E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে সাজানো ধর্ষণ মামলা থেকে অব্যহতি পেলো সাব্বির

২০১৯ জানুয়ারি ১৬ ১৮:৫২:৫৭
পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে সাজানো ধর্ষণ মামলা থেকে অব্যহতি পেলো সাব্বির

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : গণধর্ষণের মামলা থেকে বাঁচতে মেয়েকে দিয়ে ধর্ষিতার ভাইয়ের বিরুদ্ধে সাজানো ধর্ষণের মামলা থেকে নিরাপরাধ কলেজ ছাত্র সাব্বিরকে অব্যহতি দিয়েছে পুলিশ। 

মঙ্গলবার সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার উপপপরিদর্শক শঙ্কর কুমার ঘোষ আদালতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, শ্যামনগর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের এক নারীকে ভুয়া বিয়ের মাধ্যমে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন ফুলতলা গ্রামের আবু বক্কর ছিদ্দিক। ওই নারী অন্তঃস্বত্বা হয়ে পড়ায় শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে তাকে সাতক্ষীরা আদালতে এফিডেফিডের নাম করে মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করে খুলনা শহরের গল্লামারি এলাকার আবু বক্কর ছিদ্দিকের ভুতের বাড়ি নিয়ে যায় আবু বক্কর ছিদ্দিক, তার ব্যবসায়িক পার্টনার একই এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষক গোলাম মোস্তফা ও সুকুমার মণ্ডল।

গর্ভপাত ঘটাতে রাজী না হওয়ায় পরে তাকে ওই বাড়িতে পাঁচদিন আটকে রেখে তিনজন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে তাকে খুলনা সোনাডাঙা এলাকার রাইসা ক্লিনিকে গর্ভপাত ঘটনোর পর কয়েকদিন অন্যত্র রেখে বাড়ির পাশে ফেলে রেখে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ওই নারী বাদি হয়ে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

ওই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদি ও তার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া হয়। প্রভাবশালী আসামীরা দু’ দাপুটে জনপ্রতিনিধির সহায়তায় বাদির ভাই সাব্বিরকে একটি পাচার ও অপহরণ মামলায় আসামী করে। ওই নারীর উপর হামলা চালিয়ে তার পা ভেঙে দেওয়া ছাড়াও সম্প্রতি তার বাড়িঘর ভাঙচুর শেষে লুটপাট করা হয়। গত ১০ জানুয়ারি গণধর্ষণ সম্পর্কিত মামলাটির রায়ের জন্য দিন ধার্য থাকলেও বিচারকের অনুপস্থিতির কারণে দিন পরিবর্তণ করা হয়েছে।

এদিকে কোনভাবে মামলা তুলে নিতে না পেরে গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর রাতে প্রতিবেশী আব্দুস সাত্তারের ছেলে প্রেমিক একই মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্র বিপ্লব হোসেন মিলনের সঙ্গে পালিয়ে যেয়ে জনৈক মোস্তফার ইটভাটায় অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সময় জনতার হাতে আটক হওয়া সপ্তম শ্রেণীর মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে দিয়ে তার বাবা আবু বক্কর ছিদ্দিক ও চাচা শহীদ হোসেন গণধর্ষিতার ভাই সাব্বির হোসেনকে ধর্ষক বানিয়ে থানায় মামলা দায়ের করানো হয়। আবু বক্কর ছিদ্দিকের স্ত্রী মরিয়ম খাতুনকে মামলার বাদি করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করার পর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক শঙ্কর কুমার ঘোষ ও আবু বক্কর ছিদ্দিকসহ তার পরিবারের সদস্যদের নিজ অফিসে ডাকান সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান।

সাব্বিরকে অহেতুক এ ধরণের ধর্ষণের পরিকল্পিত ঘটনায় জড়ানোর বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় পুলিশ সুপারর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও তদন্তকারি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার সাব্বিরের নাম বাদ দিয়ে বিপ্লব হোসেন মিলনকে আসামী করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আশরাকুল বারি তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

(আরকে/এসপি/জানুয়ারি ১৬, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test