E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

মুজাহিদের ফাঁসির রায়ে ফরিদপুরে আনন্দ মিছিল 

২০১৫ জুন ১৬ ১৬:১৪:০৭
মুজাহিদের ফাঁসির রায়ে ফরিদপুরে আনন্দ মিছিল 

ফরিদপুর প্রতিনিধি : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ফরিদপুরের বাসিন্দা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এবং বিচারপতি হাসান ফয়েজ ছিদ্দিকী। আর এই ফাঁসির রায় ঘোষণা হওয়ার পর থেকে তার নিজ এলাকা ফরিদপুরের সাধারণ আমজনতা মিছিল নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে।

এর সাথে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। মিছিলটি আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মোহেশাম হোসেন বাবর, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক নাজমুল ইসলাম লেভী, শ্রমিকলীগের সভাপতি মোঃ আক্কাস হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহ্বায়ক শওকত আলী জাহিদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু নাঈম, কোতয়ালী থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম চৌধুরীসহ প্রমুখ। মিছিল-সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা মুজাহিদের কুশপুত্তলিকা দাহ করে। এছাড়া সপ্তম অভিযোগের স্থানটি ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার বাকচর গ্রামেও মিষ্টি বিতরণ এবং মিছিল করা হয়েছে।

এই স্থানে ১৯৭১সালের ১৩ই মে মুজাহিদের নির্দেশে রাজাকার বাহিনী হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করে। সেখানে বিরেন্দ্র সাহা, উপেন সাহা, জগবন্ধু মিস্ত্রি, সত্য রঞ্জন দাশ, নিরোদ বন্ধু মিত্র, প্রফুল্ল মিত্র, উপেন সাহাকে আটক করা হয়। পরে সেখানে আটককৃত ১১জনকে হত্যা ও গণকবর দেওয়া হয় শ্রী অঙ্গন আঙ্গিনার পাশে এবং সেই সব বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া রাজাকাররা বাকচরের সুনীল কুমার সাহার কন্যা ঝুমা রানীকে ধর্ষণ করে। অনিল সাহাকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করা হয়। সদর উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নের বাকচর গ্রামের সেই সময়ে বেচেঁ যাওয়া সুশীল কুমার সাহা জানান, আমি সেদিন অনেক কষ্টে বেচেঁ গিয়েছে পরে ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে চলে গিয়েছিলাম। এখন ভালো লাগছে আমরা বিচার পেয়েছি এখন দ্রুত এই রায় কার্যকর দেখতে চায় তাহলেই শান্তি পাব।

উল্লেখ্য, গত ২৭শে মে আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদের আপিলের শুনানি শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এস এম শাহজাহান। এখন পর্যন্ত মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলায় রায় ঘোষণা করেছেন আপিল বিভাগ। এর মধ্যে আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয় মুহাম্মদ কামারুজ্জামান এবং আবদুল কাদের মোল্লার। আমৃত্যু কারাদন্ডের রায় ভোগ করছেন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। মৃত্যুর কারণে আপিল পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় গোলাম আযম ও আবদুল আলিমের মামলায়।
২০১৩ সালের ১৭ই জুলাই মুজাহিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের রায় দেন ট্রাইব্যুনাল। একই বছর ১১ই আগস্ট ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন তিনি। গত ২৯শে এপ্রিল থেকে আপিলের শুনানি শুরু হয়। মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনা সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটির প্রমাণ পান ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে ১, ৩, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং ২ ও ৪ নম্বর অভিযোগ প্রসিকিউশন প্রমাণ করতে পারেনি। প্রমাণিত ১ নম্বর অভিযোগকে ৬-এর সঙ্গে সংযুক্ত করে এ দুটি অভিযোগে সমন্বিতভাবে ও ৭ নম্বর অভিযোগে মুজাহিদকে মৃত্যুদন্ড, ৫ নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন এবং ৩ নম্বর অভিযোগে ৫ বছরের কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়।
(এসডি/পিবি/জুন ১৬,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test