E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাঙ্গাইলে কিশোর গ্যাংয়ের নির্যাতনের শিকার নারী ও চার কিশোর

২০২০ নভেম্বর ০৬ ১৮:৪০:৫০
টাঙ্গাইলে কিশোর গ্যাংয়ের নির্যাতনের শিকার নারী ও চার কিশোর

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়নের চৌধুরী মালঞ্চ এলাকায় গড়ে ওঠা কিশোর গ্যাংয়ের নির্যাতন বেড়ে চলেছে। এক সপ্তায় ওই গ্যাংয়ের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন চার কিশোর। তারা হচ্ছেন- নন্দবালা গ্রামের গৃহবধূ খোদেজা বেওয়া(৪৮), স্কুল ছাত্র মো. নিত্যয়(১৭), রায়হান(১৬), দক্ষিণ চৌধুরী মালঞ্চ গ্রামের আজিজুল(১৮) ও বাহির শিমুল গ্রামের মঞ্জুরুল আলম(২০)। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মগড়া ইউনিয়নের চৌধুরী মালঞ্চ গ্রামের অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয় শাহজাহান মিয়ার ছেলে মাহফুজের(১৮) নেতৃত্বে ওই এলাকায় গড়ে ওঠেছে একটি কিশোর গ্যাং। ওই গ্যাংয়ের অন্য সদস্যদের মধ্যে একই গ্রামের মো. ছানোয়ার হোসেনের ছেলে জুবায়ের(১৮), মজিবর রহমানের ছেলে ইমন(১৯), আবু তালেবের ছেলে আলী হোসেন(১৮) ও মো. তুলা মিয়ার ছেলে জাহিদুর রহমান(১৮) অন্যতম। তারা দলবেঁধে মাদকদ্রব্য গ্রহন করে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে থাকে। ছাত্রদের র‌্যাগিং করা, মেয়েদের উত্ত্যক্ত ও নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে কেউ বাঁধা দিতে গেলে মারপিট করা তাদের নিত্যদিনের কাজ। তাদের বেপরোয়া চলাফেরার কারণে স্কুলের শিক্ষকরা সম্মানের ভয়ে কিছু বলতে পারেন না।

সরেজমিনে স্থানীয়রা জানায়, ওই কিশোর গ্যাংয়ের সর্বশেষ শিকার নন্দবালা গ্রামের সরকারি চাকুরিজীবী রফিকুল ইসলামের ছেলে অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র মো. নিত্যয়। বৃহস্পতিবার(৫ নভেম্বর) সকালে সরকারি রাস্তায় যাত্রী নামানো নিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক রায়হানের সাথে কিশোর গ্যাংয়ের নেতা মাহফুজের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা রায়হানকে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় বাঁধা দেওয়ার জের ধরে বৃহস্পতিবার বিকালে মো. নিত্যয়কেও পিটিয়ে আহত করে। এ সময় স্থানীয় মৃত মফিজ উদ্দিনের স্ত্রী খোদেজা বেওয়াকেও মারপিট করা হয়।

এরআগে এক স্কুল ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদের জের ধরে গত মঙ্গলবার(৩ নভেম্বর) দক্ষিণ চৌধুরী মালঞ্চ গ্রামের মোতালেবের ছেলে মো. আজিজুলকে মারপিট করে। প্রকাশ্যে মাদকদ্রব্য সেবনের প্রতিবাদ করায় গত ৩১ অক্টোবর (শনিবার) বাহির শিমুল গ্রামের মঞ্জুরুল আলমকে পিটিয়ে আহত করে।

স্থানীয় মাতব্বর জুয়েল রানা, মো. ইব্রাহিম মিয়া, মো. নাছির উদ্দিন, জালাল উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান সহ অনেকেই জানান- মালঞ্চ, দক্ষিণ চৌধুরী মালঞ্চ, মীরপুর, নন্দবালা, ঘোষের গাগরাজান, বাহির শিমুল, ভিতর শিমুল গ্রামগুলোর লোকজনের যাতায়াতের একমাত্র সরকারি রাস্তাটি চৌধুরী মালঞ্চ গ্রাম দিয়ে জেলা শহরের মূল রাস্তায় মিশেছে। এতদাঞ্চলের একমাত্র উচ্চ বিদ্যালয়টিও চৌধুরী মালঞ্চ গ্রামে অবস্থিত। ফলে চৌধুরী মালঞ্চ গ্রামে গড়ে ওঠা কিশোর গ্যাংয়ের নানা অত্যাচার-নির্যাতন অনেকেই মুখবুঝে সহ্য করতে বাধ্য হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মজনু মিয়া জানান, কোন ঘটনা-দুর্ঘটনার বিষয়ে কেউ বিচার প্রার্থনা না করলে তাদের তেমন কিছু করার থাকেনা। কেউ অভিযোগ করলে তারা ইউনিয়ন পরিষদ বা স্থানীয় মাতব্বরদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন।

টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, স্কুলছাত্র মো. নিত্যয়কে মারপিটের ঘটনায় তার বাবা রফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(আরকেপি/এসপি/নভেম্বর ০৬, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test