E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দুই দেশের মিলন মেলা, বাধা শুধু কাঁটাতারের বেড়া

২০১৬ এপ্রিল ১৫ ১৪:৪০:০২
দুই দেশের মিলন মেলা, বাধা শুধু কাঁটাতারের বেড়া

খুরশিদ আলম শাওন রাণীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও : সীমান্তের বিজিবি ও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র বাধা উপেক্ষা করে জগদল সীমান্তের ৩৭৪, ধর্মগড় ৩৭৩ হরিপুর’র আংশিক সীমান্ত মলানী ৩৭২ ডাবরী সীমান্তে ৩৬৯ সীমান্তের নাগর নদীয় পাড়ে দুই বাংলার মানুষের দেখা হয়েছে বৃহস্পতিবার।

লাখো মানুষের কথা চলছে তাদের প্রিয়জনের সাথে। দুই দেশের সীমারেখা কাঁটাতার দিয়ে আলাদা করা হলেও আলাদা করা যায়নি ভালবাসার টান। একটু সুযোগ পেলে দুই পাড় থেকে ছুটে আসে তারা মিশে যান একে অন্যের সান্নিধ্যে, পেতে ইচ্ছে করে মায়া মমতা একটু সহানুভূতি।

দীর্ঘদিন দূরে থাকা, দেখা না হওয়া, অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আবার কেউ প্রিয়জনের দেখ না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হয় চোখে পানি নিয়ে। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ এলেই এ মিলন মেলার অপেক্ষা করে থাকেন সবাই। পহেলা বৈশাখ সকাল থেকে ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলাার হরিপুরের ডাবরী ৩৬৯ মলানী ৩৭২ রাণীশংকৈলের ধর্মগড় ৩৭৩ জগদল ৩৭৪ সীমান্ত পিলারের কাছে উভয় দেশের মানুষ তাদের উভয় দেশের মানুষ তাদের স্বজনদের এক পলক দেখতে দূর দুরান্ত ছুটে আসেন।

সীমান্তে এ মিলন মেলার ঘোষণাটি অনেক আগই এলাকার লোাকজন জনতে পারেন। এরপর স্বজনরা মোবাইল ফোনে দেখা করার জন্য আগাম জানিয়ে দেন।

এই মিলন মেলায় দুই বাংলর লাখো মানুষ মিলিত হয়ে সেরে নেন স্বজনদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত ও কুশল বিনিময়।

ভারতীয় অধিবাসীরা কাঁটাতারের পাশে এলে সেখানে বাংলাদেশেরও লাখো নারী পুরুষ সমবেত হন। প্রতি বছর এই পহেলা বৈশাখে কাঁটাতারের দুই পাশে সকাল থেকে ভীড় জমে উঠে এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

জামাই ঈন্দ্রনাথ ভারত সীমান্তে শ্বাশুড়ি গীতা রানী বাংলাদেশ সীমান্তে সঙ্গে নাতি সবাই সবার সাথে কান্না জড়িত কন্ঠে কথা বলছেন। গীতারাণী বলেন, ৩ বছর পর জামাই ও মেয়ের দেখা পেলাম একে অপরকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছা থাকলেও পারছেন না। বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাঝের কাঁটাতারের বেড়াটির কারণে।

ইচ্ছে হচ্ছিল একটু ছুঁয়ে দেখার। কিন্তু তা হল না, ছুঁতে পারলামনা। জড়িয়ে একটু চিৎকার করে কান্না করি। তবে হয়তো দীর্ঘদিনের জমে থাকা কষ্টগুলো থেকে একটু রেহাই পেতাম বলছিলেন দিনাজপুর থেকে ভারতে শ্রীপুর সীমান্তে থাকা ছোট নাজনীনকে দেখতে আসা ভাই মকবুল ইসলাম।

আগত অনেকে বলেন- এক রক্ত, এক বংশ, তবুও কেন আমরা আলাদা, নিজের মানুষকে দেখবে, কেন এতো জটিলতা। এটা কেন সহজ করা হয়না। এভাবে কি কথা বলে শান্তি পাওয়া যয়।

রাণীশংকৈল উপজেলা চেয়ারম্যান আইনুল হক মাষ্টার বলেন, উপজেলার সীমান্তে এলাকা পাক ভারত বিভক্তির আগে ভারতেদক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অধীনে ছিল। এ কারণে দেশ বিভাগের পর আত্মীয় স্বজনের দুই দেশের ছড়িয়ে পড়ে। তারই সারা বছর কেউ কারো সাথে দেখা সাক্ষাত করতে পারেননা। অপেক্ষা করে এই দিনের জন্য।

(কেএএস/এএস/এপ্রিল ১৫, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test