E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

লোহাগড়ায় পিতৃ হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার শিশু তানবীর

২০১৬ নভেম্বর ১২ ১৫:৫৭:১৯
লোহাগড়ায় পিতৃ হত্যার বিচারের দাবিতে সোচ্চার শিশু তানবীর

লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার উত্তর পাংখারচর গ্রামে হাফিজ মুন্সি হত্যাকান্ডের কোন রহস্য উদঘাটিত হয়নি। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি’র তদন্তাধীন রয়েছে। এদিকে  পিতৃ হত্যার বিচার দাবি শিশু পুত্র তানবীর সোচ্চার হয়ে পড়েছে। বিচারের দাবিতে সে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ২ জুলাই গভীর রাতে উপজেলার উত্তর পাংখারচর গ্রামের দুবাই প্রবাসী হাফিজ মুন্সি (৪২) কে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে নিজ শয়ন কক্ষে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নৃসংশ ভাবে খুন করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মুন্সি আবুল হোসেন বাদী হয়ে নিহতের স্ত্রী বিউটি বেগম (৩২) ও অজ্ঞাত ৮-১০ জনকে আসামী করে ৪ জুলাই লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ০৭, তারিখ ৪ জুলাই ২০১৬।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লোহাগড়া থানার এস আই নজরুল ইসলাম এজাহারে উল্লেখিত ১ নং আসামীকে পাংখারচর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে ২দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন । মহিলা আসামী হওয়ার সুবাদে পুলিশ রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে বিউটি বেগমের কাছ থেকে তেমন কোন তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি।

দীর্ঘ সময়ে মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন এবং অজ্ঞাত আসামীদের আটক করতে ব্যার্থ হওয়ায় চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলাটি ক্রিমিনাল ইনভেষ্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)তে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলাটি সিআইডি তদন্ত করছে। ঘটনার ৫-মাস অতিবাহিত হলেও তদন্তের কোন অগ্রগতি হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি নড়াইলের ইনস্পেক্টর কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, হাফিজ মুন্সী হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য নথি হস্তগত করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। গত ৭ নভেম্বর ধৃত আসামী উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন। জামিনে মুক্ত হয়ে এলাকায় এসে অজ্ঞাত আসামী ও ভাড়াটিয়া গুন্ডাদের সাথে নিয়ে বাদী ও তার আত্মীয় স্বজনকে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি এবং শিশু পুত্র তানবীরকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রকাশ্য হুমকি দেন।

বাদী নিহতের শিশুপুত্র তানবীরকে সাথে নিয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ৯ নভেম্বর লোহাগড়া থানায় হাজির হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। যার নং ৩৯৫, তারিখ ০৯ নভেম্বর ১৬। নিহতের বড় ভাই মুন্সী আবুল হোসেন বলেন, আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই । শিশু পুত্র তানবীরও পিতৃহত্যার বিচার চায় । কান্নাজড়িত কণ্ঠে ১০ বছর বয়সের শিশু তানবীর বলেন, আমার পিতাকে যারা খুন করেছে, তাদের ফাঁসি চাই।

পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত ও এলাকাবাসীর অভিযোগ মতে আরও জানা গেছে, নিহত হাফিজ মুন্সি দীর্ঘদিন প্রবাাসে থাকার কারনে তার স্ত্রী বিউটি বেগম পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে এই হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একই গ্রামের জনৈক ব্যক্তি এই প্রতিবেদককে বলেন, ওই বাড়িতে বেশির ভাগ সময় যাতায়াত করতো উত্তর লংকারচর গ্রামের ইয়ার আলী শেখ’র ছেলে নিহতের আপন ভাগ্নে মোরশেদ শেখ (২০)। বিউটির সাথে মোরশেদ এর দহরম মহরম ছিল । তাদের এই সম্পর্ক অনৈতিক পর্যায়ে পৌছায়। এর সূত্র ধরে বিউটি বেগম স্বামীকে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে কৌশলে খুন করেছে বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে।

(আরএম/এএস/নভেম্বর ১২, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test