E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরগুনায় স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে গৃহবধূর মুখমন্ডল বিদীর্ণ

২০১৪ এপ্রিল ১৯ ১৮:২৪:৪২
বরগুনায় স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে গৃহবধূর মুখমন্ডল বিদীর্ণ

বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনা সদর উপজেলার গৌরীচন্না ইউনিয়নের ধূপতি গ্রামে কুলসুম আক্তার নামে এক গৃহবধূর পাশবিক নির্যাতনের পর স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে মুখমন্ডল বিদীর্ণ করে দিয়েছে প্রতিবেশী বখাটেরা। শুক্রবার গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে।

শনিবার সকালে কুলসুম আক্তারকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তাপস কুমার পাল জানান, কুলসুম আক্তারের চোয়ালের একপাশ দিয়ে স্ক্রু ড্রাইভার ঢুকিয়ে অন্যপাশ দিয়ে তা বের করে দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে আনার পর সে স্ক্রু ড্রাইভার তারা অপারেশন করে বের করেছেন। এছাড়া তার কানের অলংকার টেনে ছিড়ে নেওয়ায় তার দুই কানই ছিড়ে গেছে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল পাঠানো হয়েছে।

বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পূর্বে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নির্যাতিত কুলসুম আক্তার ও তার স্বামী দুলাল মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায়, গৃহবধূ কুলসুম ও তার পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী জামাল সিকদার ও তার পরিবারের বিরোধ চলছিল।

এ বিরোধের জের ধরে শুক্রবার গভীর রাতে কুলসুম আক্তারের ঘরে ঢুকে পাশবিক নির্যাতন চালায় প্রতিবেশী জামাল সিকদারের স্ত্রী হাসি বেগমের ভাইয়ের ছেলে বখাটে শাহিন (২৪) ও কিসলু (২৫)। এসময় স্বর্ণালংকারসহ নগদ অর্থও কেড়ে নেয় বখাটেরা। নির্যাতিতের স্বামী দুলাল মিয়া একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসার কাজে অন্যত্র থাকায় ঘটনার সময় কুলসুম আক্তার তার বাড়িতে একা ছিলেন। স্ত্রীকে নিয়ে স্বামী দুলাল মিয়া বর্তমানে বরিশাল থাকায় এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।

এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপের জন্যে তিনি সংশ্লিষ্ঠ ওসিকে যথাযথ নির্দেশনা দিয়েছেন।

এদিকে একের পর এক নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বীগ্ন এখন বরগুনার সামাজিক ও মানবাধিকার কর্মীসহ স্থানীয় সচেতন মহল। গত দু'সপ্তাহে নারীর প্রতি সহিংসতার সংখ্যা দাড়িয়েছে কমপক্ষে দশটিরও বেশি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে অভিযুক্তরা।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. তাপস কুমার পাল জানান, স্বামীর সহযোগী অথবা অন্য পুরুষের হাতে সহিংসতার শিকার হয়ে গড়ে প্রতিদিন একজন নারী ভর্তি হয়ে থাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে।

স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠন জাগোনারীর প্রধান নির্বাহী হোসনে আরা হাসি জানান, বরগুনায় গত এক মাসের হিসেব করলে নারী নির্যাতনের এক ভয়ানক চিত্র দেখা যাবে।

তিনি আরো জানান, উপযুক্ত সাক্ষীর অভাব, বিচারের দীর্ঘ সূত্রীতার কারনে মামলা চালাতে বাদী পক্ষের অনীহা এবং আইনের নানা ফাঁক ফোঁকর এবং দুর্বল পুলিশি তৎপরতার কারণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রকৃত অপরাধীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা যায় না। আর এ কারণে বরগুনাসহ আশেপাশের উপকূলীয় অঞ্চলে একে একে বাড়ছে নারীর প্রতি সহিংসতা।

এর আগে গত বুধবার বরগুনা শহরের মূল সড়কের একটি বাড়িতে আটকে চার বছরের এক কন্যা শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় আ. খবির নামের অবসরপ্রাপ্ত এক আনসার কমান্ডার। এ ঘটনায় তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে স্থানীয় জনতা। পরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয় তাকে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে বরগুনা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়।

(ওএস/এটি/ এপ্রিল ১৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test