E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে রাজৈরের চাচা-ভাতিজার মৃত্যু

২০১৫ আগস্ট ৩০ ১৯:০৯:২৩
ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে রাজৈরের চাচা-ভাতিজার মৃত্যু

মাদারীপুর প্রতিনিধি: লিবিয়া থেকে ইউরোপগামী নৌকা ডুবির ঘটনায় বৃহস্পতিবার মাদারীপুর রাজৈরে চাচা ও ভাতিজা মারা গেছে।

এছাড়াও এই ঘটনায় একই উপজেলার আরো ৩ জন জীবিত উদ্ধার হয়েছে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রাজৈর উপজেলার হোসেনপুর ইউনিয়নের উত্তর হোসেনপুর গ্রামের হাকিম উদ্দিন খালাসীর ছেলে গণি খালাসী (৪১) ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা ঋণ নিয়ে এক বছর চার মাস আগে লিবিয়া যায়।

এর কিছুদিন পর তার বড় ভাই ফজল খালাসীর ছেলে কামরুল খালাসীও (১৯) লিবিয়া যায়। সেখানে তারা একত্রে থাকে।

কয়েকদিন আগে গণি খালাসীর কাছে থাকা প্রায় আড়াই লাখ টাকা ঐ দেশের দুর্বত্তরা নিয়ে যায়। এই ঘটনার পর সে ইতালী যাবার চিন্তা করে। পরবর্তীতে ভাতিজা কামরুলসহ গণি খালাসী বৃহস্পতিবার নৌকায় করে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইতালীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

এসময় নৌকা ডুবে গেলে গণি খালাসী ও কামরুল ফরাসী মারা যায়। এছাড়াও নৌকায় থাকা অপর ৩ জন একই গ্রামের ছলেমান খালাসীর ছেলে নিলু খালাসী (৩২), ধনী মুন্সির ছেলে উজ্জ্বল মুন্সি (২৭) ও পাশের গ্রাম তাতীকান্দির তৈয়ব আলী মেম্বরের ছেলে শরীফ হোসেন (৩৫) বেচে যায়। এর মধ্যে নিলু খালাসীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঐ দেশের একটি স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মৃত গণি খালাসীর স্ত্রী তানজিলা বেগম বলেন, ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা ঋণ করে লিবিয়াতে গিয়েছিলো। সেখানের অবস্থা ভালো না থাকায় ইতালীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কিন্তু সমুদ্র আমাদের সব কেড়ে নিলো। ঋণের টাকাও শোধ করতে পারেনি। এখন আমরা কোথায় যাবো।

এসময় সে আরো বলেন, সরকারের কাছে আমাদের দাবি লাশ দুটি যেন বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনে। যাতে করে এই বাচ্চাগুলো ওর বাবার কবরটা দেখতে পায়।

নিহত গণির ভাবী অপর নিহত কামরুলের বড় চাচী আলেয়া বেগম বলেন, কামরুল খালাসী পড়াশুনায় ভালো ছিলো। এইচএসসি পরীক্ষায় চার পয়েন্ট পেয়েছিলো। গতবছর রেজাল্টে পেয়েই সে লিবিয়াতে গিয়েছিলো। ওর বাবা-মা হজ্বে এ গিয়েছে। তারা এখনও এ খবর পাইনি। তাদের জানানো হয়নি।

কামরুলের চাচাতে বোন সালাম বলেন, বৃহস্পতিবার আমরা তাদের মৃত্যু খবর পেয়েছি। এই ঘটনায় বেঁচে যাওয়া নিলু খালাসী, উজ্জ্বল মুন্সি ও শরীফ মোবাইল ফোনে জানিয়েছে। এখন শুধু লাশ ফিরে আসার অপেক্ষা।

উদ্ধার হওয়া শরীফের বাবা তৈয়ব আলী মেম্বর বলেন, মোবাইল ফোনে আমার ছেলে শরীফের সাথে কথা হয়েছে। সে ভালো আছে। তবে সে জানিয়েছে গণি খালাসী ও তার ভাই এর ছেলে কামরুল খালাসী মারা গেছে।

এ ব্যাপারে রাজৈর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনার কথা শুনিনি। খোঁজ খবর নিচ্ছি। খোঁজ খবর নেয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এএসএ/এলপিবি/আগস্ট ৩০, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test