E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চিকিৎসক ছাড়াই চলছে কেন্দুয়ার ১৩ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্বাস্থ্য প্রশাসকের গড় হাজিরা

২০১৯ জানুয়ারি ১৬ ২২:৩৫:২৬
চিকিৎসক ছাড়াই চলছে কেন্দুয়ার ১৩ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্বাস্থ্য প্রশাসকের গড় হাজিরা

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীনাত সাবাহ্র কর্মস্থলে গড় হাজিরার কারণে স্বাস্থ্য বিভাগের বেহাল দশা বিরাজ করছে। প্রতিকার মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দিন দিনই বাড়ছে জনগণের ভোগান্তি।

এদিকে চিকিৎসক ছাড়াই এম.এল এস.এস ও সহকারীরা কোন ভাবে চালাচ্ছে তেরটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র। এর মধ্যে দলপা ইউনিয়নের বেখৈরহাটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ রয়েছে। কেন্দুয়া উপজেলা ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২২ জন মেডিকেল অফিসার এবং ১৩টি ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১৩ জন মেডিকেল অফিসার জনগণকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীনাত সাবাহ্ আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রজত কান্তি সরকার সহ আছেন মাত্র দুই জন।

সান্দিকোনা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুজ্জামান ও বালাইশিমুল উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. আলী মো: হোসাইনকে বিশেষ ব্যবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তেরটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নয়টিতেই মেডিকেল অফিসার নেই। নওপাড়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের শিক্ষানবিশ মেডিকেল অফিসার ডা. জুবায়ের হোসেন আছেন প্রশিক্ষনে এবং চিরাং উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. জিনাত ইশীতা আনসারি মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন।

সান্দিকোনা, বলাইশিমুল, চিরাং ও নওপাড়ায় উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যে চারজন মেডিকেল অফিসার আছেন তাদের মধ্যে দুইজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন প্রশিক্ষনে এবং মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। এর ফলে এই তের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসারের পরিবর্তে অফিস সহায়ক ও সহকারীরা মেডিকেল অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন। এতে অনেক সময় ভুল চিকিৎসায় জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে।

কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: নূরুল ইসলাম ও দলপা ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান খান পাঠান বলেন, বেখৈরহাটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকলেও কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই। এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মতোই অন্য উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও রোগিরা কোন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা।

ভূক্তভোগী জনগণের অভিযোগ ,স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীনাত সাবাহ্ কর্মস্থলে যোগদানের পর থেকেই কর্তব্য পালনে চরম অবহেলা করছেন। তার স্বামী চিকিৎসক হিসেবে ঢাকায় কর্মরত থাকার সুবাদে তিনিও ঢাকায় অবস্থান করেন। মাসে চার থেকে পাঁচ দিন তিনি কর্মস্থলে থাকেন। গত ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কর্মস্থলে যোগদানের পর থেকেই গড় হাজিরার মাধ্যমে পার করছেন সময়। ফলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকান্ড কান্ডারী বিহীন তরীর মতোই চলছে। সরকার স্বাস্থ্য সেবায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিলেও কেন্দুয়া স্বাস্থ্য বিভাগ এর ব্যতিক্রম নিয়মে চলছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীনাত সাবাহ্ দীর্ঘদিন ধরে কর্তব্য পালনে চরম অবহেলা প্রদর্শন করে আসলেও কর্তৃপক্ষীয় ভাবে কোন শাস্তি বা প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছেনা।

এ ব্যপারে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীনাত সাবাহ্র সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে নেত্রকোনা সিভিল সার্জন ডা. তাজুল ইসলাম খানের সঙ্গে বুধবার মোবাইল ফোনে স্বাস্থ্য বিভাগের বেহাল দশা ও স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীনাত সাবাহ্র কর্মস্থলে গড় হাজিরার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডা. জীনাত সাবাহ্ কর্মস্থলে নিয়মিত আসেন না একথা ঠিক। আমি তাকে লিখিত ও মৌখিক ভাবে বার বার সতর্ক করছি, তবে তেমন কোন পরিবর্তন আসছে না। তা ছাড়া তিনি নিজেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কাছে গিয়ে তাকে অন্যত্র বদলি করতে বলেছেন। কিন্তু তাকে বদলি করা হচ্ছেনা। ভালো ভাবে দায়িত্ব পালন করবনে এমন কোন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাও পাওয়া যাচ্ছে না। পেলেও আসতে চাচ্ছেননা। আমরা চেষ্টা করছি দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তা পেলেই ডা. জীনাত সাবাহ্কে অনত্র বদলি হতে বলব। আমিতো আর বদলি করতে পারিনা, আপনারা এলাকার এম.পি মহোদয়কে বলে এর ব্যবস্থা নিতে বলুন।

(এসবি/এসপি/জানুয়ারি ১৬, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test