E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাটে পাউবোর বাঁধে আবারো ধ্বস,নদী গর্ভে  ৩২ কোটি টাকা

২০১৫ জুলাই ২১ ১৭:০০:১৮
বাগেরহাটে পাউবোর বাঁধে আবারো ধ্বস,নদী গর্ভে  ৩২ কোটি টাকা

আহসানুল করিম, বাগেরহাট থেকে : বাগেরহাটের শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের  ৩৫/১ পোল্ডারে ৩২ কোটি টাকা ব্যায়ে সদ্য সংষ্কার হওয়া ভেড়ি বাঁধে কয়েকটি স্থান আবারো ধ্বসে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

বলেশ্বর নদীর প্রবল ঢেউ আর অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে বাঁধের বেশ কয়েকটি অংশ ঈদের ছটির মধ্যে ধ্বসে গেছে। ফাঁটল দেখা দিয়েছে আরো বিভিন্ন অংশে। তাফালবাড়ি লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় একের পর এক ভেড়িবাঁধ নদীতে ধ্বসে পড়ছে। মঙ্গলবার সকালে সরেজমিন ঘুরে বাধের এমন নাজুক অবস্থা দেখাগেছে।

বিগত ২০০৭ সালের ১৫ই নভেম্বরের সুপার সাইক্লোন সিড়রের আঘাতে বলেশ্বর নদীর কোল ঘেষে নির্মিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের ভেড়ি বাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়। গত অর্থ বছরে ওই বাঁধ সংস্কার ও ব্লক স্থাপনে বিশ্ব ব্যাংক ৩২ কোটি টাকা আর্থিক সহয়তা প্রদান করে। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস এসএস/এসি জয়েন্টভেন্সার ওই বাঁধ সংস্কার কাজ ২ মাস আগে শেষ করে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই একের পর এক নদী গর্ভে বিলিন হতে যাচ্ছে।

এই অবস্থায় আতংকিত হয়ে ভেড়ি বাঁধ সংলগ্ন শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ও চাল রায়েন্দা গ্রামের আঃ হালিম শেখ, আঃ সবুর আকন,মহিদুল ইসলাম, আঃ হক ,লিটন, দুলাল, জাকির ঘরামি, আনোয়ার ও রুবেল হাওলাদারসহ ২০টি পরিবার গত ২দিনের ব্যবধানে ঘর বাড়ী ফেলে প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে অন্যের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছে।ভেড়ি বাঁধ সংলগ্ন চাল রায়েন্দা গ্রামের বাসিন্দা আ. জলিল হাওলাদার, দেলোয়ার হোসেন, আবুল হোসেন, ইউসুফ মৃধাসহ অনেকে বলেন, ‘সিডরের পর বাঁধ মেরামতের কাজ দেইখ্যা অনেক খুশি অইছিলাম। কিন্তু কাজ শ্যাষ ওইতে না ওইতেই যেভাবে ভাঙ্গন শুরু ওইছে, হ্যাতে (তাতে) রাইতের ঘুম হারাম ওইয়া গ্যাছে। কোন সময় যানি বাঁধ সম্পূর্ন ভাঙ্গগা মোগো সবকিছু সিডরের মতো ভাসাইয়া লইয়া যায়। মোগো তো আর কোনোহানে (কোথাও) যাওয়ার জায়গা নাই’।

অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই বাঁধ একের পর এক বাঁধ ধ্বসে পড়ায় চাল রায়েন্দা গ্রামটি নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার আশংকায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে বাসিন্ধাদের। বাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেলে বলেশ্বর নদীর প্রবল ¯্রােতে বাধসংলগ্ন তাফালবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি, সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদ, তাফালবাড়ি বাজার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শত শত বসতবাড়ি, ফসলি জমি, পাকা সড়ক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। এছাড়া বাধের আরো ৪-৫টি ঝুঁকিপূর্ণ অংশ ভেঙে সাউথখালী ইউনিয়নের বগী, তেরাবেকা, গাবতলা, চালিতাবুনিয়া, রায়েন্দা ইউনিয়নের ঝিলবুনিয়া, রাজেশ্বর, লাকুড়তলাসহ কমপক্ষে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শরণখোলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আকন বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থে ৩৫/১ পোল্ডারের ভেড়ি বাঁধ সংস্কার কাজে সঠিক ভাবে না করার কারনে সাউথখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসহ ১৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ইতোমধ্যে বাঁধের ৪/৫টি স্থান বলেশ্বর নদীতে ধ্বসে পড়েছে। ৮/১০টি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোন মুহুর্তে বাধ ভেঙ্গে সাউথখালি ও রায়েন্দা ইউনিয়ন প্লাবিত হবার পাশাপাশি বাঁধ সংস্কারে সরকারের ৩২ কোটি টাকা নদীতে যাচ্ছে।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌলশী মো. মাঈনউদ্দিন সংস্কার কাজে অনিয়ম ও একের পর এক ভেড়িবাঁধ নদীতে ধবসে পড়ার বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে সেব্যাপারে আমরা শতর্ক রয়েছি।

(একে/এসসি/জুলাই২১,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test