E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঘুষ না দেওয়ায় ভারতীয় বানিয়ে জেলে প্রেরণ 

কালীগঞ্জের সেই দারোগা জিয়ারত হোসেন স্ট্যান্ড রিলিজ

২০২১ এপ্রিল ২৪ ১৫:০৮:২৮
কালীগঞ্জের সেই দারোগা জিয়ারত হোসেন স্ট্যান্ড রিলিজ

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : দাবিকৃত ঘুষের টাকা না পেয়ে ভারতীয় বানিয়ে এক বাংলাদেশীকে জেল হাজতে পাঠানো কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জিয়ারত হোসেনকে স্টাণ্ড রিলিজ করা হয়েছে। শনিবার তিনি নতুন কর্মস্থল পাটকেলঘাটা থানায় যোগদান করেছেন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১৬ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে দু’টি মোটর সাইকেলে উপপরিদর্শক জিয়ারত হোসেনসহ কয়েকজন সাদা পোশাকের পুলিশ কালীগঞ্জ উপজেলার ডেমরাইল গ্রামের মনোরঞ্জন মণ্ডলের বাড়িতে এসে প্রথমে তক্ষক সাপ বিক্রি, পরে গাজা ও পরে জুয়া খেলার মিথ্যা অভিযোগ এনে মনোরঞ্জন ও তার ছেলে সরোজিতের হাতে হাতকড়া পরান। এ সময় তাদের ঘরে ঢুকে এসবেস্টার্স এর চাল ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুর করা হয় আসবাবপত্র। কালিমন্দিরের ভিতরে জুতো পরে ঢুকে জিনিসপত্র তছনছ করা হয়। খবর পেয়ে মনোরঞ্জনের শ্যালক ইউপি সদস্য প্রশান্ত হালদার মোটর সাইকেলে তাদের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করলে তাকেও মাদক দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন জিয়ারত হোসেন। স্থানীয় লোকজনও পুলিশের হুমকিতে তাদের বাড়িতে আসতে পারেনি।

সরোজিতের কোমরে পুলিশ গাজার পুরিয়া দিতে মাদক ব্যবসায়ি বানানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে প্রশান্ত মেম্বরের সঙ্গে থাকা দেবেন মণ্ডল ও সুভাষ মণ্ডলকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে এসে তাদের হাতকড়া পরিয়ে মনোরঞ্জনের বাড়িতে রাখা হয়। বেড়াতে আসা মনোরঞ্জনের বড় ছেলে স্বপন মণ্ডলের ভায়রাভাই শ্যামনগরের কাঁচড়াহাটি গ্রামের কমলেশ মণ্ডলকে ঘর থেকে বের করে নানা প্রশ্নবানে জর্জরিত করে পুলিশ। একপর্যায়ে মনোরঞ্জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। চারজনকে ছেড়ে দিতে মেম্বর প্রশান্ত হালদারের কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন উপপরিদর্শক জিয়ারত হোসেন। টাকা দিতে রাজী না হওয়ায় মেম্বরের মোটর সাইকেলসহ জিয়ারত আলী সরোজিত, কমলেশ, দেবেন ও সুভাষকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

পরদিন সকালে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রশান্ত মেম্বরের মোটর সাইকেলসহ তিনজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মামলা দেওয়ার আগে হরিদাস মণ্ডলসহ কয়েকজন কমলেশের স্মার্ট কার্ড নিয়ে পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান ও উপপরিদর্শক জিয়ারত আলীকে দেখালেও ২০ হাজার টাকা দিতে না পারায় কমলেশকে ভারতীয় নাগরিক বানিয়ে শনিবার মামলা দিয়ে জেলে পাঠায় পুলিশ। পরে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কমলেশকে দুর্বল ধারায় চার্জশীট দেবেন বলে জানান মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জিয়ারত হোসেন। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দৈনিক বাংলা ৭১, উত্তরাধিকার৭১ নিউজ,প্রজন্মের ভাবনা, দৈনিক পত্রদূত ও দৈনিক কালের চিত্রসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

প্রকাশিত সংবাদ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে ২১ এপ্রিল পত্রদূত পত্রিকায় প্রতিবেদকের বক্তব্য ছাড়াই পুলিশের পাঠানো এক প্রতবিাদ ছাপানো হয়। গত বৃহষ্পতিবার কমলেশ বিচারিক হাকিম আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। যদিও তদন্তে নেমে গোয়ন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের সত্যতা পান। তারই আলোকে জিয়ারত হোসেনকে শুক্রবার ষ্টাণ্ড রিলিজ করা হয়।

জানতে চাইলে শনিবার সকালে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দোলোয়ার হুসেন, স্টাণ্ড রিলিজ নয়, জিয়ারত হোসেনকে স্বাভাবিক বদলী করা হয়েছে।

(আরকে/এসপি/এপ্রিল ২৪, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test