E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

১৭ জুন দেশব্যাপী বিক্ষোভ, ২১ জুন ঢাকায় সমাবেশ

২০১৪ জুন ০৯ ১৬:২২:১৯
১৭ জুন দেশব্যাপী বিক্ষোভ, ২১ জুন ঢাকায় সমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার : গুম-খুন-অপহরণ-বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড তথা জনজীবনে নিরাপত্তাহীনতা- আতঙ্ক, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জামাত-শিবির নিষিদ্ধের গণদাবিকে

অগ্রাহ্য করা, খাদ্য দ্রব্যে ভেজাল, লুটপাট, ব্যাংক ডাকাতি ও ধনিক তোষণের বাজেট প্রণয়নসহ জাতীয় ও জনজীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতায় আগামী ১৭ জুন দেশব্যাপী বিক্ষোভ এবং ২১ জুন ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে সমাবেশ ও বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

সোমবার মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে সকাল ১১টায় (২ মণি সিংহ সড়ক, পুরানা পল্টন, ঢাকা) অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান গুম-খুন-অপহরণ, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড জনমনে নিরাপত্তাহীনতা ও ভয়াবহ আতংক সৃষ্টি করেছে। নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, এডভোকেট চন্দন সরকারসহ সাত খুন, ফেনীতে উপজেলা চেয়ারম্যান একরাম হত্যা, নোয়াখালীতে সিপিবি নেতা মফিজুর রহমানকে জবাই করে হত্যাসহ সারাদেশে প্রতিনিয়ত আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এ সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

দ্রব্যমূল্যে লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে। রমজান শুরুর আগেই নিত্য পণ্যের দাম কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া খাদ্যসহ দুধ-মাছ-ফলে ফরমালিন, কার্বাইড এর ভেজাল মানুষকে নিরবে মৃত্যু ঝুঁকিতে ঠেলে দিচ্ছে। প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা নেই। ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তে হত্যা নিত্য দিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ভারতের সঙ্গে সীমান্তচুক্তি, তিস্তাসহ অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা এখনো আদায় হয়নি।

জাফর বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি স্বাধীনতা উত্তর দীর্ঘ চার দশক ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে দেশ পরিচালনার ফলেই আমাদের এ হাল দাঁড়িয়েছে। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার হিসেবে প্রণীত ’৭২ এর সংবিধান ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি সরকারই লংঙ্ঘন করে দেশ শাসন করে চলেছে। ফলে লুটপাট, সাম্রাজ্যবাদ নির্ভরতা স্বাধীন জাতির ললাটে কলঙ্ক তিলক হিসেবে বসে আছে।

অথচ যুদ্ধাপরাধীদের সংগঠন জামাত-শিবির আজও নিষিদ্ধ হয়নি। গণদাবির চাপে সরকার গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনে সমর্থন দিলেও এখন তা থেকে দূরে সরে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আপোষের পাঁয়তারা করছে।

প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘ধনিক তোষণের’ বাজেট আখ্যায়িত করে সিপিবি সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, আড়াই লক্ষ কোটি টাকার বাজেটে শিক্ষা-স্বাস্থ্য-কৃষিসহ সামাজিক ও সেবামূলক খাতে বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় আনুপাতিক হারে কমেছে। পক্ষান্তরে একদিকে কর্পোরেট ট্যাক্স কমিয়ে শিল্পপতি ব্যবসায়ী লুটেরাদের মুনাফার লালসা চরিতার্থ করা হয়েছে এবং অন্যদিকে সাধারণ মানুষের উপর ভ্যাটের বোঝা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। জ্বালানি খাতে জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বরাদ্দ নাই, সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী পোষাক শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়নি। বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া সম্পর্কে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়ে বিভ্রান্তি ও ধোঁয়াসা সৃষ্টি করা হয়েছে। ৭.৩% প্রবৃদ্ধির উচ্চাবিলাসের কথা বাজেটে বলা হলেও কিভাবে তা অর্জিত হবে তার দিক দিশা বাজেটে নেই। ফলে গতানুগতিক এবং ঋণ নির্ভর বিশাল আকারের ঘাটতি বাজেট পেশের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ আরো বাড়নো এবং লুটপাটের অর্থনীতিকে আরো উৎসাহিত করার পথ গ্রহণ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিবি-বাসদের নেতৃবৃন্দ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে ব্যর্থ এ সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী গণআন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য হায়দার আকবর খান রনো, শামছুজ্জামান সেলিম, সাজ্জাদ জহির চন্দন, আহসান হাবিব লাবলু, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ, রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।


(ওএস/এটিআর/জুন ০৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test