E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বোয়ালমারীতে জোড়া খুনের মামলার বাদীর বিরুদ্ধে নিহতের স্ত্রীর হত্যা মামলা দায়ের

২০২৩ অক্টোবর ১৯ ১৭:৪৫:৩৫
বোয়ালমারীতে জোড়া খুনের মামলার বাদীর বিরুদ্ধে নিহতের স্ত্রীর হত্যা মামলা দায়ের

কাজী হাসান ফিরোজ, বোয়ালমারী : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক বছর আগে সংঘটিত জোড়া খুনের ঘটনার দায়েরকৃত মামলার বাদির বিরুদ্ধেই বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছেন জনৈক নিহতের স্ত্রী। নিহত মো. খায়রুল ইসলামের স্ত্রী মোসা. নাসিমা বেগম বাদি হয়ে আগের মামলার বাদি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা জামান সিদ্দিকি (৫৮) ও ঘোষপুর ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মোঃ জামাল মেম্বারসহ ১৫ জনকে আসামী করে গত ১৫ অক্টোবর এ মামলা দায়ের করেন। এর আগে ২০২২ সালের ৭ মে দায়েরকৃত মামলার বাদি ছিলেন মোস্তফা জামান সিদ্দিকি। এক আদেশ বলে আদালত ওই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন।

মামলার অপর আসামীরা হলেন, মামুন (৪৫), হাসানুর (৩৬), মাজেদ ফকির (৫৫), মো. জাফর সেক (৪৭), গফফার সেক (৪৫), নাছির সেক (৩৮), নাজির সেক (২৮), বিল্লাল (৪৪), হিল্লাল (৩৬) প্রমুখ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার ১ নং আসামি মোস্তফা জামান সিদ্দিকি এলাকায় দলাদলি করে এবং অন্যায় অপরাধ কর্মে নেতৃত্ব দেয়। ২০২২ সালের ৩ মে ঈদের নামাজের জামাতকে কেন্দ্র করে মসজিদে তালা দেওয়া নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সাথে আসামিদের বিরোধ সৃষ্টি হয়।

মামলার বাদি বলেন, মো. খায়রুল ইসলাম ও অপর এক ব্যক্তি আকিদুল ইসলাম আসামিদের কথামতো তাদের নেতৃত্বে ঈদের নামাজ পড়তে না যাওয়ায় আসামীগণ ক্ষিপ্ত হয়ে নিহতদের বসতবাড়িতে গিয়ে খায়রুল ইসলাম ও আকিদুল মোল্যাকে জোরপূর্বক টানাহেঁচড়া করে লাল মিয়ার বসতবাড়ির নিকট নিয়ে যায়। সেখানে মোস্তফা জামান সিদ্দিকির নেতৃত্বে অপর আসামীরা খায়রুল ইসলাম ও আকিদুল মোল্যাকে কুপিয়ে হত্যা করে।

মামলার বাদি মোসা. নাসিমা বেগম বলেন, হত্যার বিচারের জন্য বোয়ালমারী থানায় ওই সময় মামলা করতে গেলে মোস্তফা জামান সিদ্দিকি মামলা হয়েছে বলে আমাদেরকে জানান। আমাদের আর কোন মামলা করা লাগবে না বলেও তিনি নিষেধ করেন।

তিনি আরো বলেন, পরবর্তীতে জানতে পারি আসামীগণ উক্ত ঘটনা হতে নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য এলাকার নিরীহ নির্দোষ কিছু লোকজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আমরা পরবর্তীতে মামলা করার উদ্যোগ নিলে আসামীগণ আমাদেরকে জীবননাশের হুমকি দিয়ে জিম্মি করে রাখে। এজন্য বিজ্ঞ আদালতে মামলা করতে বিলম্ব হয়ছে।

এ ব্যাপারে মো. মোস্তফা জামান সিদ্দিকি জানান, নিহত মো. খায়রুল ইসলাম এবং মো. আকিদুল ইসলাম আমার চাচাতো ভাই। দুই ভাইয়ের স্ত্রীর মধ্যে মো. খায়রুল ইসলামের স্ত্রী থাকে পার্শ্ববর্তী মধুখালী উপজেলায়। আমার দায়েরকৃত মামলার আসামীগণ বিএনপি দলীয় সমর্থক। তারা বর্তমান মামলার বাদিনীকে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর মামলা পট পরিবর্তন হওয়ার ভয় দেখান। সরকার বদলের সাথে সাথে মোসা. নাসিমা বেগমও আসামি হবে বলে ভয় দেখান। এছাড়াও নাসিমা বেগম বেশ কিছুদিন যাবত টাকা-পয়সা নিয়ে মামলা মিটিয়ে ফেলার জন্যে আমাকে চাপ দিয়ে আসছিলেন।

তিনি বলেন, মো. খায়রুল ইসলাম ও মো. আকিদুল ইসলামের মা ও ভাইবোনেরা মোসা. নাসিমা বেগমের কাজের সমর্থন করেনা।

তিনি জানান, মোসা. নাসিমা বেগম নিহত মো আকিদুলের দুই ছেলে মো. আজিজুল ইসলাম (১৫) ও মো. রিয়াজুল ইসলাম (১৪)কে সাক্ষী মেনেছেন। কিন্তু তারা এব্যাপারে কিছু জানেন না।

মোস্তফা জামান সিদ্দিকি আরো জানান, বর্তমান মামলার বিবরণ সত্য নয়। সেদিনের ঘটনাটা ঘটেছিলো বোয়ালমারী উপজেলার গোয়াইলবাড়ী বাজারে। শতশত মানুষের সামনে মো. ফারুক হোসেন এবং মো. আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে সেদিন মো. খায়রুল ইসলাম ও মো. আকিদুল ইসলামকে হত্যা করা ছাড়াও মো. আলমগীর হোসেন, মাসুদ আহমেদ ও নিহত মো. খায়রুল ইসলামের ভাই মো. জিল্লুর রহমান (৪২) সহ ৭/৮ জন গুরুতর আহত হয়েছিল।

এ ব্যাপারে নিহত খায়রুল ইসলামের ছোট ভাই মো. জিল্লুর রহমান (৪২) বলেন, এ ঘটনার আমি একজন প্রত্যক্ষ সাক্ষী এবং আহতদের একজন।

তিনি বলেন, আমার ভাবি টাকার লোভে আমার ভাইয়ের হত্যা মামলা নষ্ট করার জন্যে এ মিথ্যা মামলাটি সাজিয়েছেন। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের সাথে ষড়যন্ত্রকারীদেরও বিচার চাই।

(কেএফ/এসপি/অক্টোবর ১৯, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test