E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরার কলেজ ছাত্র গৌতম হত্যাকাণ্ড

গ্রেফতারকৃত ফজিলার রিমাণ্ড আবেদন জানায়নি পুলিশ

২০১৬ ডিসেম্বর ২৪ ১৩:৩৩:৫৩
গ্রেফতারকৃত ফজিলার রিমাণ্ড আবেদন জানায়নি পুলিশ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র গৌতম সরকার হত্যা মামলার  অন্যতম সন্দিগ্ধ আসামী ফজিলা বেগমকে জিজ্ঞাসাদের জন্য আদালতে রিমাণ্ডের আবেদন জানায়নি পুলিশ। ফলে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সম্পর্কে নতুন কোন তথ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের মহাদেবনগর গ্রামের মোখলেছুর রহমান, সন্তোষ সরকারসহ কয়েকজন জানান, গত ১৩ ডিসেম্বর ইউপি সদস্য গনেশ সরকারের ছেলে মাহমুদপুর সীমান্ত ডিগ্রী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতক অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র গৌতম সরকারকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ভাড়াটিয়া খুনি হিসেবে ভাড়–খালি গ্রামের আব্দুল করিম মোড়লের ছেলে জামায়াত কর্মী শাহাদাৎ হোসেনের নাম আদালতে স্বীকৃতি পায়। এ শাহাদাৎ হোসেন একজন গরু চোরাকারবারি। তার চোরাকারবারে লাইনম্যান হিসেবে সহযোগিতা করে থাকে ফজিলা বেগমের ছেলে সাজু শেখ। চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিক থেকে শাহাদাৎ ফজিলা বেগমের বাড়ির পাশে কালভার্টের মধ্যে রাতে অবস্থান করতো। তাকে সিগারেটসহ নেশার জিনিসপত্র সরবরাহ করতেন ফজিলা। জামাতা বানানোর আশায় মেয়ে ভাড়–খালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী নাসরিনকে তুলে দিতেন শাহাদাতের হাতে। এভাবেই সুখে ও শান্তিতে কাটছিলো শাহাদাতের দিনগুলো।

তারা আরো জানান, গৌতম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৫ ডিসেম্বর গ্রেফতার হয় আলী আহম্মেদ শাওন ও শাহাদাৎ। পরে গ্রেফতার হয় ফজিলা বেগমের ছেলে সাজু শেখ। হত্যার আগে কিভাবে গৌতমকে ছাগলের দড়ি দিয়ে পিঠমোড়া দিয়ে বাঁধা ও হত্যার পর প্রাচীরের ইট দিয়ে লাশ পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে রাখতে সহায়তা করেছিলো মা ফজিলা তা সাজু সকলের সমক্ষে প্রকাশ করে। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় পুলিশ ফজিলা বেগম, তার মেয়ে নাসরিনসহ কয়েকজনকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়। এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হয়।

গত মঙ্গলবার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হক নিহত গৌতমের বাড়িতে যান। এ সময় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে ফজিলা বেগমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। একপর্যায়ে ওই দিন দুপুরে পুলিশ ফজিলা বেগমকে আটক করে সন্দিগ্ধ আসামী হিসেবে এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। তবে ফজিলা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদে কোন গুরুত্বপর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে কিনা তা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামান নিহতের স্বজনদের নিশ্চিত করতে পারেননি। আবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে রিমাণ্ডের আবেদনও জানাননি তদন্তকারি কর্মকর্তা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, ফজিলা বেগম এ মামলার সন্দিগ্ধ আসামী। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমাণ্ডের আবেদনটি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে শুক্রবার বিকেলে নিহত গৌতমের বাড়িতে যেয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন হিন্দু মহাজোটের কালীগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক গোপাল সরদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পুলক কুমার ঘোষ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অবকাশ খাঁ, যুব মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত মণ্ডল প্রমুখ।

তারা বলেন, গৌতমের মতো ছেলেকে নির্মমভাবে হত্যা করে বাংলাদেশের হিন্দুদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে একটি বিশেষ মহল। এসব ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করলে হত্যাকারিরা উৎসাহিত হবে। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ হিন্দুশূন্য হয়ে পড়বে। বিপন্ন হবে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার ইতিহাস ও ঐতিহ্য। ভারসাম্য হারাবে মুক্তিযদ্ধের চিন্তা চেতনা।











(আরএনকে/এস/ডিসেম্বর২৪,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test