E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রশাসনের সহযোগিতায় নিজের ঘরে উঠতে পারল দৌলতদিয়ার সেই গৃহবধূ 

২০২১ এপ্রিল ১০ ১৭:৫৮:৫০
প্রশাসনের সহযোগিতায় নিজের ঘরে উঠতে পারল দৌলতদিয়ার সেই গৃহবধূ 

এম এ হিরা, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া হোসেন মন্ডলের পাড়ায় বউয়ের টাকায় ঘর-বাড়ি করার পর এখন সেই ঘরবাড়ি হতেই বউকে তাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে স্বামী -শাশুড়ির বিরুদ্ধে।

তারা ওই ঘরে গত ৭ দিন ধরে তালা লাগিয়ে রেখেছে। অসহায় স্ত্রী ঘুরছেন পাগলের মতো।

অভিযুক্ত স্বামী ওই গ্রামের মৃত মমিন ফকিরের ছোট ছেলে মিন্টু ফকির (২৮)।তবে গতকাল শুক্রবার গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের সহযোগিতায় সেই গৃহবধূর ঘরের তালা ভেঙ্গে তাকে ঘরে ঢুকতে দেয়া হয়েছে। এখন সে তার ঘরের মধ্যেই অবস্থান করছে। সেই গৃহবধু তার স্বামীর সাথে যে কোনো মূল্যে আগের মত ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায়।

মিন্টুর স্ত্রীর (২১) বাবার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায়। ছয় বছর আগে সে পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পড়ে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে আসে। তারপর হতেই মিন্টুর সাথে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বছরের জুন মাসে তাদের বিয়ে হয়। এর আগে মিন্টু বিগত ৫ বছরে তার স্ত্রীর কাছ থেকে অন্তত ২৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিজের বাড়ি-ঘর ও অন্যান্য সম্পদ করে।

সম্প্রতি ঠুনকো অভিযোগে মিন্টু তাকে গোপনে এক তরফা ভাবে তালাক দিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

সরেজমিন আলাপকালে অসহায় গৃহবধূ জানান, মিন্টু আমাকে বিয়ে করে বাড়ীতে নিয়ে যাবার কথা বলে টানা ৫ বছর আমার কাছ থেকে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিয়েছে। আমিও সরল বিশ্বাসে একটা সংসার পাবার আশায় তার জন্য সবকিছু করি। জীবনের সমস্ত সঞ্চয় অন্তত ২৫ লাখ টাকা ধাপে ধাপে তার হাতে তুলে দেই।

সে আমার টাকায় তাদের খাল ভরাট করে এবং সেখানে পাকা করে ঘর তুলে। এরপর সে আমাকে পতিতালয় থেকে গ্রামে নিয়ে এসে সমাজের মাতব্বরদের উপস্থিতিতে বিয়ে করে। প্রায় দেড় বছর সংসার করার পর সে গর্ভবতী হলে বাচ্চা ডেলিটারী করাতে খুলনা মায়ের বাড়ীতে যান। সেখানে আদ্বীন ক্লিনিকে তার পেট থেকে মরা বাচ্চার জন্ম হয়। সে সময় তার কোন খোঁজ খবর নেয়নি মিন্টু ফকির ও তার পরিবারের কেউ। এক মাস মায়ের বাড়ী থাকার পর সে গত ২ এপ্রিল তার স্বামীর কাছে চলে আসে। বাড়ীতে আসার পর মিন্টু দুইদিন তার সাথে থাকার পর বলে আমি তোমার তালাক দিয়েছি এই বাড়ীতে তুমি থাকতে পারবে না এই বলে সোনালীকে ঘর থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাহিরে বের করে দিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বর্তমানে সে নিঃস্ব হয়ে পাগলের মতো খেয়ে না খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে আশে পাশে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, তারা জীবন ভরে খেটে একটি ঘর তুলতে পারেন না। অথচ মিন্টু কিছু দিনের মধ্যে গর্ত ভরাট করে পাকা ঘর বাড়ী করেছে ভেকু কিনেছে । ওর বাপ কয়েক বছর আগে টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে।এখন তাদের খুব ভালো অবস্থা। সামান্য দর্জির কাজ করে এটা সম্ভব না। মিন্টু যা কিছু করেছে ওর বউয়ের টাকায়।

এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, এ বিষয়ে ওই গৃহবধূ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার স্বাভাবিক জীবন-যাপন তথা সংসার রক্ষার জন্য তদন্তপূর্বক আইনগত সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করবো।

(এইচ/এসপি/এপ্রিল ১০, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test