E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শৈলকূপা পৌরসভার কর আদায়কারীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযােগ

২০২২ নভেম্বর ১৪ ১৬:৪০:০৮
শৈলকূপা পৌরসভার কর আদায়কারীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযােগ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : সরকারি অফিস থেকে পৌর কর আদায় হলেও ২৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকা জমা পড়েনি পৌরসভার ফান্ডে। সরকারি ট্রেজারি থেকে বিল করা এই বিপুল পরিমাণ অর্থ নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়। ঘটনাটি ঘটছে ঝিনাইদহের শৈলকূপা পৌরসভায়। ওই দপ্তরের কর আদায়কারী সাজ্জাদুর রহমান ৫ বছরের কর আদায় করে এই টাকা আত্মসাৎ করছেন বলে অভিযাগ। এ ঘটনায় তাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করে আত্মসাৎকত অর্থ পৌরসভার ফান্ডে ফেরৎ দেবার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। 

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শৈলকূপা উপজলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা রিসার্স সেন্টার ও পৌর ভূমি অফিস প্রতি অর্থ বছরে নিয়মিত কর দিয়ে আসলেও আদায়কৃত অর্থ জমা করা হয়নি। বছরের পর বছর সরকারি দপ্তর থেকে করের টাকা আদায় দেখিয়ে সাজ্জাদুর রহমান পকটস্থ করলেও পৌর কর্তৃপক্ষ কােন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। সম্প্রতি ধরা পড়ার পর পৌর মেয়রের টনক নড়ে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে শৈলকূপা উপজেলা শিক্ষা অফিস ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ১ লাখ ৪৯ হাজার ২৩৩ টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৩ টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ২ লাখ ৯৯ হাজার ১৯৭ টাকা, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯১০ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৪০৫ টাকা ও ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৩৫১ টাকা পৌর কর প্রদান করে। এছাড়া উপজেলা রিসার্স সেন্টার ৪৫ হাজার ও শৈলকূপা পৌর ভূমি অফিস ৫৬ হাজার টাকা পৌর কর পরিশাধ করে। তদন্ত করলে এমন আরাে অনেক অফিসের পৌর কর আত্মসাতের ঘটনা ধরা পড়তে পারে বলে অনেকের ধারণা।

বিষয়টি নিয়ে কর আদায়কারী সাজ্জাদুর রহমান জানান, তিনি কর আদায় করে মেয়র কাজী আশরাফুল আজম ও সাবেক সচিব নূর মােহাম্মদের কাছে দিয়েছেন। তিনি কােন টাকা আত্মসাৎ করেননি। তিনি দাবী করেন, এই টাকা ট্রেজারি থেকে তুলে আনার পর সাবেক সচিব নূর মােহাম্মদ ৮ লাখ টাকা নিজে রেখে দেন। তিনিও সে টাকা পৌর ফান্ডে জমা করেননি বলে সাজ্জাদুর দাবী করেন।

তবে শৈলকূপা পৌরসভার সাবেক সচিব ও বর্তমানে ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা নূর মােহাম্মদ ৮ লাখ টাকা গ্রহণের কথা অস্বীকার করে জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাকে মিথ্যা ভাবে দােষারাপ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে শৈলকূপা পৌরসভার সচিব মােস্তাক আহেম্মদ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পৌরসভার প্রায় ২৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ফান্ডে জমা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পরে কর আদায়কারীকে প্রথমে শােকজ ও পরে সাময়িক বরখাস্ত করে আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরৎ দেবার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।

শৈলকূপা পৌরসভার মেয়র কাজী আশরাফুল আজম বলেন, বিষয়টি প্রথমে আমরা কেউ জানতাম না। অনেক দিন ধরে সে এই কাজটি করে আসছে। সম্প্রতি তদন্তে টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি ধরা পরে। ফলে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় কর আদায়কারীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আত্মসাৎকৃত অর্থ পৌর কােষাগারে ফেরৎ না দিলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এদিকে ঝিনাইদহ সদর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা নূর মােহাম্মদ শৈলকূপা পৌরসভার সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযাগ উঠেছে। তিনি একাধিক ভাউচার জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকায় বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ নভেম্বর মঙ্গলবার ঝিনাইদহ জলা প্রশাসক দপ্তরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম নূর মােহাম্মদের বিষয়টি তদন্ত করতে শৈলকূপায় যাবেন বলে মেয়রর কার্যালয় থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম এ বিষয়ে কােন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

(একে/এসপি/নভেম্বর ১৪, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test