E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বয়স হার মানুক প্রকৃতির কাছে

২০১৭ সেপ্টেম্বর ০৭ ১৫:১২:০৪
বয়স হার মানুক প্রকৃতির কাছে

লাইফস্টাইল ডেস্ক : মানুষের বয়স কোনও দিন থেমে থাকে না। তেমনি থেমে থাকে না বয়সের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন ত্বকের সমস্যাও। বয়স যত বাড়তে থাকে, ততই আমাদের ত্বক এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় পরিণত হতে থাকে। তাই তো ১৮ বছর বয়সে ত্বকের যত্ন এবং ২৫ বছর বয়সের ত্বকের যত্ন কখনোই এক হয় না। আবার ত্বকে বার্ধক্যের প্রথম হাতেখড়ি হয় ৩০ বছর বয়সে পা দিলেই। তাই বয়ঃসন্ধিকালে ব্রণ সারানোর পদ্ধতি কখনোই বয়সের বলিরেখা সারানোর পদ্ধতি হতে পারে না। তবে বয়স অনুযায়ী ত্বকের সমস্যা দূর করতে গেলে যে শুধুই কেমিক্যালে ঠাসা দামী ক্রিম ব্যবহার করতে হবে, তাও কিন্তু নয়। যে কোনও বয়সের যে কোনও সমস্যা দূর করতে ঘরোয়া পদ্ধতিই যথেষ্ট।

তাহলে আর অপেক্ষা কেন, চলুন দেখে নেওয়া যাক ত্বকের যত্নে, কোন বয়সে কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিকে কাজে লাগানো যেতে পারে।

১৮-২০ বছর:

এই বয়সে সাধারণত অ্যাকনে বা ব্রণের সমস্যা হয়ে থাকে। আসলে এই সময় শরীরে হরমোনের উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন ঘটে। আর তাই ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু কিভাবে এই অ্যাকনে বা ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়? এক্ষেত্রে ত্বকের যত্নে গ্রিন টি একটি অত্যন্ত উপকারী উপাদান। গ্রিন টি-এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেণ্ট উপস্থিত থাকায় এটি ব্রণের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও ত্বকে তেল জমতে বাধা দেয়। এমনকি ব্রণ সেরে যাওয়ার পর সেই জায়গায় কোনও রকম দাগ থাকলে তাও দূর করে দেয় গ্রিন টি।

এখন প্রশ্ন হল, কিভাবে ব্যবহার করবেন গ্রিন টি?

উপাদান:
১ গ্রিন টি ব্যাগ
১ কাপ গরম জল

পদ্ধতি :
১। গ্রিন টির ব্যাগ এক কাপ গরম জলে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে।
২। এরপর গ্রিন টির ব্যাগ কাপ থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে এবং ঠাণ্ডা করতে হবে জলটা।
৩। এবার তুলোর মাধ্যমে মুখে লাগাতে হবে এটি।
৪। এই মিশ্রণটি মুখে স্প্রেও করতে পারেন।

২০-২৫ বছর বয়স

এই বয়সে আমরা সবাই কম বেশী চাকরি করতে শুরু করি। তার ফলে, বাস, ট্রেনে যাতায়াত করতেই হয়। জীবনে অনেক রকম পরিবর্তন আসে। আর তার প্রভাব পড়তে শুরু করে আমাদের ত্বকের ওপর। এই সময় ব্রণের সমস্যা মাঝে মাঝে দেখা যায়। একই সঙ্গে দেখা যায় কালো ছোপ। ব্ল্যাকহেডের মতো নতুন সমস্যাও এই বয়সে দেখা যায়। আর এসবের মূলেই রয়েছে রোদে বেরনো। তবে এই ধরণের সমস্যাও খুব সহজে ঘরে বসেই সমাধান করা যায়। লেবু, মধু, হলুদ দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক: লেবুর মধ্যে থাকে ভিটামিন সি, যা আপনার ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। আর মধু ত্বকে প্রাকৃতিক ব্লিচের কাজ করে এবং হলুদ, ত্বককে জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে।

উপাদান:
১ টি লেবু ২ চামচ হলুদ গুঁড়ো
১ টেবিল চামচ মধু

পদ্ধতি:
১। সব উপাদান একসঙ্গে একটি বাটিতে মিশিয়ে পেস্ট বানাতে হবে।
২। এবার মুখে এটি মেখে ১৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন।
৩। সময় হয়ে গেলে ঠাণ্ডা জ্বলে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে অন্তত তিনবার এটি ব্যবহার করতেই হবে।
সপ্তাহে অন্তত তিনবার এটি ব্যবহার করতেই হবে।

সুনের রহস্য জানা আছে? জামরুল খান নাকি? রুই মাছ খান তো? ২০-২৫ বছর বয়সে আমাদের ত্বকে অনেক রকম পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন, এই সময় ধীরে ধীরে বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে। বিশেষত চোখের পাশে কালো ছোপ পড়তে দেখা যায়। এইসব ক্ষেত্রেও ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন করলে খুব ভাল ফল পাওয়া যায়। অলিভ ওয়েল এবং ডিমের সাদা অংশ অলিভ ওয়েলে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা ত্বককে কুঁচকে যেতে দেয় না। অন্যদিকে ডিমের সাদা অংশ ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে।

উপাদান:
অলিভ তেল- ১ টেবিল চামচ
একটি ডিমের সাদা অংশ

পদ্ধতি:
১। একটি বাটিতে ডিমের সাদা অংশ এবং অলিভ তেল ভালো করে মেশাতে হবে।
২। এবার মিশ্রণটি মুখে মেখে নিন।
৩। ১৫ মিনিট রেখে মুখ ধুয়ে নিন।
৪। সপ্তাহে দুইবার এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

৩০ এর কোঠায় ত্বকের যত্ন
তিরিশের গণ্ডিতে পৌঁছালেই আমাদের ত্বকে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এই সময় প্রতিদিন ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু যত্ন নিতে হয়। যাতে ত্বক থেকে মৃত কোষ দূর হয়ে যেতে পারে এবং ত্বক ভালো থাকে। এছাড়াও ক্রিমের মাধ্যমে ত্বককে সব সময় আদ্র রাখাটাও খুব দরকার। এর ফলে সহজে ত্বকে বলিরেখা দেখা যাবে না। আর যদি ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন তাহলে তো ত্বক থাকবে একেবারে তরতাজা এবং প্রাণোচ্ছ্বল। এই বয়সের ত্বকের সমস্যাগুলির জন্য মধু, ব্রাউন সুগার এবং জাম ব্যবহার করা সবথেকে ভাল। কারণ এগুলির ব্যবহারে ত্বক নতুন জীবন লাভ করে।

মধু, ব্রাউন সুগার এবং জাম:
উপাদান:
১/২ কাপ তাজা জাম
২ টেবিল চামচ মধু
২ টেবিল চামচ ব্রাউন সুগার

পদ্ধতি:
১. সব উপাদান একসঙ্গে ব্লেন্ডারে দিয়ে বেঁটে নিতে হবে।
২. মিশ্রণটি মুখে মেখে ১০ মিনিটের জন্য রাখতে হবে।
৩. এরপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি সপ্তাহে একদিন করে করতে হবে।

৪০-এ ত্বকের দেখাশোনা

৪০ বছর বয়সে আমাদের ত্বকে বার্ধক্য একেবারে চেপে বসে। ফলে ত্বক কুঁচকে যাওয়ার সমস্যা আরও বেড়ে যায়। উল্টে ত্বকে কোলাজেনের উৎপাদন কমে যায় অনেকটাই। তাই তো ত্বক শুষ্ক এবং বলিরেখায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই কারণেই এই সময় ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হয়। যাতে প্রয়োজনীয় কোলাজেন তৈরি হতে পারে। তবে এই সময় ত্বকের যত্ন করাটাও খুব জরুরি। অ্যালোভেরা এবং কাঠ বাদাম হল এমন দুটি উপাদান, যা ত্বককে সুস্থ রাখতে এবং বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে।

অ্যালোভেরা এবং কাঠ বাদাম প্যাক

কাঠ বাদামে প্রচুর পরিমাণে তেল মজুত থাকার ফলে ত্বকে বয়সের চাপ সহজে পড়ে না। আর অ্যালোভেরা ত্বকের বলিরেখা কমিয়ে ত্বককে আরও নরম এবং মজবুত করে তোলে।

উপাদান:
৪-৫ টি কাঠ বাদাম সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে হবে।
অ্যালোভেরার ১ টি তাজা পাতা

পদ্ধতি:
১। কাঠবাদামগুলো ভাল করে বেঁটে নিন।
২। এবার অ্যালোভেরা পাতাটা কেটে ভিতর থেকে জেলটা বার করে নিতে হবে
৩। অ্যালোভেরা জেল এবং কাঠ বাদাম মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে।
৪। এবার পেস্টটা মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে ২০ মিনিট।
৫। সময় হয়ে গেলে ঠাণ্ডা জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে নিতে হবে।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test