E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সংসার সুখের হয় কার গুণে?

২০১৪ আগস্ট ৩০ ১৫:১০:০৬
সংসার সুখের হয় কার গুণে?

নিউজ ডেস্ক : ‘সংসার সুখী হয় রমণীর গুণে।’ কিন্তু আজকের মেয়েরা কী এ কথা মানে? না, মানে না। মানার কথাও নয়। তাই পূর্বপুরুষের এই বাণীর বিরোধিতা করে পুরুষরাও আজ দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে শুরু করেছে। কারণ আধুনিক পৃথিবীর কোনো নারীকে এই বাণীর মাহাত্ম্য বোঝাতে গেলে, তিনি আপনাকে অনেক কথাই বুঝিয়ে ছাড়বেন।

আধুনিক নারীর এই বোঝানোটা যে বেঠিক তা কিন্তু নয়। কারণ সংসার শুধু নারীর গুণেই সুখী হতে পারে না। দুইজন মানুষকে নিয়ে এক ছাদের নিচে বসবাস করাকে যদি সংসার বলে, তবে একজনের ওপর কেন সুখ নির্ভর করবে?

সংসার জীবনে সুখ তখনই আসে যখন স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মধুর থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একে অপরকে বোঝা ও দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। যে দম্পতির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, তাদের কাছে অভাব কেবলমাত্র একটি সাধারণ ঘটনা। কাড়ি কাড়ি টাকা থাকলেও ঘরে সুখ না থাকলে বাইরে জ্বালা অনুভূত হবেই।

সংসারে কেন অশান্তি আসে? উত্তর পাওয়াটা অত সহজ কিছু নয়। কেননা শান্তি-অশান্তি শব্দ দুটি অনেক ভারী। এরা কী হলে আসে আর কী হলে যায়, তা মানুষের অবচেতন মনও জানে না। প্রশ্নটির উত্তর অনেকেই খোঁজার চেষ্টা করেছে। আজও এসব নিয়ে মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। তবে সাদা চোখে অশান্তির সবচেয়ে বড় কারণ যেটা মনে হয়, সেটা হলো একে অপরকে মনের সব কথা খুলে না বলার প্রবণতা। মনের সব কথা বললে আপনার সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়। তবে মানসিক শান্তি পাবেন এ কথা হলফ করে বলা যায়।

সংসারে সুখ ফিরিয়ে আনতে কিংবা সুখ টিকিয়ে রাখতে আপনাকে কিছু বিষয় মেনে চলতেই হবে। চলুন সেসব নিয়ে আলোচনা করা যাক।
সংসার সুখের হয় কার গুণে?

বিভিন্ন সময়েই আমরা কোনো খারাপ বা লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে পড়ি। কিন্তু এ ধরনের কথা সবাইকে বলা যায় না। কিন্তু এগুলো মনের মানুষের সঙ্গে খুব সহজেই শেয়ার করা যায়। একে অপরের সঙ্গে কোনো হাস্যকর ঘটনা বা লজ্জাজনক পরিস্থিতির ঘটনার কথা বললে মন অনেক হালকা হয় ও মানসিক চাপ দূর হয়। ফলে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক অনেক বেশি দৃঢ় হয়।

রান্নাবান্না, ঘরদোর পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে গোছানো, বাজার খরচ, বাগান পরিচর্যা, ঘরের যাবতীয় টুকিটাকি কাজকর্মকে অবহেলা করার সুযোগ নেই। স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই এ ধরনের কাজ ভাগাভাগি করে নিতে হবে। কারণ পারস্পরিক সহযোগিতার ওপরই নির্ভর করছে সংসারের সুখ।
সম্প্রতি নববিবাহিত ২২০ নারী-পুরুষকে নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন একদল গবেষক। তাদের বিশ্বাস, আচরণ ও বৈবাহিক যোগ্যতা নিয়ে একটি জরিপ করেছেন ওই গবেষকরা। তাঁদের মতে, সাংসারিক কাজকর্ম সমানভাবে ভাগাভাগি করে নেওয়া উচিত। স্বামী-স্ত্রী যখন বিষয়টি যথাযথভাবে উপলব্ধি করেন, তখনই সংসারে সর্বোচ্চ সুখ নিশ্চিত হয়। এ ব্যাপারে দুজনের মতৈক্য না হলে সুখ দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

গবেষকরা বলেন, সন্তানের আগমন শুরু হওয়ার পর থেকে ঘরোয়া কাজকর্ম নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর বিরোধ দেখা দিতে থাকে। তাই নববিবাহিত নারী-পুরুষকে বাস্তব জীবনে ঘরোয়া কাজকর্মের ব্যাপারে নিজেদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য সুচিন্তিত পরিকল্পনা নিতে হবে। বিয়ের প্রথম দুই বছরের মধ্যেই এসব বিষয় চূড়ান্ত করে নেওয়া ভালো।

হারানো সুখ ফিরিয়ে আনতে : চেষ্টা করলে ভেঙে যাওয়া মনকেও জোড়া লাগানো সম্ভব। অনেকে আছেন, যাদের স্ত্রী কিংবা স্বামীর সঙ্গে দীর্ঘদিন কোনো সম্পর্ক নেই অথচ আজ পড়ন্ত বিকেলে খুব ইচ্ছে হয় তার কাছে ফিরে যেতে। কিন্তু কীভাবে তার কাছে এসব কথা পৌঁছে দিবেন তা জানেন না।
এক্ষেত্রে নিজেকে আপনার সঙ্গীর জায়গায় কল্পনা করুন। তারপর চোখ বন্ধ করে ভাবুন, আপনি তার জায়গায় হলে কী ভাবতেন? তার কাছ থেকে কী আশা করতেন? দেখবেন আপনার অবচেতন মন কিছু বিষয় নিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলছে, সে তো এমন করলেও পারত, কেন এমন করেনি। কেন সেদিন আমাকে এসব বলল ইত্যাদি ইত্যাদি। একবার ভাবুন, সেও কিন্তু আপনার সম্পর্কে এমনটি ভাবছে। তাই আপনি তার কাছ থেকে যেমন ব্যবহার প্রত্যাশা করছেন, তা খাতায় লিখে ফেলুন। এরপর তার সঙ্গে এমন ব্যবহার করতে শুরু করুন। কে জানে হয়ত এই দাওয়াইয়ে ফিরে আসতে পারে আপনার সেই কাক্সিক্ষত সুখ। তবে আর দেরি কেন? চোখ বন্ধ করে নিজের মনের কাছে প্রশ্ন করুন এখনইÑমন তুই কি চাস!

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ৩০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test