E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফারুক হত্যা : এমপি রানার জামিন নামঞ্জুর  

২০১৮ সেপ্টেম্বর ২৭ ১৭:০৬:১২
ফারুক হত্যা : এমপি রানার জামিন নামঞ্জুর  

রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইল চাঞ্চল্যকর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলার বাদিপক্ষের চতুর্থ ও পঞ্চম স্বাক্ষী গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই হত্যা মামলার প্রধান আসামী টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সরকার দলীয় এমপি আমানুর রহমান খান রানার উপস্থিতিতে দুইজনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা অনুষ্ঠিত হয়।  পরে আদালত আগামী ১৮ অক্টোবর এই মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেন। 

এদিকে বৃহস্পতিবার এমপি আমানুর রহমান খান রানার আইনজীবীরা আদালতে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

টাঙ্গাইল আদালত পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাকসুদা খানমের আদালতে মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন আদালতে মামলার বাদিপক্ষের চতুর্থ স্বাক্ষী সরোয়ার হোসেন সরু ও পঞ্চম স্বাক্ষী স্থানীয় কাউন্সিলর শফিকুল হক শামীমের স্বাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আদালত আগামী ১৮ অক্টোবর এই মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

এদিকে, বৃহস্পতিবার এমপি আমানুর রহমান খান রানার আইনজীবীরা আদালতে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে এ মামলার প্রধান আসামী এমপি আমানুর রহমান খান রানাসহ টাঙ্গাইল কারাগারে থাকা আরো তিন আসামি মোহাম্মদ আলী, আনিছুর রহমান রাজা ও সমিরকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া জামিনে থাকা আসামি নাসির উদ্দিন নুরু, মাসুদুর রহমান মাসুদ ও ফরিদ আহম্মেদ আদালতে হাজিরা দেন।

দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর এমপি রানা গত ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এই আদালতেই আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বেশ কয়েক দফা উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতে আবেদন করেও জামিন পাননি তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে এবং ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এমপি রানা ও তার তিনভাইসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।

তদন্ত চলাকালে ২০১৪ সালের ১১ আগস্ট এমপি আমানুর রহমান খান রানার ঘনিষ্ট কর্মী আনিসুর রহমান রাজা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে তিন দফায় মোট ১৫ দিন রিমান্ড শেষে ওই বছরের ২৭ আগস্ট টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদত হোসেনের নিকট স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। অপর আসামী মোহাম্মদ আলী গ্রেপ্তার হন একই বছরের ২৪ আগস্ট।

তিনি দশদিনের রিমান্ড শেষে ৫ সেপ্টেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ নাজমুন নাহারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। উভয় আসামীর জবানবন্দিতে ফারুক আহমেদ হত্যাকাণ্ডে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তার ছোট ভাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করলে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে খান পরিবারের চার ভাইয়ের জড়িত থাকার কথা প্রথম প্রকাশ পায়।

এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে আমানুর রহমান খান রানার অপর ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি ও টাঙ্গাইল জেলা বণিক সমিতির সভাপতি জাহিদুর রহমান খান কাকন যুক্ত বলে মোহাম্মদ আলী তার জবানবন্দিতে প্রকাশ করেন।

(আরকেপি/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test