E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রায়পুরে মাঠে নেই বিএনপি তবুও নাশকতা

২০১৫ জানুয়ারি ১৮ ২২:৫২:০৫
রায়পুরে মাঠে নেই বিএনপি তবুও নাশকতা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে অব্যাহত অবরোধ কর্মসূচি ও হরতালের ডাক আসলেও লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় বাস্তবতা ভিন্ন। মিছিল, সমাবেশ, পিকেটিং, অবরোধে অবস্থান নেই বললেই চলে পৌর শহরে বিএনপির।

উপজেলা যুবদল ও ছাত্রদলের শীর্ষ সারির অধিকাংশই নেতারাই মামলার আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন পুলিশের ভয়ে। তবে উপজেলা ও পোর বিএনপির কোন নেতারা মামলার আসামী নয় তারাও দলিয় কর্য্যক্রম থেকে অনেকটাই আত্মগোপনে। এমন কী টানা অবরোধে বিএনপির দলীয় কার্যালয়টিও খোলা হয়নি এখনও এবং কার্যালয়ের সামনেও দেখা যায় না কোন বিএনপির নেতাকর্মীদের। হরতাল ডেকে মাঠে না থাকায় বিএনপির অবস্থা নেই বললেই চলে।

তবে এদিকে যুবদলের উদ্যেগে দু’একটা মিছিল ও নাশকতা হয় মাত্র বাসটামিনাল এলাকায় টিএনটি সড়কে তাও আবার পুলিশের দাওয়া দৌড়ের ওপর তারাও। এছাড়া টানা অবরোধ ডাকা হলেও উপজেলার অলিগলি পাড়া-মহল্লাসহ আর কোন সড়কে নেই অবরোধকারীদের কোনো অবস্থান। মাঠে নেতাকর্মীরা দৃশ্যমান না থাকলেও একের পর এক ঘটছে নাশকতা বাস টামিনাল এলাকায়। আর বাস টামিনাল এলাকার টিএনটি সড়কের এই অতর্কিত পেট্রলবোমার হামলা, গাড়ী ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতিরসহ ক্রমেই আতংক বাড়ছে চারদিকে।

বাস মালিক সমিতির সভাপতিসহ একাধিক মালিক জানান, বাসের সামনে অবরোধকারীদের কোনো অবস্থান নেই এবং ছিল না। তবে চলার পথে টামিনাল এলাকার টিএনটি সড়কে একের পর এক হামলা বা ভাংচুরের ঘটনা ঘটছে। অবরোধের গত ১০দিনে ওই স্থানে ছোট বড় প্রায় ২০ থেকে ২৫টি গাড়ী ভাংচুর করা হয়েছে। এতে ওই স্থানে চালক ও যাত্রীদের মধ্যে আতংকের ছড়িয়েছে। এখনও শুধু ওই স্থানে নাশকতার আশংকা রয়েছে।
রায়পুর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতিসহ কয়েকজ শ্রমিক বলেন, রাস্তায় কোনো অবরোধ নেই বলেই আমাদের যানবাহন চলাচল করে। অবরোধ থাকলে যানাবাহন চলাচল করত না। বাস ষ্টেশনে কোনো অবরোধকারীকে দেখা যায় না অথচ হঠাৎ করে টিএনটি সড়কের রাস্তায় অতর্কিত গাড়িতে আগুন দিয়ে যানবাহন পুড়িয়ে দেয় এটা কোন ধরনের হরতাল-অবরোধ বুঝলাম না।

হরতাল অবরোধ ডেকে উপজেলার কোথাও বিএনপি মাঠে না থাকা এবং একের পর এক চোরাগোপ্তা, পেট্রলবোমা, অগ্নিসংযোগের ঘটনার ব্যাপারে বক্তব্য নিতে চাইলেও তা সম্ভব হয়নি উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কাছ থেকে।

তবে উপজেলা যুবদলের সভাপতি সফিকুল আলম আলমাস বলেন, বিএনপির কোন নেতাকর্মীরা অবরোধের মাঠে আসুক বা না আসুক যুবদল ও ছাত্রদল মাঠে থাকবে। গত ৫ জানুয়ারীর ঘটনায় যুব ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নামে দু’টি মামলা করা হয়েছে। তার পরেও তারা মাঠে আছে। অপরদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা মামলা না খেয়েও দলিয় কার্য্যক্রম থেকে দূরে সরে আছে তাদের আখের ঘুছাতে।

অপরদিকে, উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইসমাইল হোসেন খোকন বলেন, হরতাল-অবরোধের ডাক দিলেও মাঠে কেউ নেই। হঠাৎ দুএকজনকে কোথাও দেখা গেলেও তারা মিছিল সমাবেশ না করে নিরীহ মানুষের ওপর ককটেল বা যানবাহনে অতর্কিত পেট্রলবোমা মেরে পালায়। এটা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে নাশকতা ছাড়া আর কিছুই না।
রায়পুর থানার ওসি একেএম মনজুরুল হক আখন্দ বলেন, রায়পুরের রাস্তাঘাটে অবরোধ বা হরতাল আহ্বানকারীদের কাউকে দেখা যায়নি। দুএকদিন আগে কতিপয় দুষ্কৃতকারী নাশকতার চেষ্টা চালিয়েছিল। এখন উউপজেলা শান্ত। রাজপথে নেই কোনো হরতাল সমর্থক পিকেটার। যানবাহন চলাচল করছে, সতর্ক রয়েছে পুলিশ।

এদিকে, চলমান অবরোধ ও এরই মধ্যে ডাকা হরতাল চলাকালে রায়পুর উপজেলায় প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে নাশকতা ও বিচ্ছিন্ন ঘটনায়। এমন দাবি পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের। তাদের দাবি, রায়পুরে ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মাইক্রোবাসসহ অধ শতাধিক গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গত ১০ দিনে অবরোধের পাশাপাশি হরতালের সময়ে এসব ঘটনা ঘটে। সবচেয়ে আলোচিত নাশকতার ঘটনা ছিল গত ৮ জানুয়ারি রায়পুর ফিসহ্যাচারীর সামনে এক সাথে ৬টি ট্রাক ভাংচুর করেন। এসময় চালকসহ ১০জন আহত হয়েছে।

প্রসঙ্গত- গত ৫ জানুয়ারী গনতন্ত্র রক্ষা দিবস ও সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আ.লীগ বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় রায়পুর থানার উপপদির্শক সিরাজ মিয়া বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম উল্লেখ্য করে ২৫০ জনকে অজ্ঞাত যুব ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের আসামী করে দ্রুত বিচার ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করেন এবং ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক কামরুল হাসান রাছেল বাদি হয়ে হামলার ঘটনায় ৩৭ জনের নাম উল্লেখ্য করে ২০ থেকে ৩০ জনকে অজ্ঞাত যুব ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের আসামী করে থানায় আরেকটি মামলা করেন।

(এম আরএস/এসসি/জানুয়ারি১৮,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test