E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

পীরগঞ্জ খাদ্য গুদামে ধান সংগ্রহে দূর্নীতি

২০১৫ সেপ্টেম্বর ১৩ ১৮:৪১:৩১
পীরগঞ্জ খাদ্য গুদামে ধান সংগ্রহে দূর্নীতি

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি: কৃষকদের ধান সরাসরি সংগ্রহে রাতে মাইকিং করে সকালে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে খাদ্যগুদামের সিল দেয়া বস্তায় ধান নিলেন পীরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা। ধান দেয়া থেকে বঞ্চিত ক্ষুব্ধ কৃষক তালিকা প্রদর্শন করেছে।

রবিবার ধান সংগ্রহের বিষয়ে উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ইউএনও কে না জানিয়েই ওই সংগ্রহ করা হয়।

অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা খাদ্যগুদামে ৪’শ মে. টন ধান কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করার কথা। প্রতি কেজি ধানের সরকারি মুল্য ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে পীরগঞ্জের বাজারে ১৩/১৪ টাকা দরে প্রতি কেজি ধান বিক্রি হচ্ছে। গত ২৪ মে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান সংগ্রহের উদ্বোধন করা হলেও প্রায় ৪ মাস পর ধান সংগ্রহ করার জন্য উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতি নেয়। গত শনিবার রাতে উপজেলা সদরে হঠাৎ করে কৃষকদের উদ্দেশ্যে খাদ্য কর্মকর্তার পক্ষে মাইকিং করে রবিবার ধান গুদামে আনার জন্য বলা হয়।

এর আগে খাদ্য কর্মকর্তার কক্ষে গোপন বৈঠকে ব্যবসায়ী-স্থানীয় প্রভাবশালীরা সংগ্রহের জন্য বরাদ্দকৃত ধানের ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। এতে ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় ৪০ টাকা করে খাদ্য বিভাগ দেড় লাখ টাকা উৎকোচ নেয় বলে জানা গেছে।

রবিবার সকালে খাদ্য কর্মকর্তা কৃষকদের পরিবর্তে ব্যবসায়ী-প্রভাবশালীদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ শুরু করে। এ সময় কৃষি বিভাগের দেয়া তালিকা ব্যবসায়ীরাই প্রদর্শন করে। অপরদিকে গুদামে ধান নিয়ে গেলেও তা দিতে ব্যর্থ হয়ে কয়েকজন কৃষক কৃষি বিভাগের দেয়া ভুর্তুকির কার্ড প্রদর্শন করে বিক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

এ ব্যাপারে ক্ষুব্ধ কৃষকরা জানান- খাদ্য বিভাগ তড়িঘড়ি করে রাতে মাইকিংয়ের পর ধান সংগ্রহ করেছে। আমরা কোন সময়ই পাইনি।

একটি সুত্র জানায়, শনিবার রাতে ধান সংগ্রহের মাইকিংয়ের পরই ব্যবসায়ীরা গুদামের ভিতরে বেশকিছু মাহেন্দ্র ট্রাক্টর ভর্তি করে খাদ্য বিভাগের সিল দেয়া বস্তায় ধান ঢুকিয়ে রাখে। রবিবার সেগুলো গুদামে ঢুকানো হয়। সেইসাথে গুদামের পাশে উপজেলা সদরের প্রধান সড়কে আটকে রাখা ট্রাক থেকে ধানের বস্তা নামিয়ে ভ্যানযোগে গুদামে নেয়া হয়। গুদামে তালিকাভুক্ত কৃষকদের নামে গুদাম সংলগ্ন তালওয়ালা বাড়ীর আবু হোসেন, রাজু মিয়া, আলমগীর হোসেন, জুয়েল মিয়া, রেজাউল করিম ও মিলন মিয়া, নয়া মাদারগঞ্জের ব্যবসায়ী মাসুদ মিয়া (ট্রাক নং- ঢাকা মে. ট-১৪-৬৬২৮), রামনাথপুরের ডিলার আইয়ুব আলী (ট্রাক নং-ঢাকা মে. ১৪-৮৬৮৬), ধুলগাড়ীর মেনাজ চৌধুরী, ওসমানপুরের আলহাজ্ব আমজাদ হোসেন (ট্রাক নং- ঢাকা মে. ১৪-৬১৬২) সহ ২৫/৩০ জন দেড়শ মে. টন ধান গুদামে দেয়।

এ ব্যাপারে খাদ্য কর্মকর্তা আনিছুল হক বলেন- গুদামে জায়গা না থাকায় আপাতত দেড়শ মে. টন ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে। তালিকাভুক্ত কৃষকদের কাছ থেকেই ধান নেয়া হয়েছে।

গুদামে কৃষক নেই এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- তারা না আসলেও সমস্যা নেই, নামের তালিকাতো আছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রেজওয়ানুল হক বলেন- অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ধান নেয়ায় অনেক ইউনিয়নের কৃষক বঞ্চিত হয়েছে। উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ইউএনও এসএম মাজহারুল ইসলাম বলেন- খাদ্য সংগ্রহের বিষয়টি জানি না।

(জিকেবি/এলপিবি/সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test