E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মংলা বন্দরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে নিষিদ্ধ বোল্ডার লবণ আমদানি

২০১৬ অক্টোবর ১৮ ১৮:০২:৩০
মংলা বন্দরে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে নিষিদ্ধ বোল্ডার লবণ আমদানি

বাগেরহাট প্রতিনিধি : মংলা বন্দরে শুল্ক ফাঁকি দিতে মিথ্যা ঘোষণায় নিষিদ্ধ বোল্ডার লবণ আমদানির চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়ে পড়েছে। সরকারের অন্তত প্রায় দশ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দিতে প্রায় ৫ মাস আগে জাহাজ যোগে আসা এ বোল্ডার লবণ মংলা বন্দরে খালাস করা হয়।

আমদানি নিষিদ্ধ বোল্ডার লবণ আমদানি করেছে খুলনার ফুলতলার বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড এগ্রিকালচার লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠান। তবে আদানীকৃত এ পণ্য্যের এলসি খোলা হয়েছিল সাউথ ইস্ট ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা হতে।

এ তথ্য ফাঁস হয়ে পড়ায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। ঘোষণা বর্হিভূত পণ্য আমদানীর বিষয়টি নজরে আসায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

মংলা কাস্টমস হাউসের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ মে এম,ভি ম্যারিন স্টার নামক একটি জাহাজ মোট ২৪ হাজার ৮৩৬ মেট্টিক টন বার্ল্ক কার্গো (জাহাজে খোলা অবস্থায় থাকে) আসে। এই জাহাজে মোট তিনটি প্রতিষ্ঠানের আমদানিকৃত পণ্য ছিল। অন্য দুটি প্রতিষ্ঠান সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর ক্লিংকার ঘোষণা দিয়ে নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধ করে পণ্য খালাস করে।

কিন্তু বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড এগ্রিকালচার লিঃ তাদের আমদানিকৃত পণ্যটির জিপসাম ঘোষণা দিয়ে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। পরে পণ্যের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগেই অঙ্গিকারনামা (আন্ডার টেকেন) দিয়ে দ্রুত পণ্য খালাস করে প্রতিষ্ঠানটি। তার ক্লিয়ারিং এজেন্ট ছিল ট্রায়কম ফ্রেরড অ্যান্ড লজেস্টিক লিঃ। এ ব্যাপারে ট্রায়কম ফ্রেরড অ্যান্ড লজেস্টিক লিঃ এর নির্বাহী পরিচালক মোঃ শাহজাহান সিরাজ সাজু বলেন, কি পণ্য এসেছে, কি না, তা আমাদের দেখার বিষয় না। তিনি জানান, তারা শুধু পণ্যের কাস্টম ক্লিয়ারিং করেন দেন। তবে তিনি স্বীকার করেন বিল অব এন্ট্রিতে জিপসাম বা সার ঘোষণা করা হলেও পরীক্ষায় পণ্যটি সার নয় বলে নিশ্চিত করেছে।

মংলা কাস্টম হাউসের দায়িত্বশীল সূত্র আরো জানায়, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড এগ্রিকালচার লিঃ ঠিকানা খুলনার ফুলতলায় দেখানো হলেও এলসি করেছে সাউথ ইস্ট ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা হতে। পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে দেরি হলে বিদেশি জাহাজকে বৈদেশিক মুদ্রায় ডেমারেজ দিতে হবে এমন দাবি করে আমদানিকারক আন্ডার টেকেন দিয়ে পণ্য খালাস করে নেয় এবং সকল পণ্য খালাস করার পর জাহাজটি ১২ জুন মংলা বন্দর ত্যাগ করে।

পরবর্তীতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সারের গুণগতমান নির্ধারণ পরীক্ষাগার এর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম আশিক ইকবাল লিখিত যে রিপোর্ট দেন তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, নমুনা (ÒRAW GYPSUMÓ) সরকারি নির্দেশভুক্ত কোন সারের নাম নয়। নমুনাটির দলার (BOULDER) আকার, আকৃতি এবং ওজন অস্বাভাবিক। ভৌত অবস্থান ও আকৃতি আকাবাঁকা পাথরের টুকরার মত।

দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, জুন-২০১৬ মাসে বাংলাদেশে লবণ আমদানি নিষিদ্ধ ছিল। এই সময় বোল্ডার লবণের মারাত্মক সংকট চলছিল। বোল্ডার লবণ এনে র-জিমসাম বা সার ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যান্ড এগ্রিকালচার লিঃ প্রায় দশ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে। এ ব্যাপারে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মোঃ ফিরোজকে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে মংলা কাস্টম হাউসের কমিশনার ড. মোঃ আল আমিন প্রামানিক জানান, বিষয়টি তার নলেজে রয়েছে। এ ব্যাপারে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক দন্ডসহ শুল্ক পরিশোধের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।

(একে/এএস/অক্টোবর ১৮, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test