E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শৈশব হোক প্রাণোচ্ছ্বল

২০১৫ নভেম্বর ০২ ১৬:১২:২৫
শৈশব হোক প্রাণোচ্ছ্বল

নিউজ ডেস্ক : বিশেষজ্ঞগণ বলেছেন, হার্টকে রোগমুক্ত রাখতে চাই সুস্থ শরীর, প্রফুল্ল মন। এই সচেতনতা ও শারীরিক শক্তি দরকার শৈশব থেকেই। আর শিশুর হার্ট ভালো রাখতে প্রয়োজন নিয়মিত খেলাধুলা ও শরীর চর্চা। এজন্য প্রতিটি স্কুলেই থাকা উচিত খেলার মাঠ।

শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্যে চাই পর্যাপ্ত মাঠ ও খেলাধুলার সামগ্রী। ঢাকা শহরে শুধুমাত্র পাবলিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে চোখে পড়েনা শিশু-কিশোর, এবং বয়স্কদের জন্য পর্যাপ্ত খেলার মাঠ ও খেলাধুলার সামগ্রী। ভবিষ্যতে যে উপশহরগুলো গড়ে উঠবে সেখানে খেলার মাঠের নিশ্চয়তা রাখতে হবে। আর বর্তমানে যেহেতু নতুন করে খেলার মাঠের জায়গা অবশিষ্ট নেই তাই প্রতি এলাকার সরকারি ও বেসরকারি স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের বর্তমানে যে মাঠ আছে সেখানে শুধুমাত্র সেই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্যে না রেখে একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত সকল ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত রাখার জন্য ভাবার সময় এসেছে।

সর্বশেষ ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ঢাকা নগরীর জনসংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখ। ২০০১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত লোক সংখ্যা বেড়েছে ৪৬ লাখ ২১ হাজার ৯’শ ৪১ জন। এক কোটির বেশি লোকের অধ্যুষিত এই ঢাকা শহর এখন অগণিত সমস্যায় ভারাক্রান্ত। ঘনবসতি, যানজট তারপর রয়েছে উচ্চমাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকি। যদি সত্যি সত্যি ৭ রেক্টর স্কেলের ভূমিকম্প হয় তাহলে ঘটবে এক বড় ধরনের বিপর্যয়। এ জন্য খালি জায়গায় নতুন করে বহুতল ভবন না তোলা সরকার ও ডেভেলপারের দায়িত্ব।


ঢাকার চারপাশে যদি এখনো পরিকল্পিত উপশহর তৈরি করা যায় তাহলে নিঃসন্দেহে ঢাকা শহরের ওপর জনসংখ্যার চাপ কমবে। ঢাকা নগরীর লাগামহীন সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করা এ লেখার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় নয়, মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল, সুস্বাস্থ্য ও সৃজনশীলতার জন্য চাই পর্যাপ্ত খেলার মাঠ।

শারীরিক-মানসিক দুই দিক থেকেই আপনার শিশু অস্বাভাবিক চাপের মুখে। এমনিভাবে রীতিমতো বিপদ, অবহেলা, উৎপাত মোকাবেলা করে বেড়ে উঠছে ‘আধুনিক' মা-বাবা'র শিশুরা। বেড়ে উঠছে স্বাভাবিক বিনোদনহীনতায়। কোন বাবা-মা'রই ভুলে যাবার কথা নয় তাদের শৈশব। নিশ্চয়ই ছিল খেলার মাঠ, খোলামেলা পথঘাট, ছিল তাই ছোটাছুটি, দৌঁড়ঝাঁপেরও সুযোগ। আর এখন শিশুর সেই অবারিত বিনোদন সুযোগ কোথায়? কম্পিউটার গেইম আর টেলিভিশন নামের বোকা বাক্সখানা শিশুর সেই দুরন্ত বিকাশের পথ রুদ্ধই করে দিচ্ছে বলতে হবে।

‘ভাল' স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা নামের বিভীষিকা উত্তীর্ণ করতে অস্থির। কে কতটুকু ধারণে সমর্থ, তা বিবেচনার বালাই নেই। নিজের শৈশবটাকে বেমালুম ভুলে শুধু বলা হচ্ছে, মুখস্ত কর, হোমওয়ার্ক তৈরি কর। একটু এদিক-ওদিক হলে চলছে কড়া শাসানি, চোখ রাঙ্গানি। একেতো নেই খেলার মাঠ, শিশুটি আপনমনে একটু হাঁটাচলা করবে ইট-কংক্রিটময় এই নগরজীবনে তেমন সুযোগই বা থাকছে কই? বেশিরভাগ ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট বাসিন্দারা নিজের স্কয়ার ফুটে গন্ডিবদ্ধ। কোথাও কোথাও বাড়ির উপরে ছাদ এবং নিচে খোলা প্যাসেজ চোখে পড়লেও সেখানে বাসিন্দাদের পায়চারি লক্ষ্য করা যায় না। জীবনযাত্রা এমনই যান্ত্রিক হয়ে গেছে বা সেরকম বানিয়ে নেয়া হয়েছে এবং বেশিরভাগ আধুনিক মানুষই এই সব অস্বাভাবিকতাকে বেশ মানিয়েও নিয়েছেন। আর মুরবিবরা যেখানে পাথর জীবনে অভ্যস্ত, সেখানে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কি উপায়? তাই মন চাইলেও অ্যাপার্টমেন্টের ছাদে যাওয়া চলে না, নিচের প্যাসেজে খেলা করা চলে না। আবদার করলে জোটে ঝাড়ি।

মনে রাখবেন, আপনার শিশু যদি যথাযথ নির্দেশনা না পায়, দরকার মতো যদি না পায় আপনার সঙ্গ-সান্নিধ্য, বেড়ে উঠতে থাকবে জটিল মানসিকতা নিয়ে, থমকে থমকে। বেছে নিতে পারে ভুল সঙ্গী আর ভুল পথ। সেই সাথে হতাশায় একটা পর্যায়ে হয়ে উঠতে পারে নেশাসক্ত।

মডেল : সিন্ধু ও অরিত্র

(ওএস/এএস/নভেম্বর ০২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test