E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শীতে কাঁপছে উত্তরের জনপদ 

২০২৪ জানুয়ারি ০৩ ১৪:৫৯:৪৯
শীতে কাঁপছে উত্তরের জনপদ 

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্য প্রভাবে হিমেল হাওয়া আর কনকনে শীতে কাঁপছে দিনাজপুরসহ উত্তরের জনপদ। বুধবার (৩ জানুয়ারি) মৌসুমের সর্বোনিন্ম তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগডের তেঁতুলিয়ায় । দিনাজপুরে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দু’দিন ধরে হিমেল হাওয়া, ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জেলাবাসীর জীবন-যাত্রা।পশু-পাখিসহ প্রাণিকুলেরও নাকাল অবস্থা। হিমেল হাওয়া আর তীব্র শীতের কারণে খেটে খাওয়া-নিন্ম আয়ের মানুষের বেহালদশা।

দিনাজপুরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার সাথে দু’'দিন ধরে বইছে মৃদু শৈত্য প্রবাহ। দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, জেলার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বইছে। আজ বুধবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ৯৯ শতাংশ। গতিবেগ ০৩ নটস। যা সকাল ৬ টায় ছিলো ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিলো ১০০ ভাগ।গতিবেগ ছিলো ০১ নটস।

অন্যদিকে রংপুর বিভাগের প্রধান আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বুধবার (৩ জানুয়ারি) আজ সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়ায় ৭.৮, দিনাজপুরে ৯.৫, রংপুরে ১১.৯, কুড়িগ্রামে ১০.৫ নীলফামারীতে ১০.২,গাইবান্ধায় ১২.৩, লালমনিরহাটে ১২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

তাপমাত্রা আগামী কয়েকদিন নিম্নমুখী থাকবে তিনি জানিয়েছেন।

কনকনে শীতে দিনাজপুর সহ উত্তর জনপদের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমুল ও খেটে খাওয়া মানুষ। অসংখ্য খেটে খাওয়া হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষদের বেহালদশা। চরম দুর্ভোগে পৌছেছে তাদের জীবনযাত্রা।

দিনাজপুরে ‘মানুষ বেচা-কেনার হাট’ বলে খ্যাত শহরের ষষ্টিতলা শ্রম বাজারে কাজের জন্য অপেক্ষামান দিনাজপুরের বিরল উপজেলার পলাশবাড়ী এলাকার ষাটোর্ধ বয়সের এন্তাদুল জানালেন, ‘জাড়োত গাওটা কাঁপি উঠেছে। এই ছিঁড়া চাদরটা প্যাচাই তারপরও পোহাতিয়া উঠি,নামাজ-কালাম পড়ি বেইর হইচো। এখনো কোনো কাম পাওনি বাপ। আইজ যে কী হবি। আল্লাহ জানে ! এইবার গরম কাপড় কম্বল দিবেন কী তোমরা বাপ ? দিলে ভালো হয়,মা মরা মোর এক বেটির একনা ৫/৬ বছরের ছোয়ার হামার সাথে থাকে। ওক ঢাকা দিবা পারুনু হয় বাপ। ছোয়ালটা জাড়োর থর থর করি কাঁপে।’

এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি। গত কয়েকদিন ধরে তীব্র শীতের কারনে শিশুদের নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ শীত জনিত রোগে শিশু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। শিশুদের যাতে শীত না লাগে ব্যোপারে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

শহর থেকে একটু দূরে গ্রামে থাকা ছিন্নমূল, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা নাকাল।

হতদরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকেই খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তার অদূরে কিছুই দেখা যায় না।তাই, দূর্ঘনা এড়াতে সড়ক,মহা-সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল করছে হেড লাইট জ্বালিয়ে। এরপরও বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা।

অন্যদিকে শীতের কারণে জেলা শহরের হকারস মার্কেট এবং অভিজাত বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বাড়ছে শীতার্ত মানুষের ভিড়।

(এসএস/এএস/জানুয়ারি ০৩, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test