের নাসির উদ্দিনের কিশোর ছেলে সৈয়দ নূর (১৫) খুন হন।

এ ঘটনায় নিহতের পিতা জখমী নাসির উদ্দিনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ঘটনার রাতে দু’দফা অস্ত্রোপাচার করা হয়।

এদিকে ঘটনারপর আত্বগোপনে থাকা মূল ঘাতক গোলাম কাদিরকে থানার ওসির নেতৃত্বে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার লক্ষীপুর গ্রাম হতে গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনা সম্পর্কে এলাকাবাসী জানায়,উপজেলার ঘাগটিয়া আদর্শ গ্রামের মৃত ছোবানের ছেলে নাসির উদ্দিন ও তার বড় ভাই মৃত নবীকুলের পরিবারের লোকজনের মধ্যে ঘাগটিয়া বড়টেক এলাকার পাকা সড়কের তীরে থাকা জাদুকাঁটা নদীর চরে বালু পাথর কোয়ারির জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল।
মঙ্গলবার সকাল হতে জাদুকাঁটা নদীর বিরোধপূর্ণ চরে কোয়ারি দখল করে নাসির উদ্দিনের বড় ছেলে গোলাম নুর ও মৃত নবীকুলের ছেলে গোলাম নুরের জেঠাত ভাই গোলাম কাদির উভয়েই অবৈধভাবে বালু পাথর উত্তোলনে শতাধিক শ্রমিক নিয়োগ করে। এতে ১৩ সেট সেইভ মেশিন ব্যবহার করা হয়।
প্রতি সেট সেইভ মেশিনের বিপরীতে শ্রমিক সর্দারদের নিকট হতে নিয়মিত দেড় থেকে দুই হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে আসছিলেন গোলাম কাদির ও তার চাচাত ভাই গোলাম নুর।

মঙ্গলবার কোয়ারিতে লাগানো এক সেট সেইভ মেশিনের চাঁদার টাকা অতিরিক্ত হাতিয়ে নেয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে গোলাম কাদির ও গোলাম নুর। এ নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোলাম কাদির আদর্শ গ্রামের বড়টেক এলাকার জাদুকাঁটা নদীর তীরে তার বাড়ির সামনে চাচা নাসির উদ্দিনের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন।

এক পর্যায়ে ভাতিজা গোলাম কাদির চাচা নাসিরের বুকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। বাধা দিতে এগিয়ে আসলে নাসিরের কিশোর ছেলে সৈয়দ নুরের তলপেটে ছুরিকাঘাত করেন গোলাম কাদির।

অভিযোগ রয়েছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে জাদুকাটা নদীর বড়টেক,চালিয়ারঘাট এলাকায় উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের মৃত জুলহাস শাহর ছেলে মাহমুদ শাহ, বারিয়া সোনার ছেলে বরকত, মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে আব্দুল আহাদ, এখলাছ মিয়ার ছেলে রানু মিয়া একটি প্রভাবশালী চক্রের সহায়তায় থানা পুলিশ, বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করার অজুহাত দেখিয়ে কাগজে কলমে তালিকা তৈরী করে বালু পাথর কোয়ারির নামে প্রতি শ্রমিক সর্দারদের নিকট হতে প্রতি কোয়ারির বিপরীতে ৩০ হাজার টাকা করে ৫০ কোয়ারি খনন করিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকা আদায় করে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ মঙ্গলবারের কিশোর সৈয়দ নুর হত্যকান্ডের পেছনে অবৈধ কোয়ারির দখল বাণিজ্য ছাড়াও এমন সংঘাত উস্কে দেয়ার নেপথ্যে চার কোয়ারির অনুমোদন দাতা ও তাদের পেছনে মদদ দাতা প্রভাবশালী মহলের উস্কানি রয়েছে।

বুধবার বিকেলে তাহিরপুর থানার ওসি মো.আতিকুর রহমান বলেন, হত্যা মামলায় এজাহার নামীয় অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(এ/এসপি/মার্চ ০৫, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test