E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

সাতক্ষীরায় প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণ ও তার সহপাঠীকে ধর্ষণের চেষ্টা, মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি

২০১৯ জানুয়ারি ২১ ১৭:৪১:২৬
সাতক্ষীরায় প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী ধর্ষণ ও তার সহপাঠীকে ধর্ষণের চেষ্টা, মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : ক্যাডবেরিস চকলেট খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রথম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও তার সহপাঠীকে ধর্ষণ করতে না পেরে কামড়ে ক্ষত বিক্ষত করার ঘটনায় ৫০ দিনেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি ধর্ষক আব্দুর রহিমকে। নির্যাতিতার পরিবার অসহায় হওয়ায় তাদেরকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত বছরের পহেলা ডিসেম্বর দুপুর একটার দিকে সুশীলগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীর চুড়ান্ত পরীক্ষায় গণিত পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সুশীলগাতি গ্রামের এক দিন মজুরের মেয়ে ও তারই সহপাঠী একই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য মুক্তিযোদ্ধার নাতনি। বাড়িতে আসার পরপরই তারা দু’সহপাঠী প্রতিবেশী জাকিরের বিয়ের অনুষ্ঠানে যায়। সেখানে মুক্তিযোদ্ধার নাতনি নাচে অংশ নেয়। সেখান থেকে ক্যাডবেরিস চকলেট খাওয়ানোর নাম করে গ্রামের মধ্যে পাতনার বিলে নিজের মাছের ঘেরের বাসায় নিয়ে যায় একই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবুল শেখের ছেলে আব্দুর রহিম। সেখানে তারা একজনকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে ও তার সহপাঠীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে যৌনাঙ্গে কামড় দিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে রহিম শেখ পালিয়ে যায়। নির্যাতিত দু’ শিশু ছাত্রীকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২ ডিসেম্বর সদর হাসপাতালে ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষা ও পরদিন বিচারিক হাকিম রাজীব রায় তার ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এ ঘটনায় ধর্ষিতা শিশুটির মা বাদি হয়ে গত ৭ ডিসেম্বর রহিম শেখের নাম উল্লেখ করে দেবহাটা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯(১) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে ধর্ষিতার মায়ের অভিযোগ, আসামী পলাতক থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাদেরকে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছে। সর্বশেষ রোববার বিকেলে রহিম শেখের ছেলে আব্দুর রহমান মামলা তুলে নেওয়ার জন্য তাদের কাছে এসে কান্নাকাটি করার একপর্যায়ে হুমকি দিয়ে যায়।

ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে রহিম শেখের কামড়ে ক্ষত বিক্ষত শিশুটির দাদা অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা অভিযোগ করে বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধার নাতনিতে কিভাবে ধর্ষণের চেষ্টা করলো ও তার সহপাঠীকে ধর্ষণ করলো এটা ভাবতে কষ্ট হয়। অবিলম্বে রহিম শেখকে গ্রেফতারের দাবি জানান তিনি।

ধর্ষিতার মা আরো অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামী একজন দিন মজুর। অভিযোগপত্র দেওয়ার নাম করে তার স্বামীর কাছে চার হাজার টাকা দাবি করেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা নয়ন চৌধুরী। পরে তার ননদ ডালিয়া খাতুনের কাছ থেকে এক হাজার টাকা, খাদিজার কাছ থেকে ১২০০ টাকা, ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হওয়া শিমুটির নানির কাছ থেকে ৫০০ শত টাকা, তদন্ত করতে এসে নামে ৩০০ টাকা এবং কোর্টে যাওয়ার জন্য আরো ৫০০ টাকা আদায় করেছেন ওই তদন্তকারি কর্মকর্তা।

জানতে চাইলে রহিম শেখের ছেলে আব্দুর রহমান জানান, হুমকি নয়, তার বাবার নামে মামলা তুলে নেওয়া যায় কিনা সেজন্য মামলার বাদির কাছে যেয়ে সে পায়ে ধরেছিল।

এামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা দেবহাটা থানার উপপরিদর্শক নয়ন চৌধুরী জানান, মামলার বাদি পক্ষের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। তবে আসামী পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। খুব শ্রীঘ্রই মামলার পুলিশ প্রদিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।

দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব নাথ সাহা জানান, তিনি রোববার এ থানায় যোগদান করেছেন। সবকিছু জেনে বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ২১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test