E Paper Of Daily Bangla 71
Sikdar Dental Care
Walton New
Mobile Version

মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে মাদকসেবীদের আড্ডা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৮:২৬:৪২
মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে মাদকসেবীদের আড্ডা

শেখ ইমন, ঝিনাইদহ : মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধের ভেতরে ও আশপাশে পড়ে আছে নানা ব্রান্ডের সিগারেটের প্যাকেট, সিগারেটের অংশ, গ্যাসলাইট, চিপসয়ের প্যাকেট সহ নানা আবর্জনা। জন্ম নিয়েছে লতা-পাতা, গাছগাছালী। শুধু তা-ই না, প্রতিদিনই স্থানটিতে চলে মাদকসেবীদের আড্ডা। সুযোগ বুঝে দিন ও রাতের বিভিন্ন সময়ে আড্ডা দেয় মাদকসেবীরা। স্থানীয়রা বিষয়টি জানলেও বাধা দেন না কাউকে। ফলে মাদকসেবীদের জন্য জায়গাটি সুরক্ষিত স্থান হয়ে উঠেছে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে এমন ঘটনা ঘটলেও এ বিষয়ে কিছু জানেনা স্থানীয় প্রশাসন।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৫ ই এপ্রিল সেময়ের আনসার কমান্ডার গোলাম মোস্তফা বিশ্বাসের নেতৃত্বে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার বড়দাহ এলাকার ব্রিজটির পাশে গর্ত করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনিদের রোধ করা হয়। সেসময় সম্মুখ যুদ্ধ হয় মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর। যুদ্ধে বেশকিছু পাক সেনা মারাও যায়। সেই সম্মুখ যুদ্ধের স্মৃতিকে ধরে রাখতে ব্রীজটির পাশে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ ও মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় এই মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধটি। তবে সেই স্মৃতিসৌধ এখন পরিণত হয়েছে মাদকের আখড়া আর ময়লার ভাগাড়ে। সামনে জমে আছে পানি। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। গাছের পাতা ও ময়লা জমে তৈরি হয়েছে স্তুপ।

স্থানীয়রা জানায়, স্মৃতিসৌধটিতে প্রতিনিয়তই বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। স্মৃতিসৌধটি রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখভালও করা হয়না। আর এ কারণেই এটি পরিণত হয়েছে ময়লার স্তুপে। দ্রুতই স্থানটি রক্ষণাবেক্ষণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

সম্রাট হোসেন নামে স্থানীয় যুবক বলেন, 'প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে স্থানটিতে লোকজন আসে। বিড়ি, সিগারেট খেয়ে স্মৃতিসৌধটির চারপাশে নোংরা করে। এমনকি বিভিন্ন সময় এখানে মাদক সেবন করে স্থানীয় অনেকেই৷'

পারভেজ নামে আরেকজন বলেন, 'স্মৃতিসৌধের সামনে বৃষ্টির পানি জমে আছে,সাথে গাছের পাতা আর ময়লা আবর্জনা। স্মৃতিসৌধের নিচের ফাঁকা জায়গায় সিগারেট,চিপসয়ের প্যাকেজ,গ্যাসলাইট আর ময়লা-আবর্জনা। দেখে বোঝা যায় এখানে মাদকসেবীরা আখড়া বসায়। তাই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

রইচ নামে আরেকজন বলেন, 'স্মৃতিসৌধটি নির্মাণের পর থেকে সরকারিভাবে কোন খোঁজখবর নেয়া হয়নি। ফলে জায়গাটিতে মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিনত হয়েছে। এখানে মাঝে মধ্যে পাহাড়া ও পুলিশের তৎপরতা প্রয়োজন।'

শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব হাশেম খান বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে মাদকসেবীদের আড্ডাকে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানের সামিল। আড্ডা বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।'

এ বিষয়য়ে কেউ অভিযোগ করেনি জানিয়ে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস বলেন, 'খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোন অবস্থাতেই পবিত্র এই স্থানটিতে মাদকসেবীদের আড্ডা দিতে দেওয়া হবে না।’

(এসআই/এসপি/সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫)

পাঠকের মতামত:

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test