E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রফিকুলের চোখে মুখে নিরাশা 

এ জীবন যেন শেষ হয়েও হয় না শেষ!

২০২২ সেপ্টেম্বর ১৭ ১৭:০৬:১১
এ জীবন যেন শেষ হয়েও হয় না শেষ!

স্বাধীন মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, কেশবপুর : কেশবপুরের রফিকুল ইসলামের চোখে মুখে নিরাশা, এ জীবন যেন শেষ হয়েও হয় না শেষ। যে চোখে স্বপ্ন দেখত সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার। পরিবারের অভাব অনাটন দূর করার। সেই চোখ যেন নিরবে বলে যাচ্ছে হতাশার এক উপাখ্যান। পরিবারের এক মাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি যখন পরিবারের বোঝা হয়ে পড়ে তখন সেই পরিবারটি সমাজে মাথা গোজার মত ঠাই খুজে পাই না। নিরাশার বালুচরে বাসা বাঁধার মত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তেমনি এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সাক্ষী কেশবপুরের রফিকুল ইসলামের পরিবার।

২৮ বছরের তরতাজা এক যুবক রফিকুল ইসলাম। কেশবপুর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ঝিকরা গ্রামে তার জন্ম। পিতা রেজাউল ইসলাম, মাতা ছবিরন বেগম। মাকে নিয়ে বসবাস করেন নানার বাড়িতে। একমাত্র বোনটাকে করেছেন পাত্রস্থ। সংসারে মা, নানী ছাড়া আর কেউ নেই। অনেক বছর আগে পারিবারিক কলহে হারিয়েছেন পিতার স্নেহ। বছর দেড়েক আগে পল্লী বিদ্যুৎতের লাইন ম্যান হিসাবে কাজ করতে গিয়ে খুলনার কয়রায় পড়েন দূর্ঘটনার কবলে। দীর্ঘ ৬ মাস ঢাকার জাতীয় বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিররেও হারাতে হয় ২ হাত, ১ পা। অবশ্য চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন রফিকুলের মা। বিদ্যুৎতের খুঁটির উপরে মাত্র ৩/৪ মিনিটের কাজ বাকি ছিলো। একই এলাকার ফোর ম্যান তরিকুল ইসলাম কাজ শেষ হয়েছে কি না শুনেই এর ভিতরে লাইন অন করে দেয়। তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ এ ঝলসে যায় রফিকুলের শরীর। এখন তারা ছেলেকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। বর্তমানে প্রতিবন্ধী কার্ডের সামান্য টাকা দিয়ে ছেলের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হয়ে পড়ছে না। মানবিক সাহায্যের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। হয়ত ছেলেকে আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তবে যত দিন পারে মা ছবিরন বেগম ছেলেকে ভালো ভাবে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।

সমাজের বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসে রফিকুল ইসলামের পরিবারটিও আর ৫ টা পরিবারের মত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে।

(এসএ/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test