E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাঙ্গাইলে শহীদ মিনারে প্রতিদিন সবার জন্য ইফতার

২০১৭ জুন ২২ ২০:২৩:০৪
টাঙ্গাইলে শহীদ মিনারে প্রতিদিন সবার জন্য ইফতার

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ত্রিবেণী এবং বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯২ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা পবিত্র রমজান মাসে রোজাদারদের জন্য মাসব্যাপী বিনামূল্যে ইফতারি প্রদান করে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। রোজার প্রথম দিন থেকে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সংগঠন দুটির উদ্যোগে বিনামূল্যে সর্ব সাধারণের জন্য চলছে ইফতার আয়োজন। এছাড়া এখানে প্রতিদিনই ইফতারের আগে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় দোয়া করা হয়।

প্রতিদিন ইফতার শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে থেকে শহীদ মিনারে সমবেত হতে থাকেন রোজাদাররা। দিনমজুর, রিকশাওয়ালা, ভিখারি থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যারা সময়ের অভাবে অথবা অর্থাভাবে কিনে ইফতার করার সুযোগ পান না তারা বসে পড়েন এই আয়োজনে।

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ত্রিবেনী’র সভাপতি বাপ্পী ইসলাম বলেন, কাজের তাগিদে যারা বাড়ি যেতে পারেন না অথবা গরীব-দুস্থ মানুষ যারা অর্থের অভাবে ইফতার কিনে খেতে পারেন না তাদের কথা চিন্তা করে আমরা গত বছর রোজার সময় থেকে এই ইফতার আয়োজন শুরু করি। এ বছরও রোজার প্রথম দিন থেকেই ইফতার আয়োজন করে আসছি। প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৫০ থেকে ৩০০ লোক এই ইফতারে অংশগ্রহণ করে থাকেন। তিনি জানান, সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে নেওয়া চাঁদায় গড়া নিজস্ব তহবিল থেকে এই ইফতারের খরচ যোগান দেওয়া হয়। ইফতারিতে প্রতিদিনই থাকে সরবত, যেকোনও একটি ফল, ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, খেজুর ও জিলাপি। এছাড়া সপ্তাহে দুই দিন খিচুড়ি দেওয়া হয়।

ত্রিবেণী’র সদস্য শামীম আল মামুন ও বিভুতি ভট্টাচার্য বলেন, প্রতিদিনি আমরা প্রায় তিনশ জনের ইফতার আয়োজন করি। তারপরও মাঝে মধ্যে লোক বেশি হয়ে যায়। দেখা যায় সাইরেন দেওয়ার ঠিক আগ মুহুর্তে অনেক রিকশাওয়ালা একসঙ্গে এসে পড়ে। তারপরও আমরা ম্যানেজ করে নেই। তখন বড় বড় ডিশে ছোলা, মুড়ি, বড়া সব একত্র করে মাখিয়ে পরিবেশন করি। আমাদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে অনেকেই মাঝে মধ্যে এখানে এসে ইফতার পরিবেশনে সহায়তা করেন।

কাগমারী এলাকার ফরিদা শহরের নিরালা মোড় এলাকায় চায়ের দোকান করেন। তিনি প্রতিদিন এখানেই ইফতার করেন। তিনি বলেন, এখানে ইফতারের ব্যবস্থা থাকায় আমাদের কষ্ট করে বাইরে যেতে হয় না। টাকা দিয়ে খাওয়া লাগে না।

ঘাটাইল এলাকা থেকে টাঙ্গাইল শহরে এসে ভিক্ষা করেন জামিলা বেগম। তিনি বলেন, আমার মতন গরীব মাইনসের নিগ্যা (মানুষের জন্য) বাবারা যে ব্যবস্থা করছে তার নিগ্যা দোয়া করি। আল্লা তাগো ব্যাক্কের (সবার) ভালো করুক।

আলোকদিয়া এলাকায় তাঁতের কাজ করা শমসের পারিবারিক প্রয়োজনে শহরে এসেছিলেন। ইফতারের আগে এখানে ইফতারের ব্যবস্থা দেখে বসে পড়েছেন। তিনি বলেন, আমি শহরে এসেছিলাম কিছু সদাই কিনতে। ইফতারের সময় হয়ে গেছে, এখন বাড়িতে যেয়েও ইফতার পাবো না। তাই এখানেই বসে পড়লাম।

তারটিয়া এলাকার রিকলাচালক শামীম বলেন, ইফতারের সময় এই এলাকায় খ্যাপ নিয়া আসলে এখানেই ইফতার করি। এইরকম আয়োজনের ফলে আমাগোর মতন গরীব মাইনষের খুব উপকার হইছে।

(আরকেপি/এএস/জুন ২২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test