E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শরিফপুর ইউপি চেয়ারম্যানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত কমিটি

২০২২ জুলাই ২০ ১৬:৫৩:০১
শরিফপুর ইউপি চেয়ারম্যানের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত কমিটি

রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুর সদরের শরিফপুর ইউপির চেয়ারম্যান আলম আলীর বিরুদ্ধে অর্ধ শতাধিক সরকারি প্রকল্পের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

সরেজমিনে ঘুরে প্রকল্পের নামে সরকারি অর্থ আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া গেলেও অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানালেন, অভিযোগ তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগের প্রমাণ মিললে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।

জামালপুর সদরের সবচেয়ে বড় ও বেশি জনসংখ্যার ইউনিয়ন শরিফপুর। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদঘেঁষা এই ইউনিয়নে ২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন মসজিদ, কবরস্থান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সড়ক উন্নয়নে অর্ধশতাধিক প্রকল্পর বিপরীতে নগদ টাকা চাল/গম বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ কাজ না করে পুরোটাই আত্মসাতৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।

২০২১-২২ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিখা প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার গোদাশিমলা বাজার থেকে ঢেংগারগড় তেঁতুলতলা বাজার পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রায় ৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয় সরকার।

সরেজমিনে গেলে ঢেংগারগড় গ্রামের মোহাম্মদ আলী এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, এই সড়কে গত এক যুগে এক কুদাল মাটিও ফেলা হয়নি। সরকার যদি এই রাস্তার জন্য কোনো বরাদ্দ দিয়ে থাকে তাহলে পুরোটাই আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না।

২০১৯-২০ অর্থ বছরের আওতায় ঢেংগারগড় কপালীপাড়া মসজিদ থেকে নয়াপাড়া তোতার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে ৮ মেট্রিক টন, নয়াপাড়া হতে দেওয়ালের ঘাট পর্যন্ত রাস্তায় মাটি ভরাট ১৫ মেট্রিক টন, ঢেংগারগড় হুছির বাড়ি থেকে সুরুজ বাজার হয়ে সিঙ্গাবিল পর্যন্ত রাস্তা পুন:সংস্কারের জন্য ২৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিলেও তিন প্রকল্পের কোথাও এক টুকরা মাটি পড়েনি।

দেওয়ালের ঘাট এলাকার রহিমা বেগম জানান, কাগুজে লেখা ওই বরাদ্দের কোনো কাজ রাস্তায় হয়নি। জয়রামপুর-রঘুনাথপুর শশাখালী খালের উপরের ব্রিজের দুই পাশের এপ্রোজ সড়কের জন্য ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হলেও কাজ না করেই পুরো টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানালেন, ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ব্রিজ কোনো কাজেই আসছে না এপ্রোজ না থাকার কারণে।

এডিবির অর্থায়নে শরিফপুর বাজার থেকে মাদ্রাসা হয়ে রেললাইন পর্যন্ত রাস্তা সিসিকরণ প্রকল্পে ৫ লাখ টাকায় অর্ধেক কাজ হলেও জয়রামপুর বন্দেরবাড়ি রাস্তায় ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও কোনো কাজ হয়নি বলে স্থানীয়রা জানান।

গ্রামীণ রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, ঈদগাঁ মাঠ, কবরস্থান উন্নয়নে সরকার প্রতিবছর বরাদ্দ দিলেও তা লোপাট হওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ছে গ্রামের মানুষের।

সরকারি প্রকল্পের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শরিফপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলম আলী।

জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান সাংবাদিকদের জানান, অভিযোগ তদন্তে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রকল্পের নামে সরকারি অর্থ আত্মসাতের ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সরকারি বরাদ্ধের অর্থে প্রকল্প কাজ বাস্তবায়নে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এমন প্রত্যাশা জামালপুরবাসীর।

(আরআর/এসপি/জুলাই ২০, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test