E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শরীয়তপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ !

২০১৫ জুন ২১ ১৫:৪৮:২১
শরীয়তপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ !

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বেঞ্চ সহকারী ঈমাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের আদায় করা ১ কোটি ৮০ হাজার ৪ শত ২০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ঈমাম উদ্দিন ও তার স্ত্রী ওই কার্যালয়ের অফিস সহকারী কমলা আক্তারের বিরুদ্ধে পালং থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভ্রাম্যমান আদালতের বেঞ্চ সহকারীর দায়িত্বে ছিলেন ওই কার্যালয়ের অফিস সহকারী ঈমাম উদ্দিন। তিনি ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি হতে চলতি বছর ২৬ মে পর্যন্ত এ পদে কর্মরত ছিলেন। এ সময়ের মধ্যে পরিচালিত ৮ শত ৫৪ টি ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৩ হাজার ৫শত ৯৫ টি মামলার দন্ড হিসেবে ১ কোটি ৫ লক্ষ ৩০ হাজার ৫ শত ৫০ টাকা আদায় হয়। যা চালানের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকে জমা দেয়ার দায়িত্বে ছিলেন ঈমাম উদ্দিন। কিন্তু তিনি সে টাকা জমা না দিয়ে সোনালী ব্যাংক শরীয়তপুর সদর শাখার নামে ৭৫৪টি ভূয়া ও জাল চালান তৈরী করে এক কোটি ৮০ হাজার টাকার ও বেশী আত্মসাৎ করেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করেছেন তার স্ত্রী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী কমলা আক্তার।

এ ঘটনায় ঈমাম উদ্দিন ও তার স্ত্রী কমলা আক্তারকে আসামী করে গত ১৮ জুন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার জিনিয়া জিন্নাত ও ১৯ জুন একই কার্যালয়ের অফিস সহকারী নাজমুল হাসান বাদী হয়ে সদর থানায় দুইটি মামলা (মামলা নং ২৬ ও ২৭) দায়ের করেন। টাকা আত্মসাতের বিষয়টি জানাজানি হলে ঈমাম উদ্দিন পালিয়ে যায়। পুলিশ ১৯ জুন কমলাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী নাজমুল হাসান বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতের বেঞ্চ সহকারীর দায়িত্বে ছিলেন ঈমাম উদ্দিন। মাঝে মাঝে উর্ধ্বতনদের নির্দেশে আমিও তাদের সাথে যেতাম। ঈমাম উদ্দিন ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানাকৃত অর্থ নিজে গ্রহন করে কখনো কখনো আমাদের দিয়ে ভাউচার লেখাতো এবং ব্যাংকে টাকা জমা দেয়ার দায়িত্বটি সে নিজে পালন করতো। এভাবে আমি প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকার ভাউচার লিখেছি। যে টাকার একটি পয়সাও ব্যাংকে জমা হয়নি। সে আমাদের ভূয়া ও জাল চালান সরবরাহ করে ৫ বছর পর্যন্ত এক কোটি টাকারও বেশী আত্মসাৎ করেছে। তাই তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছি।

শরীয়তপুর সদর থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহকারী ঈমাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর একটি দুর্নীতি দমন কমিশন ও অপরটি পালং থানা পুলিশ তদন্ত করবে। পুলিশ আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা করছে।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার জিনিয়া জিন্নাত বলেন, ইমাম উদ্দীনকে জাজিরায় বদলি করার পর নথি পরীক্ষা করতে গিয়ে জালিয়াতির বিষয়টি জানা যায়। সে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বেঞ্চ সহকারীর দায়িত্ব পালন করাকালীন সময়ে আদায়কৃত জরিমানার এক কোটি ৮০ হাজার ৪ শত ২০ টাকা আত্মসাৎ করেছে। তাই তার ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।


শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক রাম চন্দ্র দাস বলেন, সরকারি টাকা তসরুফ করে কেউ কখনো পার পায়নি। আমরা ঈমাম উদ্দিনকে আটক করে সরকারের টাকা ফেরত আনার ব্যবস্থা করবো। পাশাপাশি প্রচলিত আইন অনুযায়ী এই প্রতারক দম্পতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(কেএনআই/পিবি/জুন ২১,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test