E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গৌরীপুরে পলাশকান্দা ট্র্যাজেডি দিবস পালিত

২০১৬ নভেম্বর ৩০ ১৭:০৮:৩০
গৌরীপুরে পলাশকান্দা ট্র্যাজেডি দিবস পালিত

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : আজ ৩০ নভেম্বর ছিল ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পলাশকান্দা ট্র্যাজেডি দিবস। ১৯৭১ সনের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে এক সম্মুখযুদ্ধে গৌরীপুুর ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম পলাশকান্দায় শহীদ হয় ৪ মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ, মনজু, মতি ও জসিম। গৌরীপুর ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, গৌরীপুর যুগান্তর স্বজন সমাবেশের উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।

কর্মসূচীর মধ্যে ছিল পলাশকান্দায় ৪ জন শহীদদের স্মৃতি সৌধে পুস্পমাল্য অর্পন, কবর জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। উক্ত কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুস সাত্তার, গৌরীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডাঃ হেলাল উদ্দিন আহাম্মদ, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বুলবুল, যুগ্ম সম্পাদক ফজলুল করিম, গৌরীপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুর রহিম, ডেপুটি কমান্ডার নাজিম উদ্দিন, শহীদ আনোয়ারুল ইসলামের ভাই ম, নুরুল ইসলাম, সাংবাদিক সুপ্রিয় ধর বাচ্চু, মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, জয়নাল আবেদীন, আব্দুল হাই, রতন চন্দ্র সরকার, প্রাক্তন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহাম্মেদ, গৌরীপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান কাউসার, গৌরীপুর যুগান্তর স্বজন সমাবেশের উপদেষ্টা সাংবাদিক রইছ উদ্দিন, সাংবাদিক মোস্তাফিজুর রহমান, সেলিম আল রাজ, আনোয়ার হোসেন শরীফ, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম রবি, রাসেল মিয়া প্রমুখ।

১৯৭১ সনের এই দিনে গৌরীপুরসহ সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা হামলায় পাক হানাদার বাহিনী যখন দিশেহারা। সে সময় মুজিব বাহিনীর একটি গেরিলা দল ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী পাক হানাদার বাহিনীর কনভয়ে হামলা করার জন্য গৌরীপুর ও ঈশ্বরগঞ্জের সীমান্তবর্তী গ্রাম পলাশকান্দা গ্রামে অবস্থান নেয়। মুজিব বাহিনীর কমান্ডার মোঃ মুজিবুর রহামানের নেতৃত্বে (বর্তমানে মৃত) স্থানীয় মুজিব বাহিনীর সদস্যরা এতে অংশ নেয়।

উল্লেখিত গ্রামে অবস্থান নেয়া মুক্তিযোদ্ধাদের খবর ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে অত্যন্ত সুকৌশলে পৌছে দেয় একই গ্রামের স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার মজিদ মাষ্টার । মুজিব বাহিনীর দলটি আক্রমন পরিকল্পনা শেষ করে যখন দুপুরের খাবার খেতে বসে ঠিক সেই মহুর্তে পাক হানাদার, রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সম্মিলিত একটি টিম মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের তিন দিকে ঘিরে ফেলে বৃষ্টির মত গুলি ছুঁড়তে থাকে। অপ্রস্তুত অবস্থায় অতর্কিত আক্রমনের শিকার মুক্তিযোদ্ধারা এসময় প্রতিরোধে গেলেও পাক বাহিনীর ভারী অস্ত্রের মুখে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।

এ সময় হানাদার বাহিনীর ব্রাশ ফায়ারে মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থলেই শহীদ হয়, হানাদারের হাতে আহত অবস্থায় ধরা পড়ে আনোয়ারুল ইসলাম মনজু, মতিউর রহমান ও সিরাজুল ইসলাম। পরে এ তিন মুক্তিযোদ্ধাকে হানাদার ক্যাম্পে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের পর ব্রক্ষপুত্রের নদীর চরে তাদের চোখ বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে উপরে ফেলে হত্যা করা হয়।

(এসআইএম/এএস/নভেম্বর ৩০, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test