E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সোনামনিদের ঈদ পোশাক

২০১৬ জুন ৩০ ১৫:৫৪:৫৪
সোনামনিদের ঈদ পোশাক

সায়মা হোসেন : ঈদ আসছে। সঙ্গে আনছে খুশির জোয়ার। এ খুশি শিশুদেরই বেশি থাকে। ঈদের পোশাক ঘিরে তাদের যত জল্পনা-কল্পনা। বড়দের পোশাক কেনা হোক বা না হোক, ছোটদের পোশাক কেনা চাই। অভিভাবকও সবচেয়ে আকর্ষণীয় সুন্দর পোশাকটি কিনে দিতে চান সন্তানকে। বাজার ঘুরে দেখা গেল, বিভিন্ন রঙ ও নকশায় অলঙ্কৃত করা হয়েছে শিশুদের পোশাক। দেশীয় ঐতিহ্যবাহী কাপড় শিশুদের পোশাকে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

দেশের পোশাক প্রতিষ্ঠাগুলোর পাশাপাশি শপিং মলগুলো তাই শিশুদের জন্য আলাদা পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসে। দেশীয় পোশাকের প্রতিষ্ঠানগুলো এবারের ঈদে শিশুদের পোশাকের জন্য ঋতুটাও বিবেচনা করেছে।

বৃষ্টির মৌসুমে ঈদ হলেও গরমটাও কম নয়। তাই রঙের খেলা, নকশা আর জমকালো ভাবের পাশাপাশি পোশাকগুলো গরমের উপযোগী করেই তৈরি করা হয়েছে। রয়েছে সুতি, তাঁত, মসলিন, খাদির প্রাধান্য। আজকাল বড়দের পোশাকের মতো বাচ্চাদের পোশাকেও বিভিন্ন মাধ্যমে নকশা করা হচ্ছে।

সাধারণভাবেই বাচ্চাদের পছন্দ উজ্জ্বল রঙ। এবার উৎসবনির্ভর পোশাকে রঙ দিয়ে কল্পনার বাহার ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এ ছাড়াও একক রঙও প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। যেমন লালের ওপর সাদা সুতার কাজ, সাদার ওপর সাদা সুতার কাজ ইত্যাদি। হালকা ও গাঢ় রঙের সুতা ব্যবহার করে নকশা করা হয়েছে। সবকিছুর সঙ্গেই উজ্জ্বল রঙের ট্রেন্ড বা ধারা বজায় রয়েছে। কেননা ছোটরা সাধারণত উজ্জ্বল যে কোনো রঙেই আকৃষ্ট হয়।

পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের নকশা। বস্নক, স্প্রে, টাইডাই, স্ক্রিনপ্রিন্ট এগুলো মিডিয়া হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে এপলিক, অ্যামব্রয়ডারি, কারচুপি, আড়ি, লেস, কাতান ও হাতের ভরাট কাজ।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, উজ্জ্বল রঙ ব্যবহার করা হয়েছে বাচ্চাদের পোশাকগুলোয়। সবুজ, ফিরোজা, নীল এবং এর সঙ্গে রয়েছে কিছু মেরুন রঙ।

বাচ্চাদের পোশাকের কাপড়গুলো একটু নরম হওয়া দরকার, যাতে তারা পরে আরাম পায়। বাচ্চাদের পোশাক তৈরিতে বেছে নেয়া হয়েছে টাঙ্গাইল, রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, সিরাজগঞ্জ, মিরপুর ও কুমিল্লার তাঁতের কাপড়। বুননেও আনা হয়েছে নতুনত্ব।

মেয়েদের আনারকলি, একটু ঘের দেয়া লম্বা কামিজ যেমন চলবে, তেমনি ছেলেশিশুদের পাঞ্জাবিতে এ লাইন কাটের ব্যবহার বেশি এবার। আর শিশুরা সারা দিন জমকালো পোশাক পরে থাকতে পারে না। সে জন্য সুতি, ডেনিম বা জিনসের প্যান্ট, খাটো হাতার শার্ট, ফতুয়া, টপস অনায়াসে পরতে পারে।

নবজাতক থেকে শুরু করে ১২ বছর পর্যন্ত শিশুদের পোশাকও এনেছে ফ্যাশন হাউসগুলো। মেয়েশিশুদের জন্য পার্টি ফ্রক, ঘাগড়া চোলি, টিউনিক ক্যাপ্রি ও লেগিংস। পাশাপাশি সালোয়ার-কামিজও। কাতান, টিস্যু, মসলিন ও সার্টিনের ব্যবহার ভালো লাগবে পার্টি পোশাকে। এ ছাড়া সুতির কাপড় তো রয়েছেই। আর এ লাইন কাটের চল থাকবে এবার। নকশায় প্রাধান্য পাবে কারচুপি, অ্যামব্রয়ডারিসহ হাতের কাজ।

ঈদ হবে খানিকটা গরমেই। তাই এ সময় দরকার আরামদায়ক পোশাক। গরমকে বিবেচনা করে হাতাসহ ও হাতা কাটা দুই ধরনের পোশাকই থাকছে। ছেলেমেয়ে উভয়ের জন্য থাকবে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট। দাওয়াতে যাওয়ার সময় বেছে নিতে পারেন জমকালো সিল্ক, অ্যান্ডির পাঞ্জাবি।

বিক্রেতারা জানান শিশুদের এবারের ঈদ ফ্যাশন সম্পর্কে। ওভেন ফেব্রিকস, স্ট্রাইপ ফেব্রিকস, সুতি, ডেনিম কাপড়ের চল বেশি থাকবে। হাতার ডিজাইনে দেখা যাবে বৈচিত্র্য। রঙের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে নীল, সবুজ, সাদা ও হলুদকে। সুতির কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ছেলেদের শার্ট। বড় ও ছোট দুই ধরনের হাতাই ব্যবহার করা হয়েছে শার্টগুলোয়।

দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো সাজানো হয়েছে শিশুদের রঙ বেরঙের পোশাক দিয়ে। ঈদ সামনে রেখে ফ্যাশন হাউসগুলো মেয়েশিশুদের জন্য এনেছে ফ্রিল দেয়া পার্টি ফ্রক, হাতের জমকালো কাজ করা সালোয়ার-কামিজ, ঘাঘড়া চোলি। সালোয়ার ও প্যান্টের কাজে নকশা এবং কাটে দেখা গেছে বৈচিত্র্য। ছেলেশিশুদের পাঞ্জাবিতে কাপড় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যান্ডি, সিল্ক, মসলিন ও খাদি। উৎসবের আমেজ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন রকম হাতের কাজ দিয়ে। যাত্রায় শিশুদের পোশাকের কাটিংয়ে নান্দনিক নকশা করা হয়েছে। এখানে অ্যান্ডি, সুতির কাপড় প্রাধান্য পেয়েছে।

এ ছাড়া ভিন্নতা আনতে মেয়েদের পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে বেল্ট আর ছেলেদের পোশাকের মধ্যে আছে ফতুয়া, শার্ট ও পাঞ্জাবি। দেশীয় প্রায় প্রতিটি তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান এবারের ঈদের জন্য শিশুদের পোশাক এনেছে। ২ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের সব ধরনের পোশাকই থাকছে। এগুলোর মধ্যে আছে মেয়ে-বাচ্চাদের সালোয়ার-কামিজ, ফ্রক ও ফ্রক কাটিং শার্ট-প্যান্ট, কুর্তি ও ফতুয়া। ছেলে-বাচ্চাদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট। এমনকি রয়েছে মেয়ে-বাচ্চাদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি শাড়িও।

এসব প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় কেন্দ্রগুলোর শিশুদের বিভাগের দিকে তাকালেই চোখে পড়বে পোশাকগুলো। বাংলার মেলা, নগরদোলা, অন্যমেলা, কে-ক্র্যাফট, অঞ্জনস, চরকা, তহু'স ক্রিয়েশন, এড্রয়েট, আড়ং, গ্রামীণ পোশাক, দেশাল, বাসন্তি, লীলাবালি, ফড়িং, আবর্তন, এবি ফ্যাশন মেকার, উত্তরাঙ্গন বুটিক, বার্ডস আই, নিখুঁত বাংলাদেশ, নিত্য উপহার, কিডস কালেকশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় কেন্দ্রে শিশুর পোশাক পাওয়া যাবে।

এ ছাড়া রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেট, গাউছিয়া, নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, গুলিস্তান, মিরপুর সুপার মার্কেট, উত্তরা মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটেও পাওয়া যাবে শিশুর পোশাক।

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test